Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
engine 2 diet

ক্যালোরি বাড়লেও এই ডায়েটে মোটা হওয়ার কোনও সুযোগই নেই!

এই ডায়েট শুরু করার আগে কী ভাবে কী করতে হবে, কত সময় নিয়ে করতে হবে, তা ভাল করে বুঝে নিন৷

ডায়েটেই লুকিয়ে স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি। ছবি: আইস্টক।

ডায়েটেই লুকিয়ে স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি। ছবি: আইস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৮
Share: Save:

যত খুশি খান৷ তাতে ক্যালোরি বাড়লেও কোনও ক্ষতি নেই৷ তবে কিছু নিয়ম আছে বইকি। এমন খাবার খেতে হবে, যাতে ক্ষতিকর চর্বি, নুন ও চিনি কম থাকে। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও প্রাণীজ প্রোটিন মোটে থাকবে না এই ডায়েটে। বরং পর্যাপ্ত শাক–সব্জি–ফল ও হোল গ্রেনের পাশাপাশি উপকারি ফ্যাট খান মাপ মতো, ক্ষতি নেই৷ তাতে ওজন যেমন কমবে, উপকার হবে হার্টেরও। ফ্যাট খাওয়া সত্ত্বেও শরীরে জমবে না মেদ৷ উপরি পাওনা হিসেবে প্রেশার, কোলেস্টেরল, সুগার বশে থাকবে৷

তবে এই ডায়েটে আমিষ খাবার মোটে থাকে না বলে হিসেব করে না খেলে প্রোটিন ও ভিটামিন বি ১২ থেকে শুরু করে আরও অনেক পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে৷ হতে পারে রক্তাল্পতা৷ তার হাত ধরে গ্রাস করতে পারে ক্লান্তি ও বিরক্তি৷ কাজেই ডায়েট শুরু করার আগে কী ভাবে কী করতে হবে, কত সময় নিয়ে করতে হবে, তা ভাল করে বুঝে নিন৷

ইঞ্জিন ২ ডায়েট

এই ডায়েটের দুটি ভাগ৷ ‘দ্য ফায়ার ক্যাডেট’ ও ‘ফায়ার ফাইটার’৷ প্রথম ২৮ দিন ফ্যায়ার ক্যাডেট প্ল্যান চলে, পরের ২৮ দিন চলে ফায়ার ফাইটার প্ল্যান৷

আরও পড়ুন: খুব কষ্ট করার দরকার নেই, এই সব সহজ উপায়েই জল বাঁচাতে পারেন প্রতি দিন

ফায়ার ক্যাডেট প্ল্যানের প্রথম সপ্তাহে বন্ধ হয় সব রকম দুধের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও রিফাইন্ড খাবার, যেমন, ময়দার রুটি–পাউরুটি–পাস্তা–, চিনি, মিষ্টি, চিপ্স, নরম পানীয়৷ দ্বিতীয় সপ্তাহে কমানো হয় মাছ–মাংস–ডিম৷ তৃতীয় সপ্তাহে কমে তেল৷ চতুর্থ সপ্তাহ থেকে শাক–সব্জি–ফল, হোল গ্রেন, ডাল, বাদাম, বীজ খাওয়া বাড়ে৷

ফায়ার ফাইটার প্ল্যানে নিষিদ্ধ খাবারগুলি বাদই থেকে যায়৷ চার সপ্তাহ ধরে কেবল শাক–সব্জি–ফল, হোল গ্রেন, ডাল, বাদাম, বীজ খেয়ে যেতে হয়৷ এর পর শুরু হয় ফায়ার ফাইটারের হিসেবে পথ চলা৷ যে যত বেশি দিন চলতে পারেন, তাঁর তত ভাল কাজ হয়৷

এই ডায়েটে কী খাবো

শাক–সব্জি–ফল, মাংসের বদলে টোফু, সেইতান (হুইটমিট বা হুইটগ্লুটেন), টেম্ফ (সয়াবিন গেঁজিয়ে বানানো হয়) উদ্ভিজ্জ দুধ, কম চিনি দিয়ে বানানো সয়াবিন ইয়োগার্ট, সালসা, বাদাম দিয়ে তৈরি মাখন, তিসির গুড়ো, টাটকা ভেষজ উপাদান, হাই ক্যালোরি ড্রেসিং না করা স্যালাড, কাঁচা বা সেঁকা বাদাম ও বীজ, হোল গ্রেন রুটি, পাউরুটি, সিরিয়াল, পাস্তা, শুকনো ও প্যাকেটের বিন, নুন বা তেলবিহীন লো–সোডিয়াম ও লো–ফ্যাট স্যুপ, ক্যান্ড টমেটো, চিনি না মেশানো শুকনো ফল, নুন না মেশানো পাস্তা সস, চিনি না মেশানো জ্যাম–জেলি, গুড়, ঝোলাগুড়, খাটি ম্যাপ্ল সিরাপ, চাঁকভাঙা মধু, কম নুন ও চিনিযুক্ত মশলা বা আচার, ভিটামিন ডি ও বি১২ সাপলিমেন্ট ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট৷

কী কী বাদ

মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত সাধারণ খাবার, চিজ সাবস্টিটিউট, তেল, চিনি, হাই ফ্রুক্টোজ কর্ণ সিরাপ, সস, সোডা, লজেন্স, কুকিজ, ময়দা, সাদা পাউরুটি, সাদা চালের ভাত, ময়দা দিয়ে বানানো পাস্তা, নুডুলস, ১০০ ক্যালোরিতে ২.৫ গ্রামের বেশি ফ্যাট আছে এমন ক্যান্ড বা প্যাক্ড খাবার৷

প্রথম ৪ সপ্তাহ মদ খাওয়াও নিষেধ৷ তারপর নিতান্ত খেলে দিনে এক গ্লাসের বেশি ওয়াইন নয়৷

আরও পড়ুন: সারা দিনের ক্লান্তি ভুলতে চান? এড়িয়ে চলুন সহকর্মীদের!

এই ডায়েটে জোর দিন উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে।

ডায়েটের ভালমন্দ

ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট, প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি, মিষ্টি, রিফাইন্ড খাবার বাদ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও তেলের পরিমাণও কমে বলে বুঝেশুনে খেলে ওজন যেমন কমে, ডায়াবিটিস–রক্তচাপ বশে থাকে৷

এই ডায়েট নিয়ম মেনে খেয়ে গেলে কমে ইসকিমিক হৃদরোগ ও স্ট্রোকের আশঙ্কা৷ সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে অ্যালঝাইমার ও কিছু ক্যানসার প্রতিরোধেও এর ভূমিকা আছে৷

তবে নিয়মিত এই ডায়েট খাওয়া বেশ কঠিন৷ ঘোর আমিষাশী থেকে দু’–এক মাসের মধ্যে একেবারে ভেগান হয়ে যাওয়া অত সহজ নয়৷ তার চেয়েও কঠিন ভেগান খাবার খেয়ে পুষ্টি বজায় রাখা, বিশেষ করে প্রোটিন ও ভিটামিন বি১২–র৷ তার উপর মাছ–মাংসের বদলে প্রচুর ফল ও সব্জি— বিশেষ করে যাতে সুগার ও স্টার্চের পরিমাণ বেশি আছে, তা খেতে শুরু করলে ওজনও ঠিকভাবে কমে না৷ কাজেই, বিশেষজ্ঞদের মতে, ইঞ্জিন ২ ডায়েটকে আপন করে নিতে চাইলে, কয়েকটি দিকে বিশেষ নজর দিন৷

প্রোটিনের ব্যাপারে কার্পণ্য করবেন না৷ মাংসের বদলে যা যা খাওয়ার কথা বলা আছে, তা নিয়মিত খান৷ স্টার্চি খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন৷ আমিষ খাবার খেলে ভিটামিন বি১২ নিয়ে খুব একটা ভাবনা থাকে না৷ এ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না বলে খান ফর্টিফায়েড খাবার বা সাপ্লিমেন্ট৷ মাছ বন্ধ৷ তাই পর্যাপ্ত ওমেগা থ্রি পেতে খেতে হবে বিভিন্ন ধরনের বীজ, বিশেষ করে তিষি ও চিয়া বীজ৷ দুধ ও দুধের খাবার বাদ বলে ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি–এর জোগান পেতে উদ্ভিজ্জ দুধের পাশাপাশি ফর্টিফায়েড খাবার বা সাপ্লিমেন্ট খান৷ খাবারের হিসেব বুঝতে অসুবিধা হলে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিন৷

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy