এআই ব্যবহার করে ভোল বদলেছে অভিনেত্রী নয়নতারারও। ছবি: এআই।
ফেসবুক খুললেই এখন নিজেদের পরিচিত চেহারাগুলিকেই যেন অচেনা লাগছে। আপনার সহকর্মী কিংবা পাশের পাড়ার কাকিমা, সবাই ভোল বদলে এখন বিদেশিনি বেশ ধারণ করেছেন। সৌজন্য ফেসবুক গেম ‘মাই পাজ়ল’। ফেসবুকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের খেলা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেই স্রোতে গা ভাসান আঠারো থেকে আশি। ইদানীং ‘মাই পাজ়ল’ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। খেলাটির মাধ্যমে এক ক্লিকেই আপনার চেহারা বদলে যেতে পারে। এআই প্রযুক্তি কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে অন্য লোকের চেহারায় আপনার মুখ বসে যাচ্ছে সহজেই। আর সেই ছবি নিজেদের ফেসবুক পোস্টে শেয়ারও করছেন সকলে। তবে এই খেলাগুলি কি আদৌ নিরাপদ? এর মাধ্যমে কি আপনার ব্যক্তিগত কোনও তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে?
দিন দিন এআই-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এর যেমন সুফল রয়েছে, তেমনই খারাপ দিক উঠে আসছে বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে। অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দনার ‘ডিপ ফেক’ ভিডিয়োটিকে এআই-এর অপব্যবহারের সাম্প্রতিক উদাহরণ বলা যেতেই পারে। সমাজমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের বেশ কিছু গাফিলতি থেকে যায়, আর সে কারণেই কিন্তু আমাদের ছবি, গোপন তথ্য হ্যাকারদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে সহজে। এথিকাল হ্যাকার সন্দীপ সেনগুপ্তের মতে, ফেসবুকে যে বিভিন্ন ধরনের খেলায় আমরা অংশগ্রহণ করছি, তার মাধ্যমে কিন্তু আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। আনন্দবাজার অনলাইনকে সন্দীপ বলেন, ‘‘ফেসবুকে যে সব খেলা খেলছেন মানুষজন, সে গেমগুলি কিন্তু ফেসবুক তৈরি করেনি। সেই গেম আদৌ কারা তৈরি করেছে, সে বিষয় কোনও তথ্যই ফেসবুক আামাদের দেয় না। খেলাটি খেলার জন্য সেই লিঙ্কটি বিভিন্ন রকমের তথ্য চায় আমাদের কাছ থেকে, আমরাও মজা ভেবে সেই তথ্যগুলি ভাগ করে নিই আর তাতেই হয় বিপত্তি। অনেক ক্ষেত্রেই এ সব খেলা খেলার সময়ে কিছু অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়, আর সে সময়ে আমরা কিছু ভাবনাচিন্তা না করেই অ্যাপগুলি ডাউনলোড করি এবং আমাদের লাইভ লোকেশন, ফোন নম্বর ভাগ করে নিই। এ ভাবেই কিন্তু হ্যাকাররা আপনার ফোনের যাবতীয় তথ্য হ্যাক করে নিতেই পারেন। ‘মাই পাজ়ল’-এর মতো খেলায় আপনার ছবি নিয়ে কেরামতি করা হচ্ছে। এখন অনেকের ফোনের পাসওয়ার্ড কিন্তু তাঁদের মুখের আদলই। সুতরাং আপনার ছবি অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার অর্থ আপনি আপনার পাসওয়ার্ড অন্যের সঙ্গে ভাগ করছেন, তাই সতর্ক থাকুন।’’ এই ধরনের খেলায় অংশগ্রহণ না করারই পরমর্শ দিচ্ছেন সন্দীপ।
ফেসবুক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিজেকে কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন?
১) ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রথমে সেটিংসে গিয়ে ‘টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ অপশনটি অন করতে হবে। এর মাধ্যমে কোনও হ্যাকার আপনার ফেসবুক হ্যাক করে নিলেও চালু করতে পারবে না, কারণ ফেসবুক ওর কাছে ওটিপি চাইবে, যা কেবল আপনার ফোনেই আসবে।
২) আপনি ফেসবুকে যে ছবি কিংবা পোস্ট শেয়ার করছেন, তা নিরাপদ রাখতে সব সময়েই প্রাইভেট এবং ওনলি ফ্রেন্ডস মোড চালু রাখুন।
৩) ফেসবুকে যাদের অনুরাগী বেশি, এখন তাঁদের কাছে এক প্রকার মেসেজ আসছে। সেই মেসেজে বলা হচ্ছে, তাঁরা নাকি ফেসবুকের পলিসি ভায়োলেশন করেছেন, এবং একটি লিঙ্কে গিয়ে লগ ইন না করলে ওঁর অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যাবে। এই ফাঁদে পা দিতেই লোকেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। তাই ফেসবুক থেকে সরাসরি কোনও মেল না এলে এই ধরনের মেজেসকে গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy