Advertisement
E-Paper

শাহরুখ থেকে জন চিনি বাদ দিয়েছেন জীবন থেকে, ১৪ দিন চিনি না খেলে কী হবে, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা

অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অনেকেই মিষ্টি ছেড়েছেন। কেউ কেউ চিনি ছাড়ার চ্যালেঞ্জও নিচ্ছেন। ১৪ দিন খাবার থেকে চিনি বাদ দিলে কী হবে, জানেন?

টানা ১৪ দিন চিন ছুঁয়ে না দেখলে কী হতে পারে?

টানা ১৪ দিন চিন ছুঁয়ে না দেখলে কী হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ১০:০৫
Share
Save

সুস্থ থাকতে গেলে শরীরচর্চা প্রয়োজন। দরকার পরিমিত এবং উপযুক্ত খাওয়া। বি-টাউনের ‘ফিট’ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সকলেই তা মানেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে, শরীর সুস্থ রাখতে তাই এঁদের অনেকেই তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন চিনি। কোনও কোনও তারকা আছেন যাঁরা বিগত কয়েক বছরে মিষ্টি ছুঁয়েও দেখেননি।

বলিউড ‘বাদশা’ শাহরুখ খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন সে কথা। তাঁর ডায়েট থেকে চিনি বাদ। মিষ্টি খান না বহু বছর। ন’মাসে, ছ’মাসে একবার স্ত্রী গৌরীর বানানো ডাইজেসটিভ বিস্কুট দিয়ে তৈরি আইসক্রিম খান তিনি।

২৭ বছর ধরে মিষ্টি ছেড়েছেন বি-টাউনের অভিনেতা জন আব্রাহামও। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন সুস্থ থাকতে এবং ওজন বশে রাখতে হলে, ‘‘প্রথমেই খাবারের তালিকা থেকে মাখন, তেল, চিনি বাদ দিতে হবে।’’ গত ২৭ বছরে কাজু কাতলির একটা টুকরোও মুখে দেননি অভিনেতা জন।

বছরের পর বছর কঠোর সংযম দেখিয়ে মিষ্টি বাদ দেওয়া সহজ নয় একেবারেই। এতটা কঠিন সিদ্ধান্ত না নিলেও, যথা সম্ভব চিনি এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চিনি ছাড়লে শরীরে যে ইতিবাচক বদল হয় তা শুধু চিকিৎসক নয়, বলছেন, টানা ১৪ দিন চিনি না খেয়ে থাকা কৌতুকাভিনেতা সুমুখী সুরেশ।

দুই সপ্তাহ চিনি না খাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি।সেই অভিজ্ঞতাই সুমুখী ভাগ করে নেন সমাজমাধ্যমে। ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে মজার ছলে বলেন, ‘‘ চিনি হল প্রাক্তন প্রেমিকের মতো। ব্যস্ততার সময় তার কথা মনে হয় না। কিন্তু রাত দশটা বাজলে, একাকিত্বের সময় আবার তাকেই মনে পড়ে। ঠিক সে কারণে, রাতে মিষ্টি খাওয়ার বাসনা জাগে।’’

যাঁরা নিয়মিত চিনি খান, মিষ্টি খেতে ভালবাসেন তাঁদের কাছে টানা ১৪ দিন সে সব খাবার বাদ দেওয়া সহজ কথা নয় মানছেন চিকিৎসকেরাও। সহজ ছিল না সুমুখীর জন্যেও।চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সময় তিনি বাজারে গিয়ে জিনিসপত্র কিনেছেন। তবে চিনি রয়েছে এমন জিনিসের দিকে ভুলেও তাকাননি। লোভ যে হয়নি, হাত নিশপিশ করেনি, তা নয়। নিজেকে শাসন করেছেন। লোভ সামলাতে স্কোয়াট করেছেন। আর তাতেই ফল মিলেছে। সুমুখী বলেছেন, একটা সময়ের পর মিষ্টি খাওয়ার লোভ অনেকটাই সংবরণ করেছেন তিনি। অভিনেত্রী বলছেন, ‘‘ চিনি ছাড়ার পর বুঝেছিলাম, চিনি ছাড়া কফি খেতে এত ভাল লাগে! এই স্বাদ তো আগে পাইনি।’’

চিনি ছাড়ার পর শরীর এবং মন ফুরফুরে হয়েছে, শরীরচর্চায় বাড়তি শক্তি পেয়েছেন, এ কথা নিজে মুখেই জানিয়েছেন সুমুখী। সত্যিই কি চিনি ছাড়লে শরীরে বদল আসে? চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ‘‘অবশ্যই বদল আসে। এমনিতে আলাদা করে চিনি খাওয়ার উপকারিতা নেই। চিনি বা মিষ্টি সরাসরি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ১৪ দিন চিনি ছাড়লেই শরীরে বদল আসবে। এতে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ওজন কমে। তলপেটের মেদ কমানোর অন্যতম উপায় হল চিনি বাদ দেওয়া।’’

সুগারের চিকিৎসক রাজীব কোভিল বলছেন, ‘‘সম্পূর্ণ রূপে চিনি ছাড়া কঠিন হতে পারে। তবে কেউ দু’সপ্তাহ চিনি না খেলেই তার উপকারিতা বুঝতে পারবেন।’’

টানা ১৪ দিন চিনি না খেলে কী হবে?

১। চিনি বা মিষ্টি খেলে রক্তে আচমকা অনেকটা শর্করা চলে যায়। যাঁরা নিয়মিত মিষ্টি খাবার খান, তাঁদের ক্ষেত্রে কখনও শর্করার মাত্রা নামতে পারে। তখন আবার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হতে পারে, জানাচ্ছেন সুবর্ণ। তবে, তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকবে, বিশেষত ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রে।

২। রক্তে শর্করার ওঠা-নামার সঙ্গে মেজাজেও বদল ঘটে কখনও কখনও। রক্তে শর্করার মাত্রার হেরফের কম হলে, মেজাজও ঠিক থাকবে।

৩। অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, ব্রণ-সহ ত্বকের বিশেষ সমস্যা কম হতে পারে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিলে।

৪। ওজন কমাতে বিশেষ সহায়ক চিনি ছাড়ার চ্যালেঞ্জ। সামগ্রিক ওজন কমানোর পাশাপাশি তলপেটের মেদ ঝরাতে তা বিশেষ সহায়ক। ওজন বৃদ্ধি হলে অনেক অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। খারাপ কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। তাই ওজন বশে রাখার জন্য চিনি বাদ দেওয়া দরকার।

৫। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং হজমেও এর প্রভাব পড়ে। চিনি ছাড়লে বদহজমের সমস্যা যেমন কমতে পারে, তেমনই শরীরও তরতাজা লাগবে। কাজে বাড়তি শক্তি মিলবে

তবে শুরুতেই পাকাপাকি ভাবে চিনি ছেড়ে দেওয়া একটু কঠিন, বলছেন দুই চিকিৎসকই। রাজীবের কথায়, গ্রিলিন হরমোনের জন্য চিনি ছাড়ার কয়েক দিনের মধ্যে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হবে। সুবর্ণ বলছেন, যাঁরা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে অভ্যস্ত, তাঁদের এক দিনে অভ্যাস বদল কঠিন। কয়েক দিন পর থেকে শরীরে শর্করার মাত্রা খানিক নামলেই মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হবে। তাই এক বারে না ছেড়ে ধীরে ধীরে তা কমানো যেতে পারে।

চিনি খাওয়া ছাড়লে কি শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নেমে যেতে পারে?

তেমনটা হয় না, জানালেন সুবর্ণ গোস্বামী। তার কারণ, শরীর প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং অন্যান্য খাবার থেকে প্রয়োজনীয় শর্করা জোগাড় করে নেয়। চিনি বাদ দিতে পারলে বরং উপকার বেশি।

Health Tips Sugar

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}