Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Winter Care Tips

শীতপরিদের রূপনামচা

রুক্ষ ত্বক, শুষ্ক চুলের মরসুমি সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রয়োজন অতিরিক্ত যত্ন।

An image of Skin Care

মডেল: শ্রেষ্ঠা সুর।

চিরশ্রী মজুমদার 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৪:৪৮
Share: Save:

উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করলে খেত সেজে ওঠে পুরুষ্টু শীতফসলে, বাগানে ভরে যায় রঙিন ফুল। পাতা ঝরার মরসুম হলেও প্রকৃতির রূপের ডালিতে কিছু কমতি থাকে না। কিন্তু সৌন্দর্য যেন উবে যায় মানুষের ত্বক আর চুল থেকে। আসলে, আমাদের ত্বক, চুল বাতাসের জলীয় কণা শুষে নিয়ে জেল্লা বজায় রাখে। তাপমাত্রা আর বাতাসে আর্দ্রতা কমলে তাই ত্বক, চুলও শুষ্ক, প্রাণহীন হয়ে যায়। চুলের ডগা ফাটে, খসে পড়ে। মৃত কোষ জমে স্ক্যাল্পে। ঠোঁট-গোড়ালি ফাটে। উৎসবের মরসুমে ফ্যাশনদুরস্ত পোশাক, জুতো, অ্যাকসেসরির সঙ্গে ত্বক-চুলের এমন বেহাল দশায় বিড়ম্বনায় পড়েন অনেকেই। শীতদস্যুর কবল থেকে তাঁদের রূপের পাখিটিকে উদ্ধার করতে রইল কিছু টিপস।

ত্বকের জেল্লার জন্য

  • ক্লেনজ়িং, টোনিং, ময়শ্চারাইজ়িং-এর রূপরুটিনে সামান্য বদল আনুন। বারবার মুখ ধোবেন না। স্নানের সময় এক বার আর রাতে বাড়িতে ফিরে এক বার মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। বাকি সময় তুলোয় মাইল্ড ক্লেনজ়িং লোশন নিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখুন। ক্রিম বেসড হেভি ময়শ্চারাইজ়ার লাগান।
  • রোমকূপে শীতের ধুলোময়লা আটকে গেলে ত্বকের সমস্যা বাড়ে। তাই সপ্তাহে দু’-তিন বার স্ক্রাব করুন। এতে ত্বকের মৃত কোষ উঠে যাবে, রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকবে। আপনাকে তরুণ দেখাবে। কিন্তু অতিরিক্ত স্ক্রাব করবেন না। নয়তো ত্বকের উপরের যে স্তরটি নানা দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচিয়ে রাখে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
  • রাসায়নিকে ভরা উগ্র প্রসাধনী থেকে দূরে থাকুন। শীতে ত্বক বেশি স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। এই ধরনের প্রসাধনী থেকে ত্বকে অ্যালার্জি, লাল ভাব দেখা দিতে পারে। এমন কিছু হলে আক্রান্ত অংশে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কর্টিজ়োন ক্রিম লাগাতে পারেন। চটজলদি উপশম হবে।
  • গ্লিসারিন, শিয়া বাটার, জলপাই তেল থেকে প্রস্তুত সাবান মেখে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন। স্নানের পর সারা শরীরে তেল মালিশ করুন। তার পর বডি লোশন লাগাবেন। অয়েল মাসাজ করে স্নান করতে চাইলে, গায়ের জল মাইক্রোফাইবার যুক্ত তোয়ালে দিয়ে থুপে থুপে শুষে নিন। একটু জলীয় ভাব শরীরে লেগে থাকা অবস্থায় বি-ওয়াক্স, অ্যাপ্রিকট অয়েল, কোকো বাটার ইত্যাদি উপাদানে সমৃদ্ধ বডি লোশন ব্যবহার করুন। ত্বকের আর্দ্রতা, কমনীয়তা ফিরে আসবে। দিনের বেলা অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।
  • মধু ও চিনির স্ক্রাব দিয়ে ঠোঁটের মৃত কোষ তুলে ফেলুন। আমন্ড অয়েল যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন। স্মাজপ্রুফ লিপস্টিক লাগালে রাতে শোয়ার আগে ভাল করে পরিষ্কার করবেন। এতেই ঠোঁট মখমলি থাকবে।
  • গোড়ালির যত্ন নিন। নিয়মিত পেডিকিয়োর করুন। সম্ভব না হলে গরম জলে পায়ের পাতা ডুবিয়ে রেখে ফুট স্ক্রাব দিয়ে পা পরিষ্কার করুন। তার পর পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে মোজা পরে থাকুন।

মডেল: তৃণা সাহা।

কেশরাশির সৌন্দর্যরক্ষায়

  • খুশকি, চুল পড়ার উপদ্রব দূর করতে চুল ধুয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। তার পর ক্রিমি কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার লাগান চুলের মাঝামাঝি অংশ থেকে ডগা পর্যন্ত।
  • সপ্তাহে এক দিন চুলে নারকেল তেল ও জলপাই তেল মিশিয়ে মাসাজ করে আধ ঘণ্টা পর চুল ধুয়ে নিন। এতে চুলের ফলিকল মজবুত হবে, সহজে ঝরবে না। অন্য আর এক দিন ভাল কোনও হেয়ার মাস্ক বা ডিম ও মধুর প্যাক ব্যবহার করুন। ডিপ কন্ডিশনিং হয়ে যাবে।
  • ভিজে চুল বাঁধবেন না। কোথাও বেরোনোর আগে স্নান করতে হলেও হাতে সময় রাখবেন, যাতে চুল সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। শুকনো চুল প্রতি ঘণ্টায় আঁচড়ে নেওয়া উচিত।
  • বেড়াতে গেলে বা পিকনিকে স্কার্ফ, উইন্টার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। দূষণ থেকে রক্ষা পাবে চুল। তবে হ্যাট বা ক্যাপ স্টাইলিং-এ চুলের বাউন্স অনেক সময় হারিয়ে যায়। টুপি খোলামাত্র চুল শুকনো, উসকোখুসকো হয়ে যায়। স্থিরতড়িৎ উৎপন্ন হতেও দেখা যায়। সহজ মুশকিল আসান— এমন ক্যাপ বাছুন যার ভিতরের অংশে স্যাটিন বা অন্য নরম কাপড়ের স্তর রয়েছে। এতে চুল ঠিক থাকবে।
  • এই ঋতুতে হিট স্টাইলিং কম করানোই ভাল। উৎসব-অনুষ্ঠানে স্টাইলিং করাতে চাইলে প্রোটেক্টর স্প্রে ও প্রাইমার ব্যবহার করবেন। দু’মাস অন্তর চুল ট্রিম করালে ডগা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। শীতের বিদায় নেওয়ার পালা এলে, ঠিক সরস্বতী পুজোর আগে এক বার স্পা করিয়ে নিন। তাতেই শীত চুলের যেটুকু ক্ষতি করেছিল, সে সব মেরামত হয়ে আবার ফিরে পাবেন প্রাণবন্ত কোমল চিকন কেশদাম।

মডেল: তৃণা সাহা, শ্রেষ্ঠা সুর

ছবি: জয়দীপ মণ্ডল, অমিত দাস

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE