Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Gardening Tips

যত্ন নিয়েও টবের গাছ বাঁচছে না? সার দিলেও শুকিয়ে যাচ্ছে পাতা, কোন কোন ভুল শুধরে নেবেন?

গাছ বাঁচছে না বলে মন খারাপ? জল, সার দিয়েও পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে? কী কী করলে গাছ বাঁচবে জেনে নিন।

Ways to protect the plants on your verandah, rooftop or in your room from perishing

টবের গাছ তরতাজা থাকবে, জানুন উপায়। ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৭:৩৫
Share: Save:

টবে সুন্দর ফুলগাছ বা পাতাবাহার গাছ কিনে আনলেন, কিন্তু ক’দিন পর থেকেই দেখলেন তা শুকিয়ে যেতে বসেছে। জল দিয়ে, সার দিয়েও যখন সাধের গাছটি বাঁচে না, তখন যে কী কষ্ট হয়, তা আর বলে বোঝানোর নয়। অনেককেই বলতে শুনবেন, যে তাঁদের হাতে গাছ ভাল হয় না। আসলে হাতের গুণ নয়, বরং এমন কিছু ভুল হয়, যাতে গাছ খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে থাকে। একেকটি গাছের জন্য একেক রকম পরিবেশ দরকার। ঘরের ভিতরে যে গাছগুলি রাখা হয় অর্থাৎ ‘ইনডোর প্ল্যান্ট’ সেগুলি কম আলোতেও বাঁচে। খুব বেশি যত্ন নিতে হয় না। আবার ফুল বা ফলের গাছ হলে, সেগুলিতে নিয়ম করে রোদ লাগাতে হয়। জলও দিতে হয় মাপ মতো।

তাই গাছের যদি শখ থাকে, তা হলে জেনে নিন ঠিক কোন কোন কারণে আপনার বাড়ির গাছগুলি বাঁচছে না। কোন কোন ভুল শুধরে নেবেন।

সঠিক টব বাছছেন তো?

গাছের চারার ধরন অনুযায়ী টব বাছতে হবে। খুব ছোট টব না কিনে মাঝারি মাপের টব দিয়েই শুরু করুন। যদি দেখেন, গাছের বৃদ্ধি থেমে গিয়েছে, পাতাগুলি বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে, যতই জল দিন না কেন, দ্রুত মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে শিকড় বেড়ে গিয়ে পুরো টবে ছড়িয়ে পড়েছে। গাছটিকে তখন আরও একটু বড় আকারের টবে রাখুন। যদি শুরুতে ৮ বা ১২ ইঞ্চি ব্যাসের টব নেন, তা হলে ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের টবে গাছটিকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

টবের নিকাশি ব্যবস্থা দেখে নিন

টবের ছিদ্র দিয়ে বাড়তি জল বেরোচ্ছে কি না, সেটা দেখে নিতে হবে। গাছের গোড়ায় জল জমে থাকলেই গাছ নষ্ট হয়ে যাবে। যদি দেখেন, গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে বেশি জল দিয়ে ফেলছেন। সব গাছের জল শোষণ ক্ষমতা সমান নয়। যে গাছের কম, তাতে কম জলই দিতে হবে। না হলে বাড়তি জল গাছের গোড়ায় জমে থাকবে।

গাছ বুঝে জল দিন

ক্যাকটাস, স্নেক প্ল্যান্ট এবং জেড প্ল্যান্টের ক্ষেত্রে মাটি পুরোপুরি শুকিয়ে এলে তবেই জল দিতে হবে। ফার্ন জাতীয় গাছ স্যাঁতসেঁতে মাটি পছন্দ করে, তাই মাটিতে একটু ভেজা ভাব থাকতেই পারে। মানি প্ল্যান্ট কম জলেই দিব্যি বেঁচে থাকে। সপ্তাহে দু’দিন ভাল করে জল দিলেই হবে। তবে ফুল বা ফলের গাছ টবে পুঁতলে, পরিমাণমতো জল দিতেই হবে। যদি দেখেন গাছের পাতা বাদামি রঙের হয়ে যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে গাছ ঠিকমতো জল পাচ্ছে না।

রোদ চাই

কিছু গাছ ছায়াতেই দিব্যি বেঁচে থাকে। কিছু গাছ আবার একটু বেশিই রোদ চায়। ঘরের ভিতরে বাঁচে যে গাছগুলি, সেগুলি ছায়াবান্ধব হয়। বেশি রোদে রাখলে পাতা শুকিয়ে যাবে। তাই ঘরের কোনদিকে বেশি রোদ আসছে, তা বুঝে নিয়ে গাছ রাখুন। তবে ‘ইনডোর প্ল্যান্ট’ হলেও মাঝেমধ্যে রোদে রাখতেই হবে।

যে সব গাছ রোদ ছাড়া বাঁচে না, সেগুলিকে ঘরের জানলায় বা বারান্দায় রাখলেও, সপ্তাহে একদিন কিংবা নিদেনপক্ষে প্রতি ১০ দিনে একবার ছাদে নিয়ে গিয়ে রোদে রাখতে হবে। চারা গাছ হলে কিন্তু দুপুরের চড়া রোদে বাইরে রাখবেন না, তা হলে গাছ মরে যাবে।

ঠিকমতো মাটি দিন

কোন গাছে কেমন মাটি লাগবে তা মালি বা গাছ বিক্রেতার থেকে জেনে নিতে হবে। সব গাছে কিন্তু একরকম মাটি না-ও চলতে পারে। এঁটেল মাটি বেশি জল নিষ্কাশনে বাধা দেয়। অতিরিক্ত বেলে মাটি জল ধরে রাখতে পারে না। তাই বেলে আর দোঁয়াশ মাটির মিশ্রণই দেওয়া উচিত। তবে ক্যাকটাস জাতীয় গাছ হলে, বালি, হাড়ের গুঁড়ো ও অল্প দোঁয়াশ মাটির দরকার হয়। এমন ভাবে মাটি দিতে হবে, যাতে বেশি জল জমে থাকতে না পারে।

গাছের পুষ্টি

গাছেরও পুষ্টি চাই। তাই তিন থেকে চার মাস অন্তর গোবর সার দিতে হবে।

মনে রাখবেন, মাটিতে সরাসরি রাসায়নিক সার দেবেন না। বরং বাড়িতেই বানিয়ে নিন জৈব সার। সব্জির খোসা জমিয়ে রাখুন। চা বানিয়ে পাতা ফেলবেন না। সবজির খোসা আর চায়ের ভেজা পাতা শুকিয়ে উত্তম সার হতে পারে। তবে দুধ চায়ের ভেজা পাতা শুকিয়ে দেবেন না। ডিমের খোলা বা পেঁয়াজের খোসা ভেজানো জলও ভাল সার হতে পারে। ডিমের খোলা গুঁড়ো করে সাত থেকে দশ দিন মুখবন্ধ পাত্রে রেখে ভেজান। তার পর ছেঁকে নিয়ে সমপরিমান পরিষ্কার জল দিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে পারেন। পেঁয়াজের খোসার ক্ষেত্রেও তাই। রাসায়নিক সার দিতে হবে এক-দেড় মাস অন্তর। মিউরেট, পটাশ ও বোরনের মিশ্রণ দিতে হবে গাছের গোড়ায়। গাছ বুঝে কী পরিমাণ সার লাগবে ও কী অনুপাতে মেশাতে হবে, তা গাছ বিক্রেতার থেকেই জেনে নিতে হবে।

পোকামাকড় থেকে বাঁচান

ছাদ, বারান্দা কিংবা বাগান সাজিয়েছেন পছন্দের গাছ দিয়ে। কিন্তু দেখলেন, শখের গাছগুলিতে পোকা ধরেছে। তাহলে উপায়? গাছের ছোট ছোট পোকা ও ছত্রাক মারতে নিম তেল খুব কার্যকরী। একটি স্প্রে বোতলে ভরে নিম তেল স্প্রে করুন গাছে।গাছে পোকা লাগার অব্যর্থ দাওয়াই রসুন। পোকামাকড় এমনিতেই রসুনের গন্ধ সহ্য করতে পারে না। সেই জন্য চট করে তারা রসুন গাছের কাছে ঘেঁষে না। তাই পোকা লাগা এড়াতে গাছের মাটিতে কয়েক কোয়া রসুন রেখে দিন। ইউক্যালিপটাস তেলের তীব্র গন্ধও পোকামাকড় দূর করে। আপনার শখের গাছগুলিতে এই তেল স্প্রে করুন, হাতেনাতে ফল পাবেন!

অন্য বিষয়গুলি:

Plantation Tree Plantation Gardening
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy