Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Fever

ঠান্ডা-গরমের ফারাকে বাড়তে পারে সর্দি আর জ্বর, শিশুদের সাবধানে রাখার পরামর্শ 

এক দিকে নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হলে জল জমে ডেঙ্গি, অন্য দিকে জোলো ঠান্ডা হাওয়ার জেরে ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি ও জ্বরের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।

An image of Fever

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৪০
Share: Save:

আবহাওয়ার কারণে ডেঙ্গির দোসর হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। চিকিৎসকেদের মতে, এই দুইয়ের জোড়া আক্রমণে আরও অন্তত ১৫-২০ দিন ভুগবে বঙ্গের আট থেকে আশি!

এক দিকে নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হলে জল জমে ডেঙ্গি, অন্য দিকে জোলো ঠান্ডা হাওয়ার জেরে ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি ও জ্বরের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনে যে ভাবে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া তৈরি হয়েছে, তাতে মাথাচাড়া দেবে ইনফ্লুয়েঞ্জা। ইতিমধ্যেই সর্দি-কাশি, বুকে কফ জমার সমস্যা বাড়তে শুরু করেছে ঘরে ঘরে। চিকিৎসকেদের সতর্কবার্তা, এটিকে শীতের শুরুর সময়ের সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করলে চলবে না। কারণ, ঠিক সময়ে এই সমস্যার চিকিৎসা না করালে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে শ্বাসযন্ত্রে। তাই বাচ্চা থেকে প্রবীণ, সকলকেই বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

আবহাওয়াবিদেরা জানাচ্ছেন, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য জোলো ঠান্ডা হাওয়া বইছে। এর প্রভাব কাটলে শুকনো ঠান্ডা হাওয়া ঢুকবে। দিনের বেলায় গরম অনুভূত হচ্ছে, রাতে তাপমাত্রা নামছে। এই দ্রুত ফারাকের কারণেই অসুখ বাড়ছে বলে মত চিকিৎসকেদের। ঘরে ঘরে সর্দিগর্মির বিষয়ে সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেন, ‘‘আরও অন্তত দিন পনেরো ডেঙ্গি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা একযোগে দাপট দেখাবে। বাচ্চাদের সাবধানে রাখতে হবে। যে হারে জোলো হাওয়া বইছে, তাতে ফুলহাতা জামা পরাতে হবে। প্রয়োজনে কান ঢাকতেও হবে। এড়িয়ে চলতে হবে ঠান্ডা খাবার, পানীয়।’’

আর কিছু দিন পর থেকেই শুরু হবে বিভিন্ন স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। ফলে এই সময়ে বাচ্চাদের অত্যন্ত সাবধানে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন শিশুরোগ চিকিৎসকেরাও। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জ্বর, সর্দিকাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্টও হতে পারে। কারণ, রাইনো, আরএসভি ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কমলেও এই আবহাওয়ায় ফের অ্যাডিনোভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, এই সময় বাচ্চাদের গলায় সংক্রমণ হচ্ছে। তাই তাদের প্রচুর জল খাওয়ানোর পাশাপাশি পরাতে হবে গরম পোশাক। জোলো আবহাওয়া থেকে নিরাপদে থাকতে বাচ্চাদের বাড়িতে বেশি থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি। তিনি জানাচ্ছেন, সাধারণত আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়ে বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি, কাশি বাড়ে। আবার হাঁপানি কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে সেগুলিও মাথাচাড়া দিতে শুরু করে। সেই জায়গায় এই জোলো হাওয়া গায়ে লাগলে ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।

প্রভাসপ্রসূন বলেন, ‘‘জোলো আবহাওয়ার সঙ্গে বাতাসে দূষণের মাত্রাও বেশি। সন্ধ্যা এবং ভোরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব বেশি থাকে। তাই ওই সময়ে যতটা সম্ভব বাইরে না বেরোনো উচিত।’’ বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে গেলে এবং তাপমাত্রা নেমে গেলে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া, উভয়েই দ্রুত বংশবিস্তার করে। এই সময়ে মানবদেহের শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের অংশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে সহজেই ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ায় কেউ সংক্রমিত হতে পারেন বলে জানাচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই। তাঁর কথায়, ‘‘কমবয়সি ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম। তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি। তা থেকে নিউমোনিয়া, ফুসফুসে সংক্রমণের মতো বড় অসুখেরও ঝুঁকি থাকে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy