ফ্রিজের ঠান্ডা জল খেলে শুধু সর্দি-কাশি বা গলাব্যথাই হবে না, পেটের গোলমালের অন্যতম কারণও কিন্তু হিমশীতল জল। শুনতে অবাক লাগলেও তা সত্যি। গরম পড়তে শুরু করেছে। আর কিছু দিন পরেই চাঁদিফাটা গরমে ফ্রিজের কনকনে ঠান্ডা জল বা রাস্তা থেকে কেনা ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। এমন অভ্যাস যে কী কী বিপদ ডেকে আনবে, তা নিয়ে সচেতন নন অনেকেই। সাম্প্রতিক নানা গবেষণা বলছে, ঠান্ডা জল কিন্তু ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’ (আইবিএস)-এরও কারণ হতে পারে।
খাওয়ার পর ঠান্ডা জল খেতে বারণই করেন বড়রা। কারণ, এতে শ্বাসনালিতে শ্লেষ্মার অতিরিক্ত আস্তরণ তৈরি হয়। তার থেকে প্রদাহজনিত সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন:
এ বার আসা যাক পেটের গোলমালের কথায়। দেশের ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এর জার্নাল 'পাবমেড' থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, হিমশীতল জল খেলে ‘ভিসেরাল হাইপারসেনসিটিভিটি’-র সমস্যা দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ শরীরের ভিতরে প্রদাহ শুরু হবে। এতে বুক, পেট, তলপেটে ব্যথা হতে পারে। আবার ‘গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ডিজ়অর্ডার’ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিপাকক্রিয়ার হার কমে যাবে। ঠান্ডা জলে পাকস্থলী সঙ্কুচিত হয়ে যায়, ফলে খাবার ঠিকমতো পাচিত হতে পারে না। বিশেষ করে খাবারের স্নেহ পদার্থগুলি (ফ্যাট) ভেঙে দিতে বাধা দেয় ঠান্ডা জল। উল্টে, জমাট বাঁধিয়ে দেয়। ফলে বাড়তি মেদ জমতে থাকবে শরীরে। সব মিলিয়ে পরিপাকতন্ত্রের অবস্থা এতটাই বেহাল হয়ে যাবে যে, ধীরে ধীরে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করবে। তখন পেটের গোলমাল, হজমের সমস্যা, অম্বলের সমস্যা ভোগাবে।
অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে তা হৃৎস্পন্দনের হার কমিয়েও দিতে পারে। ‘ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য বলছে, দিনের পর দিন কনকনে ঠান্ডা জল খেয়ে গেলে তা হৃৎস্পন্দনের হার অনিয়মিত করে দিতে পারে। সাধারণত এক জন প্রাপ্তবয়স্কের হার্টবিট মিনিটে ৬০-১০০-এর মধ্যে থাকে। হৃৎস্পন্দনের একটা নির্দিষ্ট ছন্দও থাকে। এর মাত্রা যদি কোনও ভাবে বেড়ে যায় বা কমে যায়, তখন হার্টের সঙ্কোচন ও প্রসারণ অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় কার্ডিয়াক অ্যারিদ্মিয়া বলা হয়। তখন শ্বাসের হার বেড়ে যায়। এর ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে এবং তা হৃদ্রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে।