Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
MEMORY

দরকারি বিষয় কিছুতেই মনে রাখতে পারছেন না? কেন হচ্ছে এমন, কী ভাবেই বা রুখবেন?

প্রায়ই ভুলে যান সব? তা হলে সমাধান?

ভুলে যাওয়া ভুলতে ভরসা রাখুন কিছু বিশেষ কাজে। ছবি: শাটারস্টক।

ভুলে যাওয়া ভুলতে ভরসা রাখুন কিছু বিশেষ কাজে। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৩:০৪
Share: Save:

সন্তানের স্কুল ফি দেওয়ার তারিখ, ইএমআই জমা করার দিন, অফিসের ডেডলাইন, বাড়ির বয়স্ক সদস্যের চেক আপের তারিখ, ক্রেডিট কার্ডের পিন, নিজের জরুরি নথিপত্র, প্রিয় বন্ধুর জন্মদিন... একটা মাথায় এত কিছু খুঁটিনাটি রাখতে গিয়ে প্রায়ই ভুলে যান সব? খুব গুছিয়ে রেখেছেন যে জিনিসটা, সেটা খুঁজতেই নাজেহাল হতে হয় প্রায়ই? খুব দরকারি কিছু মনে রাখতে চাইলে মোবাইলে রিমাইন্ডার দিয়ে মনে রাখতে হচ্ছে আজকাল।

এমনটা হয় বলে বাড়তি উদ্বেগের কারণ নেই। ভুলে যাওয়ার ‘অসুখ’ আজ ঘরে ঘরে। বিভিন্ন বয়সে ভুলে যাওয়ার কারণ কিন্তু নানা রকম। সে ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও স্বাভাবিক ভাবেই আলাদা।

১০-১৮-র কম বয়সে: অস্থিরমতি, দুরন্তপনা, নানা কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে রাখা এ সব কারণেই মূলত এই বয়সে মনোযোগের ঘাটতি দেখা দেয়। ক্রনিক কোনও মস্তিষ্কজনিত অসুখ না থাকলে একাগ্রতার অভাবেই এই সমস্যা হয়।

আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: নেই প্রতিষেধক, কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে জানলেই রোখা যাবে অসুখ

১৯-৬০ বছর: প্রতি দিনের নানা দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, বিভিন্ন কাজের ভার কাঁধে নিয়ে রাখা, কর্মজগতে প্রবেশ করার পর অনেকটা সময় অফিসেই কাটিয়ে ফেলায় লাইফস্টাইলের সমস্যার জন্যই এই সময় প্রয়োজনীয় জিনিস ভুলে যায় মানুষ। কেউ কেউ আবার অন্তর্মুখী হওয়ায় নিজের জগতে এতটাই মগ্ন থাকেন যে, বাইরের অনেক কিছুই তিনি মাথায় রাখতে পারেন না। তা থেকেই হয় সমস্যা।

৬০-এর ঊর্ধ্বে: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে এই বয়সে। মাঝে মাঝেই ভুলে যাওয়ার সমস্যা তৈরি করলে তা কিন্ত ডিমেনশিয়ার লক্ষণ।

এ ছাড়াও বেশ কিছু কারণে স্মৃতি কমে যায়।

কোনও কারণে মাথায় কোনও আঘাত লাগলে আর তার ঠিকঠাক চিকিৎসা না হলে সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে অপরিমিত মদ্যপানও স্মৃতি হারানোর একটি কারণ। দিনের পর দিন স্নায়ুর কোনও রোগের ওষুধ বা ঘুমের ওষুধ খেলে এই ধরনের প্রবণতা বাড়ে। শরীরে ভিটামিন কম থাকলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা থাকে। উচ্চমাত্রায় থাইরয়েড থাকলেও ভুলে যাওয়ার সমস্যা থাবা বসাতে পারে।

টুকটাক ভুলে যাওয়াও কি এক ধরনের অসুখ?

মনোবিদ জয়রঞ্জন রামের কথায়, তরুণ প্রজন্মের ভুলে যাওয়ার কারণ একসঙ্গে অনেক কিছু মনে রাখা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এটা ‘ইনফরমেশন ওভারলোড’। আজকাল এত কিছু মনে রাখতে হয় যে, অনেক সময়ই আমরা খেই হারিয়ে ফেলি। সেখান থেকেই ভুলে যাওয়ার শুরু। এ ছাড়া এ সবের সঙ্গেই যোগ হয় স্ট্রেস, অবসাদ, নানা দিক একা সামলানোর চাপ। এগুলো আজকাল খুব স্বাভাবিক। তাই অসুখ বলা য়ায় না। তবে যদি বার বার ভুলে যেতে থাকেন বা উত্তরোত্তর এই ভুলে যাওয়া বাড়তে থাকে, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণ নিতে হবে।

আরও পড়ুন: খাওয়ার সময় এ সব নিয়ম মানলেই মেদ কমবে, ঝরঝরে হবে শরীর

ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমার

বয়স্ক মানুষদের ভুলে যাওয়ার নেপথ্যে যে প্রধান দুই অসুখের কারসাজি, তারা ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমার। অনেক সময় বয়স্করা বাড়িক ঠিকানা বলতে পারেন না। রাস্তা হারিয়ে ফেলেন। এগুলো ডিমেনশিয়ার হাত ধরেই আসে। এই ডিমেনশিয়ারই একটি ‘টাইপ’ অ্যালঝাইমার। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হল ভুলে যাওয়া। রোগী সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কোনও কিছু ভুলে যেতে পারেন। তবে দীর্ঘ দিন আগের বিষয় মনে রাখেন সহজে। ভুলে যাতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ দিন-তারিখ বা গোটা কোনও ঘটনাই।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে যদি দেখা যায়, রাস্তায় বেরিয়ে তাঁরা পথ হারিয়ে ফেলেছেন বা বাজারে গিয়ে মনে পড়ছে না কেন বাজারে এসেছেন, এই লক্ষণগুলো ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক উপসর্গ বলে ধরা যেতে পারে।

স্মৃতিশক্তি বাড়বে কিসে?

ব্রাহ্মী শাক, ইলিশ মাছ, পাম অয়েল এ সবে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই অনেকেই এ সব খেয়ে বুদ্ধি তথা স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপদেশ দেন। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারণার তেমন বৈজ্ঞানিক কোনও ভিত্তি নেই। তাঁরা বরং যোগাসন, মেডিটেশনে বেশি ভরসা করতে বলেন। কোনও সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকলে একাগ্রতা বাড়ে। ফলে মনোযাগী হতে সুবিধা হয়। বিশেষ করে গান বা বাদ্যযন্ত্র বাজালে মস্তিষ্কের কোষ বেশি সক্রিয় থাকে। তাই গবেষকদের দাবি, এই সব কাজে মস্তিষ্ক বেশি সচল থাকে। নিয়মিত ধাঁধার সমাধান, শব্দছক, সুদোকু এ সবের অভ্যাস বজায় রাখলেও মস্তিষ্ক সচল থাকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE