গরম বাড়ছে। বাজারে ধীরে ধীরে মুখ দেখাচ্ছে রকমারি আম। মরসুমী আম খেতে পছন্দ করেন সকলেই। কিন্তু একই সঙ্গে বাজারে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অস্বাস্থ্যকর আমও। ক্রেতার চাহিদা মেটাতে অল্প সময়ের মধ্যে আমকে পাকাতে ক্যালশিয়াম কার্বাইড ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাই ‘নকল’ আমটি বেছে নিতে না পারলেই ‘ফলের রাজা’ কিন্তু বিপদ ডেকে আনতে পারে।
কী কী ক্ষতির আশঙ্কা?
সাধারণত কম সময়ের মধ্যে আম পাকানোর জন্য ক্যালশিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করা হয়। কার্বাইডের মধ্যে থাকে আর্সেনিক এবং ফসফরাস— যা শরীরের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। এই ধরনের রাসায়নিক থেকে মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি, এমনকি ক্যানসারও হতে পারে। এ ছাড়াও ফল পাকানোর জন্য ইথাইলিন গ্যাসের ব্যবহার করা হয়। বর্ণহীন এবং দাহ্য এই গ্যাসটি অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে গেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে শনাক্ত করবেন?
‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (এফএসএসএআই) ভাল আম চিহ্ণিত করা জন্য বর্ণ, স্পর্শ, গন্ধ এবং গুণগত মানের উপরে জোর দিয়েছে।
রং: কৃত্রিম ভাবে পাকানো আমের রং প্রাকৃতিক আমের থেকে অনেক বেশি হলুদ বা কমলা হয়। অনেক সময় এই ধরনের আমগুলি বেশি চকচকে মনে হতে পারে।
গন্ধ: প্রকৃতিক ভাবে পাকা আমের মধ্যে মিষ্টি গন্ধ থাকে। কিন্তু কৃত্রিম ভাবে পাকানো আমের ঘ্রাণ নিলে অনেক সময়েই তার মধ্যে রাসায়নিকের গন্ধ পাওয়া যায়।
ওজন: হাতে ধরলে রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আমের ওজন কম মনে হতে পারে। কারণ, রাসায়নিকের ব্যবহারের ফলে অনেক সময়েই ফলের অন্তর্গত কোষের দ্রুত বিভাজন ঘটে। ফলে ফলটি নরম মনে হয়।
দেখতে কেমন: আমের খোসার বাইরে কোনও কালো দাগ থাকলে বা বোঁটা থেকে রস নির্গত হলে সেই আম কেনা উচিত নয়।
স্বাদ: কৃত্রিম পাকা আমের স্বাদ ফিকে হতে পারে। তাই খাওয়ার পর মুখে আমটি বিস্বাদ ঠেকলে বুঝতে হবে আমটি রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হয়েছে।
কয়েকটি সহজ পরীক্ষা
১) বাড়িতে একটি সহজ পরীক্ষার সাহায্যে আমের গুণগত মান যাচাই করা যায়। একটি পাত্রে জল নিন। তার মধ্যে আমটি চুবিয়ে দিন। যদি আমটি জলে ডুবে যায়, তা হলে আপনি সুরক্ষিত। কিন্তু আমটি যদি পাত্রের জলে ভেসে থাকে তা হলে বুঝতে হবে, আমটি সম্ভবত রাসায়নিকের সাহায্যে পাকানো হয়েছে।
২) একটি দেশলাই কাঠি জ্বালিয়ে আমটির কাছে ধরুন। যদি কোনও রকম আগুনের ফুলিঙ্গ দেখা যায়, তা হলে বুঝতে হবে, আমটি রাসায়নিক ব্যবহার করে পাকানো হয়েছে। তবে এই পরিক্ষাটি ঝঁকিপূর্ণ। তাই প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনেই করা উচিত।