প্রাণিজগতের কাছেও শেখার আছে মানুষের। গ্রাফিক্স : শৌভিক দেবনাথ।
জীবজগতে মানুষকেই সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান প্রাণী হিসাবে গণ্য হয়। সেই আদিম যুগ থেকে ধীরে ধীরে মানব সভ্যতা এগিয়ে চলেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বুদ্ধিমত্তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শুধু কি মানুষই বুদ্ধিমান? প্রাণিকুলের দিকে চোখ রাখলে অবশ্য সে ধারণা ভেঙে যেতেই পারে। ছোট্ট পাখি থেকে রয়্যাল বেঙ্গল, তাদের জীবনযাত্রায় নজর দিলেই দেখা যাবে কী সুন্দর ভাবে সংসার করে চলেছে তারা। আর যদি তাকানো যায় হাতির দিকে, তাদের বুদ্ধিমত্তার তো তুলনাই হয় না। অস্মভব স্মৃতিশক্তির অধিকারী তারা। কোনও মানুষ তার ক্ষতি করতে চায় মনে করলে ,বহু বছর বাদেও তাকে মনে রাখতে পারে। এই জীবজগত থেকে কি মানুষের শেখার কিছুই নেই? একটু নজর দিলেই দেখা যাবে, বহু প্রাণীরই সন্তানকে বড় করার ধরন, শিকারের জন্য শরীরী কসরত, পরিবারকে আগলে রাখার প্রবণতা-সহ অনেক কিছুই শিক্ষনীয়।
১. বাঘ থেকে সিংহ-সহ অনেক প্রাণীকেই শিকার ধরে খেতে হয়। শিকার ধরার জন্য প্রচণ্ড শারীরিক সক্ষমতা, ক্ষিপ্রতা ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার প্রয়োজন হয়। শিকার ধরতে গিয়েই প্রাণীদের শরীরচর্চা হয়ে যায়। মানুষেরও কিন্তু শারীরিক সক্ষমতা ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক কসরতের প্রয়োজন।
২. বাঘ হোক বা সিংহ, প্রাণিকুলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে শিকার করলেও ততটুকুই তারা খায় যতটুকু খেলেতাদের পেট ভরে। পেট ভরে গেলে সেই শিকার তারা ছুঁয়েও দেখে না, বা অকারণে অন্য কোনও প্রাণীকে হত্যা করে না। এখান থেকেও মানুষের শেখার। যতটা খিদে, ততটাই খেতে হবে। অনেকেই খিদে না পেলেও লোভনীয় খাবার দেখেই খেয়ে ফেলেন। আবার খেতে বসে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খান। যার ফল বদহজম, ওজন বেড়ে যাওয়া।
৩. প্রাণিজগতে বিনোদনের বালাই নেই। কাজের বাইরে বাকি সময় তারা বিশ্রাম নেয়। কিন্তু মনুষ্যজগতে বিনোদন বড় গুরুত্বপূর্ণ। কাজ শেষ হওয়ার আগেই তাদের হাতে উঠে আসে মোবাইল। খুশি থাকতে চলে আড্ডা, পান-ভোজন। আর এসবের ফাঁকে কোথাও গিয়ে ফাঁক থেকে যায় বিশ্রামে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হয়। শরীর সুস্থ রাখতে কিন্তু প্রাণিকুলের বিশ্রামের অভ্যাসটি অনুসরণ করা উচিত।
৪. হাতিকুলের মধ্যে মধ্যে বন্ধন দেখা যায়। তারা দলবদ্ধ ভাবে থাকে। রাস্তা পার করা হোক, বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া। জঙ্গলপথে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া হাতির পালের ‘গোদা’ যে, সেই কিন্তু নেতৃত্ব দেয় এসবে। শাবকদের সুরক্ষিত রাখতে তারা কী আচরণ করে, তা দেখে অনেক কিছু শেখা যায়। হাতির থেকে মানুষেরও শিক্ষনীয়, কীভাবে পরিবারকে বেঁধে ও আগলে রাখতে হয়।
৫. গন্ডার থেকে সিংহ, বাঘ, পক্ষীকুলের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে সন্তান ছোট থাকাকালীন তারা কী ভাবে আগলাচ্ছে। আবার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেউ শেখাচ্ছে কী ভাবে শিকার ধরতে হয়, কেউ আবার কোন খাবার খাবে, তা খুদেকে বুঝিয়ে দিচ্ছে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খুদেকে ছাড়ও দিচ্ছে তারা। স্বাধীনতাও দিচ্ছে। বড় হলে তাদের নিজের মতো করে ছেড়ে দিচ্ছে। মানুষেরও কিন্তু এটা শেখার। সন্তানকে কতটা আগলাতে হবে, কতটা কোন বয়সে ছাড় দিতে হবে ইত্যাদি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy