হার্টের রোগীরা কি বেশি ঝুঁকিপূর্ণদের তালিকায়? ছবি: শাটারস্টক।
হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে করোনার থাবা থেকে বাঁচা কি তুলনায় কঠিন? যাঁদের হার্টের পাম্পিং এর ক্ষমতা কম, তাঁদের শরীরে এমনিতেই অক্সিজেনের কিছুটা ঘাটতি থেকে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম থাকে। তা হলে তাঁরা কি বেশি ঝুঁকিপূর্ণদের তালিকায়?
হৃদরোগবিশেষজ্ঞ পি কে হাজরার মতে, ‘‘কিছু হার্টের অসুখের রোগী আছেন, যাঁদের পেসমেকার বা ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট হয়েছে। এঁদের সংক্রমণের ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। তাই বাড়ির কোনও সদস্যের জ্বর-সর্দি-কাশি হলে এদের ত্রিসীমানায় আসা নিষেধ। একই সঙ্গে চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধ খেতে কোনও রকম গাফিলতি চলবে না। অল্পবিস্তর অসুখে চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। বাড়ির বাইরে যাওয়ার কোনও ঝুঁকি নেবেন না। তবে যদি রোগীর হার্টে বড় ধরনের সমস্যা হয় বা হার্ট অ্যাটাক হয়, কিংবা শ্বাসকষ্ট ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে হার্টের চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে, এমন হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হবে।’’
শহরের অপর এক হৃদবিশেষজ্ঞ দেবব্রত রায় জানালেন, ‘‘কোভিড-১৯-এর সংক্রমণে মূলত শ্বাসনালী ও ফুসফুস আক্রান্ত হয়। এর ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। অক্সিজেন কমে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই হার্টের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই হার্টের সমস্যায় কোভিড–১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম বা ‘এআরডিএস’-এর ঝুঁকি অত্যন্ত বেড়ে যায়। এর ফলে সেপটিসিমিক শকে চলে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীর জীবন সংশয়ের সম্ভাবনা বাড়ে।’’
আরও পড়ুন: আমারও কি করোনা হল! এই মানসিক চাপ সরিয়ে এ ভাবে বাঁচুন
করোনা উদ্বেগ: বাইরে থেকে ফিরেই আমাদের কী কী করতে হবে?
হার্ট অ্যাটাক, শ্বাসকষ্ট ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলার মতো ঘটনায় হার্টের চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে, এমন হাসপাতালে নিয়ে যান।
‘আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি’ কোভিড– ১৯ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হার্টের অসুখের রোগীদের জন্যে একটি গাইডলাইন মেনে চলার কথা বলেছেন। কারও মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাইমারি পিটিসিএ অর্থাৎ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা অনুচিত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাক হলে থ্রম্বোলিটিক থেরাপির সাহায্যে চিকিৎসা করকতেই বলছেন চিকিৎসকরা।
সাধারণত কী কী যত্ন দরকার?
• রাজ্যের প্রথম কোভিড - ১৯ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মারা যান হার্ট অ্যাটাকে। তাই হার্টের অসুখ থাকলে শরীরের বাড়তি যত্ন নেওয়াও দরকার। লকডাউনে বাড়ি থাকতে হচ্ছে বলে শরীরচর্চা করা বন্ধ করলে চলবে না। উপায় থাকলে ভোরে বা সন্ধের সময় ছাদে হাঁটা যেতে পারে।
• নিয়মিত প্রাণায়াম ও হালকা ব্যায়াম করতে হবে। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে হার্ট ভাল রাখার ব্যায়াম অভ্যাস করতে হবে।
• নির্দিষ্ট সময় ওষুধ খেতে ভুলবেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হার্টের অসুখের রোগীদের হাই ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল, ডায়বিটিস থাকে। এই সব সমস্যার জন্যে নির্দিষ্ট ওষুধ খাবার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন– ই সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
• এ ছাড়া বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন মেনে বাড়িতে থাকলেও, মুখে-চোখে হাত দেবেন না। খাবার আগে-পরে তো বটেই , কিছু ক্ষণ পর পর ভাল করে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন।
• অকারণে মাস্ক পরে বসে থাকার দরকার নেই। বরং সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন আর অবশ্যই বাড়িতে থাকুন। এই মারণ ভাইরাস প্রতিরোধের একমাত্র উপায় বাড়ির বাইরে না যাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy