পাল্স অক্সিমিটার। ছবি: সংগৃহীত
যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে পাল্স অক্সিমিটার এখন সকলের নিত্য সঙ্গী। কী ভাবে কাজ করে এই ছোট্ট যন্ত্রটি?
থার্মোমিটার যেমন আপনার শরীরের তাপমাত্রা দেখায়, ঠিক তেমনই এই যন্ত্রটি আপনার শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা মাপে। পাল্স অক্সিমিটারে আপনার আঙুল রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যে দু’টো সংখ্যা দেখা যাবে। একটা এসপিওটু— মানে আপনার শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা। দ্বিতীয়টা আপনার পাল্স রেট।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ে আমরা সকলেই এখন চিন্তিত। কী ভাবে বুঝবেন যে আপনার যন্ত্রটি কাজ করছে? একজন মানুষের শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় অক্সিজেনের মাত্রা থাকে ৯৫ থেকে ১০০র মধ্যে। যদি দেখেন পাল্স অক্সিমিটারের ফল অনুযায়ী, আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা তারও নীচে, তা হলে কী করবেন? আপনার অবস্থা কি সত্যিই আশঙ্কাজনক? নাকি রিডিংটা ভুল? জেনে নিন।
১। প্রথমেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বেন না। কিছুক্ষণ একটু স্থির হয়ে থাকুন। ৩০ সেকেন্ড পর ফের পাল্স অক্সিমিটার ব্যবহার করুন।
২। যদি দেখেন দ্বিতীয়বারও আপনার অক্সিজেন সম্পৃক্ততা কম আসছে, তাহলে যন্ত্রটি আঙুল থেকে খুলে অন্য একজনের উপর ব্যবহার করুন।
৩। যদি তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক দেখায়, তা হলে বুঝতে হবে, যন্ত্রটি ঠিক আছে। আপনার শরীরেই সমস্যা।
৪। তৃতীয় জিনিস যেটা মাথায় রাখতে হবে, সেটা হল যে আঙুলে আপনি যন্ত্রটি ব্যবহার করছেন, তাতে কোনও নেল পলিশ, মেহেন্দি বা ট্যাটু নেই। অনেক সময় এগুলির কারণেও ভুল সংখ্যা দেখায়।
৫। যদি এমন হয় যে, জ্বরের কারণে আপনার কাঁপুনি হচ্ছে, আর আপনি হাত স্থির রাখতে পারছেন না, তা হলেও অনেক সময় যন্ত্র কাজ করে না ঠিক করে। চলা-ফেরা করতে করতে রিডিং নেবেন না।
৬। যদি দেখেন আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম, তা হলে একবার হেঁটে নিন। তারপর দেখুন শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমছে না বাড়ছে। যদি দেখেন কমছে, তা হলে বুঝতে হবে, যন্ত্র অকেজো।
৭। বাড়ির লোকেরা যখন ঘুমোচ্ছেন, তখন তাঁদের রিডিং নেবেন না। যাঁদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, বা তাঁদের স্বাভাবিক ভাবেই ঘুমনোর সময় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
৮। মনে রাখতে হবে অনেক ধরনের রোগের ক্ষেত্রেই শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকতে পারে। যেমন হাঁপানির রোগী, কিংবা যাঁরা টানা ধুমপান করেন।
৯। অক্সিজেন সম্পৃক্ততা ৯৪র নীচে নেমে গেলে চিন্তার বিষয়। এর মানে হয়ত আপনার নিউমোনিয়া হয়েছে এবং সংক্রমণ ফুসফুসে পৌঁছে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পেটের উপর ভর দিয়ে শুতে পারেন। পাল্স অক্সিমিটার ফের মেপে দেখুন। হয়ত অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তেও পারে।
১০। না হলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং পরামর্শ নিন। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া খুব কঠিন নয়।
মনে রাখবেন, পাল্স অক্সিমিটার নিয়ম মেনে ব্যবহার করায় বহু মানুষের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই ধরা গিয়েছে। ওষুধের সাহায্যে তাঁরা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তাই যন্ত্রটির সদ্ব্যবহার করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy