শিশুর টিফিন দেওয়ার মধ্যেই বড় ভুল থেকে যায়। সচেতন হোন এখন থেকেই। ছবি: শাটারস্টক।
বাড়িতে শিশু থাকলে তার প্রত্যেক বিষয়ে কড়া নজর রেখে চলাই সচেতন অভিভাবকের কাজ। তার পড়াশোনা, খাওয়াদাওয়া, আচার-আচরণ সব কিছুর প্রতি যত্ন নিতে গিয়ে এমন কিছু বড় ভুল কি হয়ে যাচ্ছে যার মাসুল গুনতে বাধ্য হচ্ছে আপনার সন্তান?
শিশুর চাহিদা মতো রান্না, তার পছন্দ অনুযায়ী টিফিন সে সব না হয় রোজই বানিয়ে দিচ্ছেন। প্রয়োজনে টিফিন না খেলে শাসনও করছেন , কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি, এই টিফিন দেওয়ার মধ্যে কোনও ত্রুটি থেকে যাচ্ছে কি?
না, টিফিনেও ডায়েট উপুড় করে দিন এমন কথা বলছি না। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় ভুললে চলে না। আর অজান্তে সে সবই ভুলতে বসি আমরা। কীসে টিফিন দেন সন্তানকে? প্লাস্টিক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে না তো?
আরও পড়ুন: পেটের মেদ কিছুতেই কমছে না? ঘরোয়া এই চারটি উপায়ই তা হলে যথেষ্ট
শরীর-সাস্থ্য নিয়ে এ সব তথ্য আগে জানতেন?
অ্য়ালুমিনিয়ামের ফয়েলকেও খুব একটা ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করছেন না গবেষকরা।
আজকাল সাধারণ প্লাস্টিকের বাক্স এড়াতে আমরা নানা ধরনের উন্নত মানের প্লাস্টিকের টিফিনবক্স ব্যবহার করি, কেউ বা ফয়েলে মুড়েই খাবার দিই শিশুকে। নিজেরাও অফিসে আসার সময় এরকম পাত্রেই টিফিন আনেন। কিন্তু জানেন কি, গবেষকদের মতে এই ধরনের টিফিনবক্স শরীরের ক্ষতি করছে প্রভূত। এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA)-ও তাদের মতামত জানিয়েছে।
এফডিএ-র রিপোর্টে প্রকাশ, জেনোস্ট্রেজেন নামক এক ক্ষতিকর রাসায়নিকের ফলে প্লাস্টিকে রাখা খাবার থেকে অসুখ ছড়ায়। গরম খাবার যখনই প্লাস্টিকের ফয়েল বা পাত্রে রাখা হলে উষ্ণতার সংস্পর্শে এসে প্লাস্টিকের গা থেকে জেনোস্ট্রেজেন ক্ষরণ হয়। এতে শিশুর শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
কেবল গরম খাবারই নয়, ঠান্ডা খাবারের সংস্পর্শে এলেও অতি ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণা মিশে যেতে পারে রক্তপ্রবাহের সঙ্গেও। যা যকৃতেও পৌঁছে যায়। মাইক্রো প্লাস্টিক যে মানুষের শরীরে ঢুকছে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। কারণ, মানুষের বর্জ্যে তার নমুনাও মিলেছে। তাই প্লাস্টিকের বোতলে জল, খাবার ইত্যাদি বহন করায় সহমত নন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: ঘরের ভিতরের দূষিত বায়ু থেকে বাড়ে সংক্রমণ, সুস্থ থাকতে মেনে চলুন এ সব উপায়
আপাত ভাবে উপকারী বলে মনে হলেও অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলকেও খুব একটা ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করছেন না তাঁরা। তাঁদের মতে, অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলে দু’-ঘণ্টার বেশি খাবার রাখলে ধীরে ধীরে খাবারে মিশতে থাকে অ্যালুমিনিয়াম— যা শরীরের জিঙ্ককে প্রতিস্থাপিত করে। জিঙ্ক প্রতিস্থাপনের ফলে শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্যে গোলমাল দেখা যায়। ফলে ডায়াবিটিসের সমস্যা হানা দিতে পারে।
স্বাস্থ্যকর স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রেই দিন খাবার।
এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহ জানান, ‘‘আজকাল যে অনেক শিশুর মধ্যে জুভেনাইল ডায়াবিটিস দেখা যায় তার অন্যতম কারণ এই অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলে খাবার পুড়ে দেওয়া। কেবল ছোটরাই নয়, বড়দের মধ্যেও এই ধরনের পাত্রে বা ফয়েলে খাবার নিয়ে যাওয়ার যে অভ্যাস দেখা যায় তা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।’’
তা হলে উপায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র। অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র গরম খাবারের সংস্পর্শে এলেও কোনও রকম রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায় না। ভাল মানের স্টিলের পাত্রও শরীরের জন্য ভাল। তাই ব্যবহার করুন সেরকমই টিফিনবক্স, শিশুর খাবারও পুড়ে দিন এতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy