Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Luxury Goods

Leena Nair: ‘কুলীন’ ফ্যাশন ব্র্যান্ড দরজা খুলে দিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলার জন্য, শীর্ষপদে লীনা

ব্রিটিশ নাগরিক হলেও জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কোলহাপুরে। ফরাসি লাক্সারি ব্র্যান্ড ‘শ্যানেল’-এর নতুন সিইও-কে চিনে নিন।

‘শ্যানেল’এর নতুন সিইও লীনা নায়ার।

‘শ্যানেল’এর নতুন সিইও লীনা নায়ার। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:১১
Share: Save:

ভারতীয় ব‌ংশোদ্ভূত ক’জন মহিলা কোনও বিশ্ব সংস্থার শীর্ষে জায়গা করে নিতে পেরেছেন? এর আগে ছিলেন এক জনই ছিলেন ‘পেপসিকো’-র সিইও ইন্দ্রা নুয়ি। এ বার সেই মর্যাদা আদায় করে নিতে পারলেন ৫২ বছরের লীনা নায়ার। ‘ইউনিলিভার’-এর মানবসম্পদ বিভাগের মাথা ছিলেন গত ৩০ বছর ধরে। ১৪ ডিসেম্বর লীনা জানালেন, তিনি সেই পদ ছেড়ে নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। ফরাসি লাক্সারি ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘শ্যানেল’-এর বিশ্বস্তরে সিইও হয়ে নতুন যাত্রা শুরু করবেন এ বার।

লীনা প্রথম মহিলা যিনি, ‘ইউনিলিভার’-এর মানবসম্পদ বিভাগের মাথা হয়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সবচেয়ে কমবয়সিও বটে। তবে বিশ্বস্তরে কোনও সংস্থার মহিলা সিইও হিসাবেও নতুন রেকর্ড গড়লেন তিনি। ইন্দ্রা নুয়ি এর আগে ‘পেপসিকো’-র সিইও ছিলেন বটে। কিন্তু এই প্রথম কোনও ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সিইও হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কোনও মহিলা! তা-ও আবার যে সে ব্র্যান্ড নয়, ‘শ্যানেল’-এর মতো বিখ্যাত ফরাসি ব্র্যান্ড। ফ্যাশন দুনিয়ায় ফ্রান্সকে চিরকালই শীর্ষে মঞ্চে রাখা হয়। তার উপর ‘শ্যানেল’-এর মতো ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ‘কৌলিন্য’ নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে না।

কোকো শ্যানেলের বায়োপিক ‘কোকো বিফোর শ্যানেল’ ছবিতে অড্রি টুটু।

কোকো শ্যানেলের বায়োপিক ‘কোকো বিফোর শ্যানেল’ ছবিতে অড্রি টুটু।

১৯১০ সালে কোকো শ্যানেল তৈরি করেন এই ব্র্যান্ড। পিয়ার ওয়ার্দাইমার সেই সময়ে যৌথ ভাবে ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এখনও এই সংস্থার মালিক পিয়ারের দুই নাতি অ্যালেন এবং গেরার্ডেরই দায়িত্বে। হাজার ওঠা-পড়া সত্ত্বেও পরিবারের বাইরে কখনওই হাতছাড়া করেননি এই সংস্থাকে। তবে এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এই সংস্থার সিইও ছিলেন আর এক মহিলাই— মওরিন শিকে। ‘শ্যানেল’-এর এক নম্বর লাক্সারি ফ্যাশন ব্র্যান্ড হিসাবে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দেওয়ার পিছনে তাঁর অবদানই সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু ২০১৬ সালে অ্যালেন ওয়ার্দাইমারের সঙ্গে তাঁর বেশ কিছু বিষয়ে মতের অমিল হওয়ায় ইস্তফা দেন তিনি। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল, এই সংস্থার সৃষ্টিকর্তা কোকো শ্যানেলের সঙ্গেও বহু বছর পিয়ার ওয়ার্দাইমারের নানা রকম মতের অমিল শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকেই। বহু বছর সে ভাবেই সংস্থার মুখ্য পোশাকশিল্পী হয়ে কাজ করে গিয়েছিলেন তিনি। তাই মহিলাদের সাজপোশাকের জন্য মূলত এই সংস্থা তৈরি হলেও, মহিলা কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের ইতিহাস খুব একটা সুখকর নয়।

‘শ্যানেল’এর বিখ্যাত সুগন্ধি ‘নাম্বার ফাইভ’এর ভক্ত ছিলেন মেরিলিন মনরু।

‘শ্যানেল’এর বিখ্যাত সুগন্ধি ‘নাম্বার ফাইভ’এর ভক্ত ছিলেন মেরিলিন মনরু। ছবি: সংগৃহীত

সেই জায়গা থেকে বলা যেতেই পারে, সিইও পদে লীনা নায়ারের নাম ঘোষণায় চমকে গিয়েছেন অনেকেই। তবে লীনার নিজস্ব কৃতিত্বও কম নয়। ব্রিটিশ নাগরিক হলেও তাঁর জন্ম মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে। জামশেদপুরের এক্সএলআরআই থেকে পাশ করা ছাত্রী ‘হিন্দুস্তান ইউনিলিভার’-এ শিক্ষানবিশ হয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। পরিচালনা মণ্ডলির মধ্যে যে হাতেগোনা মহিলাকর্মী কারখানায় কাজ করতে ইচ্ছুক ছিলেন, তাঁর মধ্যে ছিলেন লীনাও। কলকাতা, তামিলনা়ড়ুর অম্বাত্তুর এবং মহারাষ্ট্রের তলোজার বিভিন্ন কারখানায় কাজ করেছেন তিনি। এখন অবশ্য লন্ডনেই তাঁর বাস। ‘শ্যানেল-এর প্রধান দফরও সেই শহরেই। আগামী মাস থেকেই নতুন পদে কাজ শুরু করবেন লীনা।

মানবসম্পদ-নির্ভরশীল নেতৃত্বের জন্য লীনা বহু প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ইন্দ্রা নুয়িকে নিজের ‘মেন্টর’ হিসাবে দেখেন। ‘নাম্বার ফাইভ’ সুগন্ধি, ব্যাগ এবং টুইড জ্যাকেটের জন্য বিখ্যাত ‘শ্যানেল’। এর আগে যত বার সংস্থার ব্যবসা টলোমলো হয়েছে, তত বার অড্রি টুটু থেকে মেরিলিন মনরুর মতো খ্যাতনামীদের সাহায্যে ফের সাফল্যের মই বেয়ে শীর্ষে উঠেছিল ‘শ্যানেল’। এই সবই ছিলে অ্যালেন ওয়ার্দাইমারের বুদ্ধি। মওরিন শিকে চলে যাওয়ার পর থেকে অ্যালেনই ছিলেন সংস্থার সিইও। সেই আসনে লীনা বসে নতুন কী ব্যবসাবুদ্ধি দেন, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন গোটা ফ্যাশন দুনিয়া।

অন্য বিষয়গুলি:

Luxury Goods Global CEO Marilyn Monroe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE