মডেল: নয়নিকা সরকার, শ্রীময়ী ঘোষ, ছবি: আশিস সাহা, অমিত দাস (ত্বরিতা)
সেপ্টেম্বর মাস, পুজোর বাজার মাঝপথে। এ দিকে দিঠির মুখে মেঘ জমেছে। কোনও পোশাকই পরার পরে আর ভাল লাগছে না। স্টাইলিশ শর্ট স্লিভে হাত দুটো বেশ চওড়া লাগছে। এই হাত ঢাকবে কী করে সে? উপায় আছে। সেটাই তো এ বারের বিষয়।
পোশাকের কাট
হাতের মেদ তো দু’দিনে কমিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। তাই গোড়াতেই ঠিক করে নিন কী কী ভাবে ক্যামোফ্লেজ করে মেদ ঢাকা যায়। পোশাকের কাট, রং ও অ্যাকসেসরিজ়ে ইলিউশন তৈরি করতে হবে। এতেই অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে। পোশাক বাছার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখবেন।
স্লিভস: যেহেতু হাতের ব্যাপার, সুতরাং পোশাকে স্লিভের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফুল স্লিভ পোশাক পরলে কিন্তু হাত লম্বা দেখাবে। ফলে মোটা ভাব কেটে যাবে। থ্রি-কোয়ার্টার স্লিভও বেছে নিতে পারেন। আর স্লিভলেস। নিশ্চয়ই ভাবছেন, চওড়া হাতে স্লিভলেস? এ কেমন কথা! এটাই হক কথা। স্লিভলেস পরলে হাত লম্বা দেখায়। ফলে চওড়া লাগে না। কিন্তু শর্ট স্লিভ পরলে হিতে বিপরীত। চওড়া হাত হলে শর্ট স্লিভের গল্প ভুলে যেতে হবে। একান্তই শর্ট
স্লিভ পরতে হলে একটু লুজ় বাছবেন। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল বাটারফ্লাই স্লিভস।
নেকলাইন: পোশাকের নেকলাইনের উপরেও নির্ভর করে হাত সরু দেখাবে না চওড়া। হাতের উপরিভাগ খুব চওড়া হলে অফশোল্ডার, হাইনেক, বোটনেক পোশাক বাছবেন না। এতে উপরের অংশ আরও চওড়া দেখায়। সরু স্ট্র্যাপ স্কার্ফের সঙ্গে লেয়ার করে পরতে পারেন।
রং: স্লিভ একরঙা হলেই ভাল। তবে হলুদ, বেবি পিঙ্ক, সাদা ইত্যাদি হালকা রং এড়িয়ে কালো, নেভি ব্লু, এমারেল্ড গ্রিন, মেরুন ইত্যাদি গাঢ় রং বেছে নিতে পারেন। গাঢ় রঙে অতিরিক্ত মেদের অনেকটাই চাপা পড়ে যাবে। প্রিন্ট পরতে চাইলে ছোট ব্লক, ফ্লোরাল বা জিয়োমেট্রিক প্রিন্ট পরতে পারেন। খেয়াল রাখবেন হাতের কাপড়ে যেন খুব বড় প্রিন্ট না থাকে। তবে মোনোক্রোম কালারেই বেশি স্লিম দেখায়।
ফ্যাব্রিক: লিনেন, রেশম না কি সুতি... কাপড়ের ফ্যাব্রিকও যত্ন নিয়ে বাছতে হবে। সুতি বা হ্যান্ডলুম কাপড়ের তুলনায় সিল্ক, ভেলভেট, শিফন জাতীয় কাপড়ে কিন্তু হাত অনেক সরু দেখায়। লিনেন বা সুতির পোশাক হলে খেয়াল রাখবেন, হাতা যেন অল্প লুজ় হয়।
অ্যাকসেসরিজ়: যদিও এরা অতিথি শিল্পী, তবুও পুরো লুকে গ্ল্যামার অ্যাড করতে এরাই প্রথম সারিতে। হাতে চুড়ি বা সরু ব্রেসলেট পরতে পারেন। ব্যাগ নিলে ভারী মোটা ব্যাগ নেবেন না। বরং স্লিং ব্যাগ সঙ্গে রাখুন। গলায় লম্বা হার পরতে পারেন। তবে চোকার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
চুল: চুলের ভূমিকাও গৌণ নয়। একমাথা পিঠ বা কোমর ছাপানো চুল থাকলে আর চিন্তা নেই। চুল সেট করে ছড়িয়ে দিন হাতের উপরে। হাতের উপর দিয়ে চুলের অর্ধেক অংশ নিয়ে আসুন সামনে, বাকিটা থাকুক পিঠের উপরে। এতে চুলই হাতের চওড়া ভাব অনেকটা ঢেকে দেবে। লম্বা চুলের চেয়েও লেয়ার বা ফেদার কাট চুল এ ক্ষেত্রে বেশি সহায়ক। কাটের ফাঁক দিয়ে বেরোনো স্কিনের দৌলতে হাতের গড়ন অনেকটাই স্লিম দেখায়।
ব্যায়াম
হাতের পেশি সুঠাম করতে অল্প কিছু ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে শরীরের দিকেও যদি নজর দেন, তা হলে লাভ দ্বিগুণ।
l আর্ম স্লাইড: মাটিতে হামাগুড়ির ভঙ্গিতে থাকুন। এ বার সামনের দু’হাত মাটিতে ঘষে একবার এগোন আবার টেনে স্বস্থানে ফিরিয়ে আনুন। এ ভাবে দশ বার করুন।
l বল স্ল্যাম: দু’পা ফাঁক করে দাঁড়ান। হাতে ভারী বল নিয়ে মাটির দিকে ছুড়ুন। মাটিতে বাউন্স করে উঠে এলে হাতে ধরে আবার স্ল্যাম করুন। এ ভাবে ১৫ থেকে ২০ বার করতে হবে।
l বটল বেঞ্চ প্রেস: দু’হাতে ৫০০ মিলিলিটারের জল ভরা বোতল নিয়ে বেঞ্চে শুয়ে পড়ুন। এ বার বোতল দুটো বুকের কাছে ধরে শুরু করুন। বোতল ধরে হাত উপরের দিকে তুলুন, আবার বুকের কাছে নিয়ে এসে দশ বার বেঞ্চ প্রেস করুন।
l পুশ আপ: মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার টো মাটিতে রাখুন। আর দু’হাতের তালু। এ বার হাতে চাপ দিয়ে বাকি শরীর উপর-নীচে ওঠা-নামা করান। একবারে অন্তত দশটা পুশ আপ করুন।
হাতের যত্ন
স্লিভলেস পরতে হলে হাতের যত্ন নেওয়াও প্রয়োজন। হাতে ব্রণ, স্ট্রেচ মার্কস বা কালো ছোপ থাকলে মোটেও ভাল দেখাবে না। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার হাত স্ক্রাব করুন। তার জন্য বেসন ও টক দই ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকের মৃত কোষ উঠে যাবে। ফলে ব্রণর সমস্যা দেখা দেবে না। একই সঙ্গে ত্বকের ট্যানও উধাও হবে। স্ট্রেচ মার্কস কমাতে শিয়া বাটার বা হোহোবা অয়েল দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। হাতের ত্বকের লাবণ্যও ধরা থাকবে।
স্লিভলেস পরলে হাতে শিমার লাগাতে পারেন। এতে রোগা তো লাগবেই। হাত উজ্জ্বলও হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy