শীতে শুনুন ত্বকের কথা, ড্রেসিং টেবিল সাজান তার প্রয়োজন বুঝে। ছবি: শাটারস্টক।
আগেকার দিনে একটু গ্লিসারিন, একটু সর্ষে বা তিল তেলেই শীতের রূপটান হয়ে যেত। সাবানের বদলে মাখা হত সর–ময়দা। পা ফাটা ঠেকাতে ভরসা ছিল ঝামা পাথর আর তেল–গ্লিসারিনের মিশ্রণ। মাথায় রিঠে–শিকাকাই ও নারকেল তেল।
আজকাল এ সবের পাট উঠে গিয়েছে। নামী–দামি ক্রিমে সাজানো থাকে ড্রেসিং টেবিল। কিন্তু তাতে কোনও অতিরিক্ত উপকার পাওয়া যায়, এমন ভাবলে তা আপনার মনের ভুল। কারণ তেল বা ক্রিমের কাজ কেবল পর্দা তৈরি করে ত্বকের জলীয়ভাব উবে যাওয়া ঠেকানো। কাজেই দামি ক্রিম মাখুন কি নারকেল তেল, কাজ হবে একই৷ ত্বকে অতিরিক্ত পুষ্টি জোগানোর কোনও ক্ষমতা নামী–দামি ক্রিমের নেই। শরীর–মন সুস্থ থাকলেই একমাত্র তা পাওয়া সম্ভব।
কী ভাবে ভরা শীতেও ত্বক পেতে পারে বাড়তি পুষ্টি, শুষ্ক আবহাওয়ায় শরীরে মিলতে পারে অতিরিক্ত আরাম? রইল সে সবের হদিশ।
আরও পড়ুন: করিনা কপূরের ছিপছিপে চেহারা তাঁর বুদ্ধিতেই, রুজুতা দিওয়েকর ফাঁস করলেন ওজন কমানোর কৌশল!
ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার বা গ্লিসারিন লাগান স্নানের পর পরই। ছবি: আইস্টক।
শীতে ত্বকের পুষ্টি
ত্বকের যত্নে তার আর্দ্রতা বজায় রাখতে দিনে ৭–৮ গ্লাস জল খান। সঙ্গে ঘোল, স্যুপ। ২–৩ কাপ কালো বা গ্রিন টি খেতে পারেন। কফি ও ফলের রস এক–আধ কাপের বেশি না খাওয়াই ভাল। গম, যব, ভুট্টা, বাজরা, মরসুমি ফল, আমলকি, পেয়ারা, সবেদা, আপেল, উচ্ছে, করলা, শাক, ডুমুর ইত্যাদিতে রয়েছে ত্বক ভাল রাখার কারিগর ভিটামিন সি, তাই এ সব নিয়মিত খান। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ গাজর, ডিমের কুসুম বা দুধ খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়৷ সঙ্গে খান জিঙ্কসমৃদ্ধ শুকনো ফল। প্রোটিন কম খেলে অপুষ্টি, ভিটামিন বি–র ঘাটতি থেকে অ্যানিমিয়া হতে পারে। ফলে চুল পড়া, নির্জীব ত্বকের সমস্যা লেগেই থাকবে। কাজেই মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, মুসুর-সহ অন্যান্য ডাল, ছোলা, রাজমা, ভুট্টা, সয়াবিন, বাদাম খান। ভাত, আটার রুটি, দালিয়া, চিড়ে, মুড়ি খান পরিমাণ মতো। অতিরিক্ত মদ খেলে ত্বকের শুষ্কভাব বাড়তে পারে৷ ক্ষতি হয় অতিরিক্ত ধূমপানেও। খোলা জায়গায় ব্যায়াম করুন৷ ভাল করে ঘুমোন। অসুখ–বিসুখ করলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করান।
আরও পড়ুন: জটিল হচ্ছে ডেঙ্গি-আতঙ্ক, যৌন সম্পর্কও এই রোগ ছড়ায় কি? কী করেই বা রুখবেন অসুখ?
শীতে খুশকি বাড়লে মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করে কন্ডিশনার লাগান।
তেল–জল–রোদ
শীতে সবচেয়ে ভাল সর্ষের তেল মেখে স্নান। কিন্তু অনেকের ত্বকে সর্ষের তেল সয় না। তেমনটা হলে নারকেল–তিল–লিভ অয়েল বা বর্ণ–গন্ধহীন পেট্রোলিয়াম জেলি মাখুন, অ্যালোভেরাও ভাল। তবে সরাসরি মাখলে অনেকের অ্যালার্জি হয়। তাই ত্বকের ধরণ বুঝে তা ব্যবহার করুন।
শীতে কখন তেল মাখতে হবে তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। তেল মাখুন স্নানের পরে, অল্প ভেজা গায়ে৷ এর পর আলতো করে মুছে নিন৷ ভাল করে তেল মাখার সময় না পেলে স্নানের শেষে এক মগ জলে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে তা গায়ে ঢালুন৷ তার পর নরম তোয়ালেয় আলতো করে মুছে নিন। ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার বা গ্লিসারিন লাগালে তা লাগান স্নানের পর, অল্প ভেজা গায়েই। তবে মনে রাখবেন, মুখের চামড়ায় অনেক সময় তেল সহ্য হয় না, ব্রণ, ফুসকুড়ি বেড়িয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে যা সহ্য হয়, তাই মাখুন৷ তার উপর সানস্ক্রিন৷ অবশ্যই মাখতে হবে।
পা ফাটা কমাতে সপ্তাহে দু’–এক দিন গরম জলে শ্যাম্পু বা সাবান দিয়ে মিনিট পাঁচেক পা ডুবিয়ে রাখুন। এর পর ঝামা দিয়ে ঘষে, ধুয়ে, হালকা মুছে নারকেল তেল বা গ্লিসারিন ও নারকেল তেলের মিশ্রণ লাগান৷ মোজা পরে নিন। অন্য দিনও স্নানের পর পায়ে তেল বা তেল–গ্লিসারিনের মিশ্রণ লাগিয়ে মোজা পরুন।
শীতে খুশকি বাড়ে৷ মাথার চামড়া শুকিয়ে গিয়েও সমস্যা হয়৷ সপ্তাহে দু’–বার মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করে কন্ডিশনার লাগান। খুশকি না থাকলে তেলও লাগাতে পারেন। খুসকি খুব বেড়ে গেলে কিটোকোনাজোল বা জিঙ্ক পাইরিথিয়ন জাতীয় শ্যাম্পু মাখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy