বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা রাতে সিরিজ় দেখা— মুখ চালানোর জন্যে আর কিছু না থাকলেও চিপ্স থাকবেই। চিপ্সের ব্যাপারে আট থেকে আশি, সকলেরই এক রকম নোলা। আবার আইসক্রিমের ক্ষেত্রেও বিষয়টা তাই। অন্য কাউকে আইসক্রিম খেতে দেখলে লোভ সামলাতে পারেন না অনেকেই। মেদ বাড়বে জেনেও হাত বাড়িয়ে একমুঠো চিপ্স কিংবা রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে ফ্রিজে রাখা আইসক্রিম সাবাড় করে দেন। তবে দোষ কিন্তু আপনার নয়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, চিপস্ কিংবা আইসক্রিমের মতো ‘আলট্রা-প্রসেসড ফুড’ বা ইউপিএফ মাদকের নেশার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়।
আরও পড়ুন:
মানবদেহে কোকেন বা হেরোইনের মতো মাদকের যে প্রভাব, সেই একই প্রভাব পড়তে পারে চিপ্স কিংবা আইসক্রিম খেলে। এই বিষয়ে ৩৬টি দেশে ২৮১টিরও বেশি গবেষণা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের নেশায় বুঁদ হয়ে আছেন প্রায় ১৪ শতাংশেরও বেশি মানুষ। শুধু চিপ্স বা আইসক্রিম নয়, এই তালিকায় রয়েছে সসেজ়, কেক, বিস্কুট, নরম পানীয় এবং কৃত্রিম চিনি দেওয়া খাবারও। যা ক্যানসার, অবসাদের মতো রোগের ক্ষেত্রে অনুঘটকের মতো কাজ করে।
আরও পড়ুন:
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ‘ইয়েল ফুড অ্যাডিকশন স্কেল’-এর জনক এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং গবেষক অ্যাশলে গিয়ারহার্ট। তাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য বিএমজে’ জার্নালে। অ্যাশলে জানিয়েছেন, এই ধরনের ‘ইউপিএফ’ জাতীয় খাবার দেখলে নিজেকে আটকে রাখতে না পারা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার ফল কখনওই ভাল হয় না। এই জাতীয় খাবার শরীরে গিয়ে ডোপামিন নামক একটি হরমোনকে উদ্দীপিত করে। যা এই ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতা আরও বাড়িয়ে তোলে। একেবারে মদ কিংবা ড্রাগের নেশার মতোই। তবে সকলের ক্ষেত্রে ‘আলট্রা-প্রসেসড ফুড’ একই ভাবে কাজ করে না। তবে, এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের কয়েকটি চিপ্স খাওয়ার পর আর খেতে ইচ্ছে করে না, সামনে সকলে আইসক্রিম খেলেও কেউ কেউ সে দিকে ফিরে তাকান না।