ঘরের আকর্যণ সেন্টার টেবল ছবি: দেবর্ষি সরকার
অন্দরে সেন্টার টেবল, বেডসাইড টেবল বা কর্নার টেবলের ভূমিকা হল অ্যাকসেসরিজ়ের মতো। সেন্টার টেবল যেহেতু সেই ঘরের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু, তাই তার সাজসজ্জাও গুরুত্বপূর্ণ। আবার কর্নার টেবল বা বেডসাইড টেবলের আয়তন সব সময়ে ছোট হওয়া উচিত। ঘরের ছোটখাটো খামতি ঢাকতে বা কিছু আড়াল করার প্রয়োজনে এদের জুড়ি নেই।
অধিকাংশ বাড়িতেই এখন স্পেস একটা বড় সমস্যা। চাইলেও কাঠের পেল্লায় টেবল ঘরের মধ্যমণি হিসেবে সাজিয়ে রাখা যায় না। এবং এই বস্তুটি যতই শোভা বাড়ানোর দায়িত্ব নিক, তার সঙ্গে উপযোগিতার দিকটিও বিশেষ ভাবে মাথায় রাখা জরুরি। তাই অনেক সেন্টার টেবলেই হিডেন ড্রয়ার থাকে, যাতে কম প্রয়োজনীয় জিনিস বা কোস্টার, ডয়েলি পেপার ইত্যাদি রাখা যায়। যাতে টেবলে কোনও কিছু সার্ভ করা হলে চট করে বার করা যায়। তবে টেবলের নীচে পুরনো খবরের কাগজ স্তূপ করে রাখবেন না, তাতে ঘরের শোভাই নষ্ট হবে। সেন্টার টেবল কোথায় বসানো হচ্ছে, সেটা নির্ভর করবে সোফা থ্রি-সিটার নাকি টু-সিটার। এর উপরে নির্ভর করবে টেবলের মাপও। টেবল ও সোফার সমানুপাত যথাযথ হওয়া জরুরি।
ইদানীং বহু বাড়িতে নেস্টিং টেবল রাখতে দেখা যায়, এতে যেমন জায়গা বাঁচে তেমনই বিভিন্ন রকম কাজেও ব্যবহার করা যায়। এ ধরনের টেবল একসঙ্গে দুটো বা তিনটের সেট হতে পারে। বড়টির নীচে ছোটগুলি রাখা থাকে, বাড়িতে বেশি অতিথি এলে দুটো টেবল বার করে নিতে পারেন।
টেবল টপ নানা রকমের হতে পারে এবং ইদানীং তাতে বহু বৈচিত্র এসেছে। যেমন, মার্বেল টপ দেখতে ভাল লাগে এবং পোক্ত হয়, তার উপরে মেটালের কাজ করা থাকলে দেখনদারি বাড়ে। অনিক্স মার্বেলের ফ্লোরাল টেবল টপ খুবই শৌখিন এবং দামও কিছুটা বেশি। অবশ্য মনে রাখা দরকার, লুকের উপরে যত গুরুত্ব দেবেন, প্রডাক্টের দামও বাড়বে। মেটালের পেন্টওয়ার্ক ও রেজ়িনে তৈরি কালো সেন্টার টেবলের জৌলুস তো নজরকাড়া। অনেক সময়ে টেবলে ব্রাস ইনলে-র কাজ থাকে। এ রকম একটি আসবাবেই ঘরের শোভা বাড়ে বহুগুণ। বেডসাইড টেবল বা কর্নার টেবলের জন্য এখন লেদারাইটের ব্যবহার বিশেষ চোখে পড়ে। কলকাতার এক নামী ইন্টিরিয়র স্টোরের অধিকর্তা নিকুঞ্জ কেডিয়া জানালেন, লেদারাইট হল আর্টিফিশিয়াল লেদার, যাকে পিইউ বলা হয়। কলকাতার গরম ও আর্দ্রতায় লেদার ব্যবহার করা না গেলেও লেদারাইট ব্যবহার করা যায়। তাঁর পরামর্শ, বাড়িতে জায়গার সমস্যা থাকলে হেক্সাগন শেপের টেবল বানানোর।
টেবলের সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে নিকুঞ্জ সবচেয়ে বেশি জোর দিলেন আর্টিফ্যাক্টের উপরে। তাঁর কথায়, ‘‘সব টেবলে অন্তত একটা করে আর্টিফ্যাক্ট রাখতে হবে। স্টাইলিং যথাযথ না হলে সাজ অসম্পূর্ণ লাগে।’’
আর্টিফ্যাক্ট হিসেবে সুন্দর ফুলদানি সাজিয়ে রাখা যাতে পারে। ভাস রাখলেই যে তাতে ফুল রাখতে হবে, এমন কিন্তু নয়। বাড়িতে যদি তিনটে ফুলদানি সাজিয়ে রাখেন, তা হলে একটাতেই ফুল সাজানো থাক, বাকি দুটোয় নয়। মার্বেল বা কাঠের বা ধাতব কোনও মূর্তি, ক্যান্ডল স্ট্যান্ড টেবলে সাজিয়ে রাখা যেতে পারে। রাখা যেতে পারে প্লান্টারও। এখন খুবই সুন্দর আর্টিফিশিয়াল প্লান্ট কিনতে পাওয়া যায়, যা দেখতে অবিকল আসলের মতো।
অন্দর যত দামি জিনিস দিয়ে সাজান না কেন, গোড়ার কথাটা কিন্তু ভুললে চলবে না— ঘরের পরিসরের নিরিখে আর্টিফ্যাক্ট কিনতে হবে। ঘরের আয়তনের সঙ্গে জিনিসের সামঞ্জস্য না থাকলে, টাকার অপচয় হবে, শোভা বাড়বে না।
লোকেশন: স্টুডিয়ো সেভেন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy