Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Safety Measures

বাজির বিপদ এড়াতে

বাজি ফাটানোর সময়ে দুর্ঘটনা ঘটলে কী ভাবে ব্যবস্থা নেবেন? সাবধান হোন আগে থেকেই।

An image of Firecrackers

—প্রতীকী চিত্র।

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:২৬
Share: Save:

বাজি পোড়ানোর সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কার কথা মাথায় রাখা উচিত সবচেয়ে আগে। বাজি ফেটে হাত-পা, মাথা, মুখ বা চোখে যদি বড় ধরনের আঘাত লাগে কিংবা পুড়ে যায়, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা-ও ভেবে রাখা দরকার। বিশেষ করে শিশু বা বৃদ্ধরা যেখানে উপস্থিত, সেখানে সাবধানতা আরও বেশি করে অবলম্বন করতে হবে। কয়েকটি সাধারণ বিষয় মাথায় রাখলেই বাজি থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

সাবধানতার গোড়ার কথা

বাজি কিনে আনা বা তৈরি করার সময়ে থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যেমন, ভাল ব্র্যান্ডের তুবড়ি, রংমশাল, কিউআর কোডযুক্ত গ্রিন ফায়ারক্র্যাকার্স ইত্যাদি। সবুজ বাজি থেকে দূষণও কম হবে। পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না জানালেন, মাটির খোলে বারুদ ভরে তৈরি হয়, এমন বাজি বিক্রি করায় সাধারণত তাঁরা উৎসাহ দেন না। কারণ এই ধরনের বাজি চোখ-মুখের একেবারে সামনে ফেটে গেলে সেই দুর্ঘটনা প্রাণঘাতী পর্যন্ত হতে পারে। তাই কাগজের খোলের বাজি এ ক্ষেত্রে বেশি নিরাপদ।

—প্রতীকী চিত্র।

বাজি পোড়ানোর সময়ে বিশেষ ভাবে যা যা মনে রাখতে হবে, তা হল:

  • যেখানে বাজি পোড়ানো হচ্ছে, সেখানে এক বালতি জল এনে রাখতে হবে। কোথাও আগুন ধরে গেলে তা বাড়তে দেওয়ার আগেই যাতে নিভিয়ে ফেলা যায়। অনেক সময়ে জল আনতে আনতেই বিপদ বেড়ে যায়।
  • বাজিতে আগুন ধরানোর সময়ে হাওয়ার বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে আগুন ধরাতে হবে। হুস করে আগুন ধরে গেলে তা যেন নিজের গায়ের দিকে চলে না আসে, তাই এই সাবধানতা।
  • সিন্থেটিক বা শিফন নয়, সুতির জামা পরে বাজি ফাটাতে হবে। তাতে চট করে আগুন ধরবে না পোশাকে।
  • কোনও ভাবে জামায় আগুন ধরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেই পোশাক খুলে ফেলার চেষ্টা করুন। মোমবাতি বা প্রদীপ থেকে আগুন ধরার ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন। মাটিতে নয়, কোনও উঁচু জায়গায় প্রদীপ বা মোমবাতি রাখুন।
  • পুরনো বাজি ফাটানো বিপজ্জনক। বাজি ফাটানোর আগে তা ভাল করে রোদে দিন। বাজিতে ড্যাম্প ধরে গেলে সে বাজিও ফাটাতে যাবেন না। ঠাসা বারুদের মধ্যে এয়ার পকেট তৈরি হলে আগুন ধরালে বিস্ফোরণের ভয় থাকে।
  • কোনও বাজিতে আগুন দিয়েও যদি তা না ফাটে, আবার ফাটানোর চেষ্টা করবেন না। অন্য বাজির সঙ্গেও তা রাখা যাবে না। জলের বালতিতে ফেলে দিন।

—প্রতীকী চিত্র।

বিপদে করণীয়

বার্ন ইনজুরির চিকিৎসা বাড়িতে করা সব সময়ে সম্ভব নয়। বিশেষ করে যদি গভীর ক্ষত তৈরি হয়ে থাকে। পুড়ে যাওয়া জায়গাটি ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলাই প্রাথমিক কর্তব্য। খেয়াল রাখতে হবে, জায়গাটিতে যাতে ধুলোবালি না লাগে। প্লাস্টিক সার্জন অনুপম গোলাশ জানালেন, ক্ষতস্থান ভাল ভাবে ধুয়ে, বাড়িতে থাকা অ্যান্টিসেপটিক মলম লাগিয়ে, জায়গাটি ঢেকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। ‘‘কত শতাংশ পুড়ে গিয়েছে, ডিপ বার্ন কি না, যদি তা হয়, তা হলে সেই অংশের চামড়া বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে নতুন চামড়া দিয়ে তার চিকিৎসা সম্ভব কি না... এ সবই খতিয়ে দেখে তবে চিকিৎসা শুরু করা হয়। ক্ষত গভীর হলে তা সারতে সময় নেয় বেশি। পঞ্চাশ শতাংশের বেশি পুড়ে গেলে তার নিরাময় কঠিন হয়ে পড়ে। আর যদি বার্ন চামড়ার উপরিভাগেই সীমিত থাকে, তা হলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেরে যায়,’’ জানালেন ডা. গোলাশ। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ কেটে বাদ দিয়ে নতুন চামড়া দিয়ে প্রতিস্থাপনের কাজটি সহজ নয়। রোগীর নিজের চামড়া দিয়ে তা সম্ভব না হলে স্কিন ব্যাঙ্কের সাহায্য নেওয়া হয় অনেক সময়ে এ সব ক্ষেত্রে।

আলোর উৎসব যেন নিরানন্দে পরিণত না হয়, খেয়াল রাখুন। বাজি ফাটানোর সময়ে সাবধানতা জরুরি, সঙ্গে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও থাকা প্রয়োজন।

অন্য বিষয়গুলি:

Firecrackers Kali Puja Diwali Tips Burn
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy