প্রতি দশ হাজার নবজাতকের মধ্যে গড়ে ১৫ জন মেরুদণ্ডের গঠন সংক্রান্ত অসুখ ‘স্পাইনা বিফিডা’য় আক্রান্ত হয়। প্রতীকী ছবি।
এ দেশে প্রতি দশ হাজার নবজাতকের মধ্যে গড়ে ১৫ জন মেরুদণ্ডের গঠন সংক্রান্ত অসুখ ‘স্পাইনা বিফিডা’য় আক্রান্ত হয়। মেরুদণ্ডের গঠনে ত্রুটির কারণে এই রোগে শিশুর স্বাভাবিক জীবনও ব্যাহত হয়। নবজাতকদের এই রোগ আটকাতে অন্তঃসত্ত্বাদের ঠিক সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড খাওয়ানো উচিত। সেই বার্তা দিতেই আজ, শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সরকারের কাছে আবেদন রাখতে চলেছে একাধিক চিকিৎসক সংগঠন।
ভারতে অন্তঃসত্ত্বাদের সরকার আয়রন ও ফলিক অ্যাসিডের ট্যাবলেট দিয়ে থাকে। তবে, অন্তঃসত্ত্বার গর্ভাবস্থা সুনিশ্চিত হওয়ার পরে, অর্থাৎ, তাঁর গর্ভাবস্থার ছ’সপ্তাহের পরে ওই ট্যাবলেট দেওয়া হয়। কিন্তু গর্ভসঞ্চারের তিন থেকে চার সপ্তাহেই তৈরি হয়ে যায় গর্ভস্থ শিশুর মেরুদণ্ড। ফলে, গর্ভাবস্থা সুনিশ্চিত হওয়ার পরে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া হলেও ভ্রূণের মেরুদণ্ড গঠনে তার কোনও উপযোগিতাই থাকে না। তখন তা শুধুমাত্র রক্তাল্পতা নিয়ন্ত্রণের কাজ করে।
তাই চিকিৎসকদের দাবি, চাল, আটা এবং নুনের মধ্যে যথাযথ পরিমাণে মেশানো হোক ফলিক অ্যাসিড। যে ভাবে থাইরয়েডের মতো রোগ প্রতিরোধে নুনে আয়রন মিশিয়ে বিক্রি করা এ দেশে বাধ্যতামূলক। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা ও দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশ খাবারে ফলিক অ্যাসিড মিশিয়ে থাকে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক নিউরো সার্জারি’র ভারতের প্রতিনিধি তথা চিকিৎসক সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘স্পাইনা বিফিডায় আক্রান্ত শিশুর মস্তিষ্কে জল জমে সেটির বিকাশ ব্যাহত হয়, মল-মূত্র ত্যাগে নিয়ন্ত্রণ থাকে না, শরীরের নিম্নাঙ্গ অসাড় হয়ে যায়। পা, মেরুদণ্ড, কিডনি এবং মস্তিষ্কে একাধিক ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচার করেও তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো যায় না। রোগের প্রকোপ বেশি হলে কিছু সদ্যোজাত জন্মের কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যায়। ফলে, এই রোগ প্রতিরোধ করা জরুরি।’’ তিনি জানাচ্ছেন, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফলিক অ্যাসিড যে কোনও বয়সের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে খেতে পারেন। ফলে, খাবারে তা মিশিয়ে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এই রোগ প্রতিরোধের উপযুক্ত পদক্ষেপ।
আজ, ৩ মার্চ ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধ দিবস’। ফলিক অ্যাসিডের অভাবে শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা রুখতে ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক নিউরো সার্জারি’, ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর প্রিভেনশন অব স্পাইনা বিফিডা’ এবং ভারতের ‘স্পাইনা বিফিডা ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গে মিলিত ভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক নিউরো সার্জারি’ উদ্যোগী হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy