হাত শুধু ধোওয়াই নয়, তা শুকনো করার সময়ও মানতে হবে নিয়ম।
কব্জি ডুবিয়ে মাংস যেমন খেতে হবে, তেমনই কব্জি ডুবিয়ে ধুতে হবে হাতও। করোনা রুখতে কব্জি পর্যন্ত হাত ধোওয়ার বিষয়টিতেই জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যেই করোনা-আতঙ্ক কাটাতে হাত ধোওয়ার বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
ভায়ারোলজিস্ট সুকুমার দে-র মতে, ‘‘হাতের তালুতে ই-কোলাই জাতীয় জীবাণু প্রায়ই লেগে থাকে। এদের খালি চোখে দেখা যায় না। এরা অনেক সময়েই ডায়ারিয়া ডেকে আনে। এ ছা়ড়া এই ধরনের ই-কোলাইয়ের জীবাণু রক্তবাহে নানা রকমের সংক্রমণ ঘটায়। বলতে পারেন, সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ এদের হাত ধরেই হয়। ভাল করে হাত না ধুলে এগুলোও খাবারের সঙ্গে পেটে ঢোকে। এদের মধ্যে অনেকেই শরীরে ঢুকে চুপটি করে বসে থাকে। শরীরে প্রবেশ করার সপ্তাহ দুয়েক পরেও হঠাৎ সুপ্ত অবস্থা থেকে জেগে উঠতে পারে। যে সব জীবাণুকে শরীরের অ্যান্টিবডি মেরে ফেলতে পারে তারা তো ধ্বংস হল, কিন্তু যারা হল না রোগ ডেকে আনে তারাই।’’
তাই যেমন-তেমন করে নয়, অসুখ থেকে দূরে থাকতে মেনে চলতে হবে হাত ধোওয়ার বেশ কিছু নিয়মও। কী ভাবে হাত ধুলে এই ধরনের আণুবীক্ষণিক জীবাণু থেকে দূরে থাকা সম্ভব? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানালেন তেমনই কিছু উপায়।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্ক থেকে বাঁচতে এই হ্যান্ডওয়াশ বানিয়ে ফেলুন বাড়িতেই! হাত-পা ধুতে এর জুড়ি নেই
• বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে হাতের কব্জি ভাল করে ধুতে হবে। কল চালিয়ে ১০-১৫ সেকেন্ড কলের তলায় হাত পেতে রাখুন। অনেক আগের তোলা জলে হাত ধুলে অনেক সময়েই জলের ভিতরেও কোনও কোনও ব্যাক্টিরিয়া জন্মাতে পারে। তাই চেষ্টা করুন কলের জলেই হাত ধুতে। এতে জীবাণুরা অনেক ক্ষেত্রেই জলের তোড়ে সরে যায়। তাই হাত পেতে রাখলেই কিছুটা জীবাণু আপনি সরাতে পারবেন হাত থেকে।
• হাত ধোওয়ার জন্য বেছে নিন কম ক্ষারযুক্ত সাবান। সাবান ছাড়াও ভরসা করতে পারেন ইথাইল অ্যালকোহল দিয়ে বানানো হ্যান্ড ওয়াশের উপর। হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান বাছার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকুন। যাঁদের হাতে কোনও রকমের সংক্রমণ আগে থেকেই ছিল বা যাঁরা ত্বকের কোনও অসুখে ভুগছেন, তাঁরা কিন্তু নিজে থেকে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ বাছবেন না। সে ক্ষেত্রে ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
আরও পড়ুন: ওড়না ধরে টান? কী করতে হবে এখন আমি জানি
• সাবান ঘষার বিষয়েও মেনে চলুন কিছু নিয়ম। ২০ সেকেন্ড ধরে ভাল করে সাবান বা হ্য়ান্ডওয়াশ ঘষুন হাতের উপর। কব্জি অবধি তো বটেই, হাতের দু’দিকই খুব ভাল করে ঘষে ঘষে ধুতে হবে। হাতের উপরের ভাগেও নানা আণুবীক্ষণিক জীবাণু থাকে। তাই সে দিকটা অবহেলা করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
• শুধু হাতের তালুই নয়, ধোওয়ার সময় খেয়াল রাখুন হাতের উপরিভাগ, নখের কোণ, আঙুলের প্রতিটা ফাঁকও যেন ভাল করে পরিষ্কার হয়। সাবান বা হ্যান্ডওয়াশের সাহায্যে কব্জি অবধি ভাল করে ঘষে কলের জলে ধুয়ে ফেলুন।
• হাত ভাল করে ধোওয়ার পর সম্ভব হলে হাওয়ায় হাত রেখে শুকিয়ে নিন। তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করলেও ক্ষতি নেই, যদি তা পরিষ্কার হয়। প্রতি তিন দিন অন্তর গরম জলে ফুটিয়ে নিন তোয়ালে বা গামছা। বাড়িতে কেউ কোনও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হলে তার ব্যবহার্য তোয়ালে বা গামছা আলাদা করুন।
বক্ষ ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সুমিত সেনগুপ্তের মতে, ‘‘করোনা-হানা ঠেকাতে হাত ঠিক মতো পরিষ্কার করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বেশির ভাগ সংক্রামক অসুখ কিন্তু হাত থেকে ছড়ায়। তাই হাত ধোওয়ার সময় সাবান বা ইথাইল অ্যালকোহল মেশানো হ্যান্ডওয়াশের বিষয়টি মাথায় রেখে, নিয়ম মেনে হাত ধুয়ে নিন। এতেই অনেকটা নিপারদে থাকবেন।’’
অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy