কুকুর কামড়ানোর পরের অবহেলাই বাড়িয়ে দেয় ,সংক্রমণ। ছবি: শাটারস্টক।
কুকুর ভালবাসুন কিংবা ভয় পান, কুকুরের কামড়ের প্রভাব কিন্তু সব শরীরেই সমান। তাই কুকুর ভালবাসলেও তার কামড়ের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে ও কামড়ানোর পরেও বিষ নষ্ট করতে কিছু পদক্ষেপ করতেই হয়।
জলাতঙ্ক রোগের ভয় ছাড়াও এই কামড়ে যে প্রদাহ তৈরি হয়, তাতে অন্য সংক্রমণও খুব তাড়াতাড়ি ধরে। তাই বাড়তি সতর্কতা নিতেই হয়। এ ছাড়া কুকুরের কামড় খুব যন্ত্রণাদায়কও। তাই প্রদাহের যত্নের সঙ্গে বেদনানাশের উপায়ও জানতে হয় বইকি।
সময় মতো চিকিৎসা না হলে কিন্তু জলাতঙ্ক যেমন প্রাণ কেড়ে নিতে পারে, তেমনই প্রদাহের জায়গায় সংক্রমণ ছড়িয়ে সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। কুকুরে কামড়ালে কেবল র্যাবিস ভাইরাসের ইঞ্জেকশন নিলেই কিন্তু দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। তা হলে উপায়? পরামর্শ দিলেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ গৌতম গুপ্ত।
আরও পড়ুন: হাতের উপরের অংশে জমছে দেদার মেদ? ঝরিয়ে ফেলুন এ সব উপায়ে
কুকুরে কামড়ালে প্রথমেই ক্ষতস্থান চেপে ধরুন। রক্ত যত তাড়াতাড়ি বন্দের ব্যবস্থা করা যাবে, ততই ভাল। তবে রক্ত বন্ধ করতে কোনও রকম কেমিক্যাল যোগ করবেন না প্রথমে। ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে কোনও রকম সুগন্ধী সাবান ব্যবহার তলবে না। পারলে পরিষ্কার কোনও কাপড় দিয়ে তা করুন, একান্তই তা হাতের কাছে না থাকলে কোনও অ্যান্টিবায়োটিক লোশন দিয়ে তা পরিষ্কার করুন। এই সময় খুব ক্ষতস্থান বেশি ঘষবেন না। যতটুকু না করলে বিষ যায় না। ততটুকুই ঘষুন। এ বার অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল কোনও লোশন বা অ্যান্টিবায়োটিক অয়েনমেন্ট লাগিয়ে পরিষ্কার গজ কাপড় দিয়ে বেঁধে দিন জায়গাটা।
কোর্স অনুযায়ী নিয়ম মেনে নিতে হবে ইঞ্জেকশন।
এ বারই শুরু আসল চিকিৎসা। কোনও ভাবেই দেরি করা যাবে না। দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে যান। র্যাবিস ভাইরাসের হানা ঠেকাতে দরকারি ইঞ্জেকশনের পাশাপাশি টিটেনাশ ইঞ্জেকশনও নিতে হতে পারে। কুকুরে কামড়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই দুই ইঞ্জেকশনই নিয়ে ফেলতে হবে। র্যাবিসের একটি নির্দিষ্ট কোর্স আছে। তার প্রথমটি যেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নেওয়া হয়ে যায়। এ বার কোর্স অনুযায়ী নিয়ম মেনে নিতে হবে ইঞ্জেকশন। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পথ্যের পাশাপাশি অবশ্যই প্রতি দিন কামড়ের ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে হবে। ধুলোবালি লাগানো যাবে না ওখানে। যত দিন না প্রদাহ শুকিয়ে আসে, তত দিন এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। খেয়াল রাখুন কুকুরটির দিকেও। কামড়ানোর কয়েক দিনের মধ্যেই কোনও অসুখে মারা গেলে বাড়তি সচেতনতা দরকার হয়। তেমন হলে সেই তথ্য অবশ্যই জানান আপনার চিকিৎসককে।
আরও পড়ুন: মেদ বৃদ্ধি থেকে অনিদ্রা, রাতে এ সব খাবার বাদ দিলে ওষুধ ছাড়াই কাটবে সমস্যা
সাবধানের মার নেই। তাই বাড়ির পোষ্যটি ভুলবশত দাঁত বসিয়ে ফেললেও র্যাবিস কোর্সটা শেষ করুন।
কোথায় ভুল হয়ে যায়?
বাড়িতে পোষা কুকুরকে অনেক সময় র্যাবিস প্রতিরোধক ইঞ্জেকশন দেওয়া থাকে। তা ছাড়া পোষ্যকে সন্তানসম দেখা আমাদের স্বভাবও। তাতে কোনও ভুল নেই। কিন্তু কোনও ভাবে কামড় সেখান থেকে এলেও নিজে অ্যান্টির্যাবিস নিয়ে রাখুন। কুকুরের ভ্যাক্সিনেশন তার শরীরের জন্য উপকারী। তাতে বিষের মাত্রাও কমে, তা ঠিক। কিন্তু তবু সাবধানের মার নেই। তাই র্যাবিস কোর্সটা শেষ করুন। এটা অনেকেই করেন না। তা থেকে পরে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
অনেকেই কোর্স শেষ করেন না। ছ’ মাসের মধ্যে অ্যান্টির্যাবিস না নেওয়া থাকলে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন সব ক’টি ইঞ্জেকশন দিতে। অনেকেই প্রথম তিনটি ইঞ্জেকশনের পর আর নেন না। পারলে এই বিষয়ে নিজে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। ভরসা করুন চিকিৎসকের উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy