শব্দ কই?
কে ভাল অভিভাবক, তা নিয়ে বিতর্ক ছিল। থাকবে। আগে বলা হত সন্তান পালনের ক্ষেত্রে শব্দই সম্পদ। কোন কথা শিশুর সামনে আলোচিত হবে, তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করবে তার জীবনবোধ। কিন্তু হালের গবেষণা বলছে, সম্পত্তিই শব্দ নিয়ন্ত্রণ করে।
‘ডেভেলপমেন্টাল সায়েন্স’ নামক এক পত্রিকায় ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই এমন দাবি করেছেন গবেষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, অর্থাভাবের কারণে অনেক সময়ে সন্তানের সঙ্গে কম বাক্যালাপ করেন বাবা-মায়েরা। তার প্রভাব পড়ে সন্তানের শব্দ-শিক্ষার উপরে। বাড়িতে যত কম কথা হয়, ততই কম শব্দ শেখে শিশু।
ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহেশ শ্রীনিবাসনের নেতৃত্বে হয়েছিল একটি সমীক্ষা। তিনি বলেন, ‘‘অর্থের টানাটানি সংসারের পরিবেশে কী ভাবে প্রভাব ফেলে, তা জানতে চেয়েছিলাম আমরা। সে কারণেই সমীক্ষা চালানো হয়।’’ বাবা-মায়েরা যখন টাকা জোগাড় করার চিন্তায় মগ্ন থাকেন, তখন বাড়ির শিশুটির কী হয়? এ কথা জানতে গিয়েই তাঁরা দেখেন, শব্দের জোগানে টান পড়ে টাকার অভাব থাকলে।
আগে ভাবা হতো মা-বাবা হওয়ার প্রাক্কালে কিছু কথা জানতে পারলে সুবিধা হয় শিশুকে বড় করতে। হবু বাবা-মায়েদের সে ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থাও হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কিন্তু এই গবেষণার ফল নতুন করে ভাবাচ্ছে সকলকে। গবেষকেদের বক্তব্য, একই মানুষের আচরণ এক-এক রকম হয় মাসের বিভিন্ন সময়ে। আর সেই আচরণই নানা ভাবে প্রভাব ফেলে শিশুর বড় হয়ে ওঠার সময়ে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, এর মানে এমন নয় যে, বাড়িতে অনটন চলা মানেই অভিভাবকের সঙ্গে কথোপকথন থাকবে না শিশুর। কিন্তু সেই আলাপ-আলোচনা থেকে শিশু কতটা সমৃদ্ধ হচ্ছে, তা নির্ভর করে বাবা-মায়ের মানসিক পরিস্থিতির উপরে। আর মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে অর্থের জোগানের দ্বারা।
ফলে কোন কথা শুনে সন্তান বড় হচ্ছে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে পারিবারিক আয়ের উপরে। কারণ, মাথায় যদি সর্বক্ষণ খাদ্যের জোগানের চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে কোনও অভিভাবকের, তাঁর পক্ষে শিশুর সার্বিক বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে চলা কঠিন হতেই পারে। এমনই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy