ছবি: শাটারস্টক।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে দেশজুড়ে লকডাউনের সময়ে সকলেই গৃহবন্দি। এই সময়ে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে গেলে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো দরকার। ইমিউনিটি বাড়াতে বেশ কিছু ভিটামন, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ট্রেস এলিমেন্ট উল্লেখযোগ্য ভুমিকা নেয়। বিভিন্ন ভিটামিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি।
কোন সময়ে কী কী খেতে পারেন, খাদ্যতালিকায় কী কী থাকবে, সে ব্যাপারে পরামর্শ দিলেন সিনিয়র কনসালট্যান্ট নিউট্রিশনিস্ট নীনা সিংহ। তাঁর পরামর্শ, এই সময় বাজারে আমলকি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি-র এক অত্যন্ত ভাল উৎস আমলকি। সম্ভব হলে প্রত্যেক দিন এক টুকরো আমলকি খান। এ ছাড়া ঢ্যাঁড়শ, পটল, কুমড়ো, বিনস, গাজর, উচ্ছে, বাঁধাকপি, নটে শাক, কলমি শাক, ক্যাপসিকাম, বরবটি, কড়াইশুঁটি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ সবেতেই আছে পর্যাপ্ত পুষ্টি। লকডাউনে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে বলে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া দরকার। নইলে বাড়তি ক্যালোরি ওজন বাড়িয়ে দেবে। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, মুড়ি, চিঁড়ে, সুজি, ওটস পরিমাণে কম খাওয়া উচিত। স্যালাড, ফল, স্যুপ, কল বের করা ছোলা, মুগ, বাদাম খাওয়া যেতে পারে।
সারা দিনে কী কী খাবেন তার একটা তালিকা বানিয়ে দিলেন নীনা সিংহ।
ব্রেকফাস্ট হোক রাজার মতো
সকালে উঠে অল্প গরম জল আর এক টুকরো কাঁচা হলুদ খেলে গলার সমস্যা দূর হয়। একই সঙ্গে সর্দি, কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা সমেত নানান সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। কাঁচা হলুদ না থাকলে রান্নায় ব্যবহৃত খাঁটি গুঁড়ো হলুদ গরম জলে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এর পর চা বা কফির সঙ্গে দুটো বিস্কুট।
ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পরিমাণ হবে ওল্টানো পিরামিডের মতো। অর্থাৎ সকালের জলখাবার পরিমাণে অনেকটা বেশি। মধ্যাহ্নভোজ তার থেকে কম পরিমাণ আর রাতের খাবার অল্প। এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, ব্রেকফাস্ট হবে রাজার মতো আর ডিনার দরিদ্রদের মতো।
ব্রেকফাস্টে কী খাবেন
ছুটির দিনে বাঙালির ভালবাসার জলখাবার লুচি-তরকারি। তবে রোজ ছুটির দিন বলে প্রতি দিনই লুচি খেলে চলবে না। রুটি খাওয়া যেতে পারে। সঙ্গে ডিমসেদ্ধ, ডাল আর স্যালাড। গাজর, বিনস সমেত অন্যান্য সব্জি দিয়ে ডাল ও ওটস খাওয়া যায়। সাবুর খিচুড়ি, গাজর, ক্যাপসিকাম, বিনস, বরবটি,সয়াবিনের বড়ি বা ডিম দিয়ে বাড়িতে বানানো চাওমিন বাচ্চা থেকে বড়, সকলেরই পছন্দ হবে। সুজি ও সব্জি দিয়ে উপমাও সকলের পছন্দের হবে। এ ছাড়া মুখ বদলাতে বাড়িতে বানানো ইডলি সম্বর ডালও যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর। আবার মুখ বদলাতে স্যুপ, স্যালাড, ওমলেট খাওয়া যায়। বানাতে পারেন গাজর বিনস দিয়ে চিঁড়ের পোলাও। পেটপুরে ব্রেকফাস্ট করার পর মিড মর্নিংয়ে একটা লেবু, আপেল, পেঁপে, শসা বা যে কোনও একটা ফল অথবা ফ্রুট স্যালাড দিলে বাচ্চা থেকে বড় সকলেই খুশি হবে।
দুপুরের খাবার
সাধারণ বাঙালি খাবার— ভাত, ডাল, সব্জি, মাছের ঝোল, চাটনি, শাকভাজা, লাউ, পেঁপে বা পটলের তরকারি খাওয়া যায়। তবে লকডাউনে পছন্দের পঞ্চব্যঞ্জন পাওয়া মুশকিল। এ ক্ষেত্রে সব্জি দিয়ে ডাল, তরকারি, মাছের ঝোল, স্যালাড আর দই বেশ পুষ্টিকর।
ভেজানো ছোলা, বাদাম দিয়ে ঝালমুড়ি যেমন মুখরোচক তেমনই পুষ্টিকর
বিকেলের জলখাবার
ভেজানো ছোলা, বাদাম দিয়ে ঝালমুড়ি বা চানা কিংবা চাট মুখরোচক আর পুষ্টিকর। চিনি ছাড়া লিকার চা আর বিস্কুট তো থাকবেই। এই প্রসঙ্গে জেনে রাখুন, বাড়িতে আছেন বলে একাধিক বার চা ও কফি পান মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। দিনে চার–পাঁচ বারের বেশি চা-কফি পান করা ঠিক নয়।
ডিনার
রাতের খাবার ৯টার মধ্যে খেয়ে নিতে পারলে ভাল হয়। খাবার অন্তত ২ ঘণ্টা পরে ঘুমোন উচিত। রুটি, ডাল, চানা, রাজমা, চিকেন সুবিধেমতো খাবেন। খাবার পর সহ্য হলে এক কাপ স্কিমড দুধ পান করলে ঘুম ভাল হয়।
কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে এবং সর্বোপরি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতি দিন ডাল, তিন–চার ধরনের শাকসব্জি ও কমপক্ষে ২টো গোটা ফল খেতে হবে। শরীর ভাল রাখার আর এক উপায় দিনে ২.৫– ৩লিটার জল খাওয়া। প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুটা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা উচিত। বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের জন্যই একই রুটিন। তবে যা-ই করুন বাড়ির বাইরে যাবেন না। পুষ্টিকর খাবার খেয়ে করোনাভাইরাস মুক্ত থাকুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy