দক্ষিণ ভারতের বহু জায়গায় ফুল দিয়ে বাড়ি সাজানোর চল রয়েছে। সেখানে স্থানীয় মহিলাদের দৈনন্দিন সাজের দোসর মাথায় ফুল। বাড়ির সামনে ফুলের রঙ্গোলি দেওয়ার রীতিও আছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। বাঙালি বাড়িতেও ইদানীং ফুল দিয়ে সাজানো পাত্র, অন্দরসজ্জার বিশেষ চরিত্র হয়ে উঠছে।
রঙিন ফুল দিয়ে সাজানো জলভর্তি পাত্র শহুরে ইন্টিরিয়রে অনেক দিন ধরেই প্রাধান্য পাচ্ছে। তার প্রধান কারণ, ফুল সাজানোয় যে ধৈর্য ও একাগ্রতার প্রয়োজন হয়, তা মানসিক শক্তি বাড়ায়। ফুলের মিষ্টি সুবাস বাড়ির অন্দর ভরিয়ে রাখে। পাশাপাশি মানুষের মনেও পজ়িটিভিটি আনে। শহুরে জরাজীর্ণতায় ক্লান্ত মনে আরামের পরশ বুলিয়ে দেয় ফুলের লাবণ্য।
অতিমারির কারণে মাসের পর মাস গৃহবন্দি দশায় থাকার ফলে ফুল সাজানো থেরাপির মতো কাজ করেছে, বলছিলেন ডিজ়াইনার অভিষেক রায়। ভালবাসা ও ভাল লাগা থেকেই ফুলের রঙে ম্যাজিক তৈরি করেছেন তিনি। তার কয়েকটি ছবি এখানে তুলে ধরা হল। তবে এ ভাবে ফুল সাজানোর জন্য কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে—
• ফুল সাজানোর সবটাই কিন্তু ব্যক্তির রুচিবোধ ও শৈলীর উপরে। এর কোনও বাঁধাধরা নিয়ম নেই।
• মূলত কালার কো-অর্ডিনেশন বা কালার কনট্রাস্ট তৈরি করাই এই সাজানোর লক্ষ্য। তাতেই সাজের সৌন্দর্য বাড়ে।
• কোন ফুল জলে কতক্ষণ ভেসে থাকতে পারে, সেটা জেনে নিলে ভাল। সেই বুঝে ডিজ়াইন করতে পারবেন। সাজানোর জন্য কয়েকটি ফুলের স্বাভাবিক আকার বদলে নিতে হয় যেমন কাঠচাঁপা বা কাঠগোলাপ (ছবি ২, ৩)।
• পাত্রের উচ্চতা থেকে এক ইঞ্চি মতো জল কম রাখতে হবে। কানায় কানায় ভর্তি পাত্রে কখনও এ ভাবে ফুল সাজানো যাবে না।
• ফুলের বদলে শুধু পাতা দিয়েও সাজাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে একটু হলদে হয়ে যাওয়া পাতা বা বাদামি রঙের পাতা ব্যবহার করলে ভাল লাগবে।
• হোটেল বা সালঁয় ফুলের সঙ্গে ফ্লোটিং ক্যান্ডল দিয়েও সাজানো হয়ে থাকে। যদি সন্ধে বা রাতের আমেজ তৈরি করতে চান, তবে ক্যান্ডল ব্যবহার করতে পারেন।
• যে পাঁচটি ছবি এখানে প্রকাশিত, সেখানে ব্যবহৃত ফুলগুলি খুবই চেনা ও সহজলভ্য। ফলে প্রতিটি সাজেই তৈরি হয়েছে নিজস্বতা এবং স্বাভাবিকতা। মেকি সাজের পারিপাট্য এখানে নেই।
কুঁড়ির মতো: এখানে (ছবি ১) পাশাপাশি দু’টি পাত্রে একই উপকরণ দিয়ে সাজিয়েছেন অভিষেক। তবে একটি বিশেষ পার্থক্যের জন্য ডিজ়াইন পাল্টে গিয়েছে। ছোট ছবিটিতে রয়েছে মাধবীলতার কুঁড়ি ও নয়নতারা। দু’দিন জলে রাখার পরে কুঁড়ি থেকে মাধবীলতা প্রস্ফুটিত হয়। যার ফলে বড় ছবির সাজ খুব সুন্দর ভাবে পাল্টে গিয়েছে।
আলপনার মতো: এখানে (ছবি ২)জলভরা পাত্রটি আকারে বেশ ছোট। তার মধ্যে রয়েছে কাঠগোলাপ, কলকে আর মাধবীলতা। পাত্রটিকে ঘিরে রয়েছে কাঁঠাল পাতা আর কাঠগোলাপ পাতার বাহার। তার পরে আলপনা দেওয়ার মতো করে কলকে ও মাধবীলতা সাজানো হয়েছে। এই ডিজ়াইনে যে বর্ডার দেওয়ার মতো করে ফুল-পাতা সাজানো হয়েছে, সেটিও সাজটিকে ভিন্নতর মাত্রা দিয়েছে।
সই-পাতানো: খাটতে না চাইলে ও ছিমছাম সাজের জন্য এটি আদর্শ। এই ডিজ়াইনে (ছবি ৩) কাঠগোলাপ ও কলকে যেন পরস্পরের হাত ধরে রয়েছে। সাদা কাঠগোলাপের হলুদ রেণু ও কলকের হলুদ বর্ণ, চোখের আরামও বটে।
নেশা-জাগানো: এই ডিজ়াইনে (ছবি ৪) ব্যবহার করা হয়েছে পিটুনিয়া ও মর্নিং গ্লোরি। রাতের সাজে দু’টি ফুল ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বল নীল ও বেগুনি রঙে রাতের মাদকতা রয়েছে।
আগুনরঙা: একটি জবা, একগুচ্ছ রঙ্গন ও জবা পাতা দিয়ে এই সাজ (ছবি ৫) প্রাণ পেয়েছে। রঙের খেলা তো একেই বলে!
শিউলি ফুল দিয়ে অনেকেই হয়তো দুর্গাপুজোর কয়েক দিন বাড়ির একটি কোণ সাজান। এ বার সেই তালিকাটি একটু বড় করে নিন। অতিমারির বছরে পুজোর আমেজ তৈরি হোক বাড়ির অন্দরেই।
ফুলের সাজ ও ছবি সৌজন্য: ডিজ়াইনার অভিষেক রায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy