দার্জিলিঙে স্বাদের সন্ধানে। ছবি: সংগৃহীত।
বাঙালির কাছে দার্জিলিং ভ্রমণ কখনও একঘেয়ে হয় না। যত বারই বেড়াতে যাওয়া হয়, এই শৈলশহর নতুন করে ধরা দেয় প্রত্যেক বারই। হিমালয়ের কোলে ছোট্ট শহর ‘দার্জিলিং’ নামটির উৎপত্তি তিব্বতি শব্দ ‘দোরজে’ থেকে, যার অর্থ ইন্দ্রের রাজদণ্ড। আজও এই শৈলশহর তার রাজকীয়তা নিয়ে স্বমহিমায় বিরাজমান। এক নিমেষেই ক্লান্ত মনকে চাঙ্গা করে দিতে সিদ্ধহস্ত।
তবে বাঙালির ভ্রমণ তো পেটপুজো ছাড়া অসম্পূর্ণ। দার্জিলিং শহর জুড়ে ছোট-বড় বহু খাবারের ঠিকানা। দিন দিন সেই সংখ্যা আরও বাড়ছে। মোমো, থুকপা থেকে ইংলিশ ব্রেকফাস্ট— রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাহারি খানাপিনার দোকান অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। তবে দার্জিলিং ঘুরতে যাওয়ার আগে জেনে নিন, গ্লেনারিজ়, কেভেন্টার্স ছাড়া আর কোন কোন খাবারের বিপণিতে ঢুঁ না মারলে এই শহরে আপনার সফর অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
টম অ্যান্ড জেরি ক্যাফে: এই ক্যাফেতে ঢুকলেই আপনার সামনে ভেসে উঠবে এক টুকরো ছেলেবেলা। টম অ্যান্ড জেরি কার্টুনের থিমেই এই ক্যাফের অন্দরসজ্জা। ক্যাফের এক দিকে ওপেন কিচেন আর তার ঠিক পাশেই বসার জায়গা। এই ক্যাফের আরেকটি আকর্ষণ হল ছোট একটা লাইব্রেরি। এই ক্যাফেতে ঢুঁ মারলে চিকেন সসেজ খেতে ভুলবেন না যেন। এমন নরম ও রসালো সসেজের স্বাদ কম সংখ্যক ক্যাফেতেই পাবেন। সসেজ খেতে খেতে চুমুক দিতে পারেন হট চকোলেটেও। হালকা শীত শীত আমেজের সঙ্গে হট চকোলেটের সেই স্বাদ যেন অতুলনীয়। এখানকার ওয়াফেল, প্যানকেকও চেখে দেখতে পারেন। চকবাজারের এই ক্যাফেটি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এই ক্যাফেতে এক জনের খাওয়ার খরচ পড়তে পরে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
সোনম’স কিচেন: টম অ্যান্ড জেরি ক্যাফের ঠিক উল্টো দিকের ২৫ বছরের পুরনো এই রেস্তরাঁটি আকারে ছোট হলেও এখানকার খাবারের স্বাদ কিন্তু আপনাকে নিরাশ করবে না। চার-পাঁচটি কাঠের টেবিল আর একটা ছোট হেঁশেল, ব্যস ওইটুকুই। এখানকার হ্যাশ ব্রাউন প্ল্যাটার চেখে দেখতেই পারেন। সেই প্ল্যাটারে থাকবে দু’টি টোস্ট, চিজ় স্লাইস, একটা বিরাট আকারের হ্যাশ ব্রাউন, গ্রিলড টম্যাটো আর স্ক্র্যাম্বল্ড এগ। চিজ়ের সঙ্গে হ্যাশ ব্রাউনের যুগলবন্দি আপনার মন জয় করবেই। নামীদামি রেস্তরাঁর প্রাতরাশের ভিড় এড়াতে চাইলে এই ঠিকানাটি রাখতেই পারেন পছন্দের তালিকায়। এখানকার বানানা, নাট্স, চকোলেট সস্ প্যানকেকটি এক বার খেলে তার স্বাদ মনে থেকে যাবে অনেক দিন। সঙ্গে চেখে দেখতে পারেন জিঞ্জার লেমন হানি টি। দু’জনের খরচ পড়বে প্রায় ৩০০ টাকা। রেস্তরাঁটি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত ও বিকেলে সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
ওয়াশিংটন রেস্টর্যান্ট: ১৯৪৮ সাল থেকে লাডেন লা রোডের এই রেস্তরাঁটি বেশ জনপ্রিয়। এখানকার চিলি গার্লিক চিকেন সসেজের স্বাদ ভোলার নয়। দার্জিলিঙের ঠান্ডার সঙ্গে এই ঝাল ঝাল সসেজের পদটি খেতে মন্দ লাগবে না। সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা অবধি এই রেস্তরাঁটি খোলা থাকে। এখানকার চিলি ফ্রায়েড মোমো, থুকপা, পর্ক চিলি, পর্ক সাপটা, ফ্ল্যাট নুডল্সের স্বাদও চেখে দেখার মতো।
সোলটি রেস্টর্যান্ট: মোমোপ্রেমী হলে লাডেন লা রোডের এই ঠিকানায় এক বার ঢুঁ মারতেই হবে। এখানে গেলে চেখে দেখতে পারেন মটন স্টিম মোমো। মোমোর খোলটি একেবারে স্বচ্ছ আর ভিতরে মটন, আদা, পেঁয়াজ, লঙ্কা আর ধনেপাতার পুর। এমন রসালো মোমো মুখে দিলেই যেন গলে যাবে। সঙ্গে পাবেন ক্লিয়ার স্যুপ। এই রেস্তরাঁয় দু’জনের খরচ পড়বে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই রেস্তরাঁটি খোলা থাকে।
পেনাং: ৫২ বছরের পুরনো এই রেস্তরাঁটির মূল আকর্ষণ হল থাকালি থালি। এখানে খাবার পরিবেশন করা হয় কাঁসার বাসনে। থালিতে পেয়ে যাবেন ভাত, শাক, সব্জি, স্যুপ, ডাল, দেশি মুরগির ঝোল, আচার আর ভাজাভুজি। লাডেন লা রোডের এই রেস্তরাঁয় দু’জন থালি খেলে খরচ পড়বে প্রায় ৮০০ টাকা। সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা পাবেন এই রেস্তরাঁ।
দ্য পার্ক রেস্তরাঁ: দার্জিলিঙে বসে থাই খাবারের স্বাদ চেখে দেখতে হলে ক্লক টাওয়ারের কাছে এই ঠিকানায় ঢুঁ মারতে পারেন। এখানকার প্রন প্যাড থাই চেখে দেখতে ভুলবেন না যেন। সঙ্গে থাই চিকেন গ্রিন কারির স্বাদও চেখে দেখার মতো। এখানে খাওয়াদাওয়া করলে দু’জনের খরচ পড়বে প্রায় ৯০০ টাকা। রোজ সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই রেস্তরাঁটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy