বেড়ে চলেছে গরম, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের ব্যবহার। পাশাপাশি, ফ্যান এবং ওয়াশিং মেশিনের ব্যবহারও গরমকালেই বেশি হয়। তার সঙ্গে জলের পাম্প। গৃহস্থের বাড়িতে বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলির দৌলতে মাসের খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে তরতর করে। মধ্যবিত্তের কাছে এয়ার কন্ডিশনার কেনাই কষ্টসাধ্য, উপরন্তু সেটির কারণে বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে তাল মেলানো, নাজেহাল অবস্থার শিকার তাঁরা। এমন অবস্থায় কয়েকটি ছোটখাটো জিনিস মাথায় রাখলে অন্তত এসি-র বিল কমানো সম্ভব হয়।
বিদ্যুতের বিল কমানোর জন্য এসি চালানোর সঠিক পদ্ধতি
থার্মোস্ট্যাট সেট করুন: সবচেয়ে কার্যকরী এবং সহজ কৌশল হল, থার্মোস্ট্যাট সেটিং। অর্থাৎ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এসি-কে সেট করা, যেটিতে ঘর ঠান্ডাও হবে এবং জ্বালানিও কম পুড়বে। প্রতিটি ডিগ্রি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা বাঁচতে পারে। বলা হয়, ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা উচিত এসি-র তাপমাত্রা। এর নীচে নয়।
এসি পরিষ্কার রাখুন: নিয়মিত যন্ত্রটি পরিষ্কার করতে হবে। সার্ভিসিংয়ের উপরেও বিলের বৃদ্ধি-হ্রাস নির্ভর করে। এসি-র ভিতরে ধুলো-ময়লা ভরে গেলে সহজে ঠান্ডা হয় না। ফলে অনেকেই তাপমাত্রা কমিয়ে দেন। তা ছাড়া ঠান্ডা করার জন্য যন্ত্রের উপর চাপ পড়ে, তাতে জ্বালানি পুড়তে থাকে বেশি পরিমাণে। তাই সংস্থার সঙ্গে কথা বলে সময় মতো সার্ভিসিং করান। পাশাপাশি নিজেই মাঝেমধ্যে উপরের জালিগুলি খুলে জলে ধুয়ে নিন। এ ছাড়া এসি-র আউটডোর ইউনিটটিকে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে ছায়া রয়েছে। যদি ছাদের উপর রাখেন, তা হলে ইউনিটের উপর ছাউনি করে দিলেও কমপ্রেশারে কম চাপ পড়ে।

এসি-র আউটডোর ইউনিটটিকে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে ছায়া রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
মুক্ত বায়ুচলাচল করতে দিন: দিনের অপেক্ষাকৃত কম গরমের সময়গুলিতে এসি বন্ধ করে ঘরের জানালা-দরজা খুলে দিন। যেমন, ভোরের দিকে এবং রাতের দিকে। এই সময়ে রোদের দাপট থাকে না। তাই এই সময়গুলিতে এসি বন্ধ করে ঘরে মুক্ত বাতাস চলাচল করতে দিন। এতে ঘর নিজে থেকেই শীতল হয়ে যাবে। এর পর যন্ত্রের কাজ করতেও সুবিধা হবে।
এসি-র সঙ্গে ফ্যান চালান: কেবল এসি-র উপর ভরসা না করে একই সঙ্গে টেবিল ফ্যান বা সিলিং ফ্যান চালাতে হবে। সে ক্ষেত্রে এসি-র উপর চাপ কম পড়ে এবং জ্বালানি কম পোড়ে।
তাপরোধী বন্ধোবস্ত: প্রবল তাপপ্রবাহের সময়ে ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখতে হবে। মোটা পর্দা টেনে রাখতে হবে জানালায়, যাতে রোদ প্রবেশ করতে না পারে। এতে তাপ ঘরের ভিতর ঢুকতে পারবে না। ফলে আপনাআপনি খানিক ঠান্ডা হয়ে যাবে ঘর। এসি-র উপর সমস্ত ভার থাকবে না।
অভ্যাসে বদল আনুন: উপরে উল্লিখিত সমস্ত কৌশলের আগে নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করা দরকার। শক্তি-সাশ্রয়ী জীবন যাপন করার চেষ্টা করতে হবে। ঘর থেকে বেরোনোর সময়ে ফ্যান, আলো, এসি, ইত্যাদি সমস্ত যন্ত্রের সুইচ বন্ধ করা দরকার। প্রয়োজন ছাড়া এসি বা ফ্যান না চালাবেন না। অকারণে বেশি বেশি জামাকাপড় না কাচা কিংবা জলের পাম্পও বুঝেশুনে ব্যবহার করার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এতেই সবচেয়ে বেশি খরচ বাঁচবে।