Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

গরমে সুস্থ থাকতে সতর্ক হোন, পরামর্শ চিকিৎসকদের

সবে ব্যাটিং শুরু করেছে গ্রীষ্ম। চলবে লম্বা ইনিংস। ‘পাওয়ার প্লে’ও বাকি। তাই চিকিৎসকেরা একযোগে বলছেন, সাবধানের কোনও মার নেই। গরমে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ছবিই বুঝিয়ে দিচ্ছে এমন সাবধানবাণী দেওয়ার কারণ।

রোদ থেকে মাথা বাঁচাতে ভরসা রুমাল। ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

রোদ থেকে মাথা বাঁচাতে ভরসা রুমাল। ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৯
Share: Save:

তাপমাত্রার ওঠানামায় নজর রাখতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা!

সবে ব্যাটিং শুরু করেছে গ্রীষ্ম। চলবে লম্বা ইনিংস। ‘পাওয়ার প্লে’ও বাকি। তাই চিকিৎসকেরা একযোগে বলছেন, সাবধানের কোনও মার নেই। গরমে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ছবিই বুঝিয়ে দিচ্ছে এমন সাবধানবাণী দেওয়ার কারণ।

বুধবার দুপুরে আউটডোরে মেয়েকে দেখাতে এসেছিলেন বছর পঞ্চাশের গৌরাঙ্গ হাজরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্টিনের সামনে আচমকা মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। চোখে-মুখে জল ছেটানোর পরে প্রৌঢ় খানিক সুস্থ বোধ করেন। চিকিৎসকদের মতে, গরমের মরসুমে এমন ঘটনা আকছারই ঘটে। কিছু ক্ষেত্রে শরীরে সোডিয়াম-পটাসিয়ামের পরিমাণ কমে সমস্যা দেখা দেয়।

তা হলে কী করণীয়?

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘এখন যা আবহাওয়া, তাতে রোদের মধ্যে খুব বেশি ঘোরাঘুরি না করাই ভাল। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত সূর্যের তাপ সব চেয়ে বেশি থাকে। ওই সময়ে বাইরে না বেরোনোই উচিত।’’ তা যদি একান্তই সম্ভব না হয়, তা হলে দু’টি বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। শরীরে জলের ঘাটতি যেন না থাকে। ঘামের সঙ্গে নুনও যে হেতু দেহ থেকে বেরিয়ে যায়, তাই শরীরে জলের পাশাপাশি নুনও যাওয়া দরকার। অরুণাংশুবাবুর কথায়, ‘‘ডাবের জল খাওয়া খুব ভাল। চিঁড়ে-মুড়ি ভেজানো জল শরীরের পক্ষে আরামদায়ক।’’

পানীয়ের পাশাপাশি পোশাকও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে দলমত নির্বিশেষে চিকিৎসকদের ভোট পেয়েছে সুতির জামা, সানগ্লাস, সানস্ক্রিন, টুপি অথবা ছাতার ব্যবহার। ইএনটি চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘জিভে যদি লালা না থাকে, তা হলে সমস্যা। ক্লান্ত লাগলে বিশ্রাম নিন। খালি পেটে ঘুরবেন না। আর প্রচুর জল খান। ওআরএস, ফলের রস তো রয়েইছে।’’

চিকিৎসকদের একেবারে অপছন্দের তালিকায় রাস্তার ধারের কাটা ফল, মশলাযুক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড। তাঁদের মতে, অফিসপাড়ায় দুপুরে কাটা ফল খেয়ে পেটের অসুখ নিয়ে ভুগছেন, এমন উদাহরণ অসংখ্য। সেই সঙ্গে রোদ থেকে ঘেমেনেয়ে এসি ঘরে ঢুকে শরীর এলিয়ে দেওয়ারও বিপদ রয়েছে। গরম-ঠান্ডার হেরফেরে সর্দি, কাশি ও জ্বর শরীরকে কাবু করতে বেশি সময় নিচ্ছে না। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ডিরেক্টর প্রতীপ কুন্ডু বলেন, ‘‘অনেকে ১৬, ১৮, ২০ ডিগ্রিতেও এসি চালান। এটা আদৌ ঠিক নয়। এসি অন্তত ২৪ ডিগ্রির উপরে থাকা উচিত। প্রয়োজনে ২৭ ডিগ্রিতে এসি চালিয়ে ফ্যান চালান।’’

শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরি বলেন, ‘‘বাচ্চারা এ সময়ে পেটের অসুখে খুব ভুগছে। এ ছাড়া, সর্দিগর্মি তো আছেই। বাচ্চারা অনেক সময়ে রোদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করেই এসি-র মধ্যে ঢুকে পড়ে। এখন তো অনেক স্কুলে ক্লাসরুমও এসি। ঘাম শুকোনোর পরেই এসি-র মধ্যে যাওয়া উচিত। না হলে গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি, জ্বর হতে পারে।’’

স্কুল অব ট্রপিক্যালের ডিরেক্টর প্রতীপবাবু আবার যোগ করছেন একটি সতর্কবার্তাও। বলছেন, ‘‘এখন অনেকেই ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। মাঝেমধ্যে যে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে কোথাও যাতে জল না জমে, তা-ও খেয়াল রাখা উচিত। এই গরমেই পতঙ্গবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Health Summer Tips Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy