হলুদ মেশানো দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ছবি: শাটারস্টক।
করোনা-আক্রান্ত সময়ে আয়ুর্বেদ মেনে অনেকেই হলুদ মেশানো দুধ খাওয়া শুরু করেছেন। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে বলেই দাবি করে এসেছেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় আয়ুষ মন্ত্রকও রোগের হানা প্রতিহত করতে এই হলুদ মেশানো দুধের কথা তাদের নির্দেশাবলিতে বলেছে।
‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ২০১১-য় সিডনি, স্যান ফ্রান্সিসকো ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ক্যাফেতে দুধের সঙ্গে হলুদ, আমন্ড ও কাজু মিশিয়ে বানানো ‘টারমারিক লাতে’ ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। এখনও আছে। ঘরেও তাঁরা হলুদ মেশানো-দুধ বা গোল্ডেন মিল্ক খান নিয়মিত।
হলুদ, আদা, গোলমরিচ, দারচিনি ও মধু বা ম্যাপল সিরাপ দিয়ে বানিয়েও এই পানীয়টি খাওয়া যায়। আবার শুধু হলুদ ও মধু মিশিয়ে খাওয়ারও চল আছে। কোভিডের সময় তো বটেই, তার পরবর্তী সময়েও এই হলুদ মেশানো দুধ শরীরের অনেকটা উপকার করবে।
আরও পড়ুন: সামাজিক দূরত্ব সত্ত্বেও যোগাযোগ রাখুন প্রিয়জনের সঙ্গে, মেনে চলুন কয়েকটা নিয়ম
হলুদ মেশানো-দুধের গুণ
• এই দুধের প্রদান উপাদান হলুদে যে কারকিউমিন আছে সেটিই হল আসল। কয়েক হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদিক ওষুধের অনুপান হিসেবে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের গুণ থাকার কারণে শরীরের সমস্ত কোষকে নানা রকম ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে সে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা যেমন কমে, সংক্রমণ হলে তা সারেও সহজে। কমে যে কোনও ক্রনিক রোগের আশঙ্কা। দারুচিনি ও আদারও এই গুণ আছে। ফলে তিনটি মিশিয়ে খেলে আরও ভাল কাজ হয়। দুধ আর গোলমরিচ দুই-ই শরীরে কারকিউমিনের শোষণের হার বাড়ায়। তা ছাড়া তাদের নিজস্ব উপকার তো আছেই।
• হলুদ-দুধ শরীরে অহেতুক প্রদাহের প্রদাহের প্রবণতা কমায়। ফলে হৃদরোগ, ডায়াবিটিস, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, আর্থ্রাইটিস, অ্যালঝাইমার্স এমনকি ক্যানসারের আশঙ্কা ও প্রকোপও কম থাকে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, ওষুধ খেলে যতটা প্রদাহ কমে, নিয়মিত কারকিউমিন খেলেও কমে সেই মাত্রাতেই। ৪৫ জন রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীকে দিনে ৫০০ মিলিগ্রা কারকিউমিন খাইয়ে দেখা যায়, ওষুধ না খাওয়া সত্ত্বেও তাঁদের ব্যথা কম থাকছে। ২৪৭ জন অস্টিওআর্থ্রাইটিসের রোগীকে কারকিউমিন খাইয়ে ৬ সপ্তাহ স্টাডি করে দেখা যায়, তাঁদের ব্যথার ওষুধের প্রয়োজন কমেছে।
• নিয়মিত হলুদ মেশানো-দুধ খেলে কারকিউমিনের প্রভাবে ‘বিডিএনএফ’ নামে এক রাসায়নিকের পরিমাণ বাড়ে শরীরে। যার হাত ধরে কমে অ্যালঝাইমার্সের প্রকোপ। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে। আবার পশুদের উপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, দারচিনি খেলে মস্তিষ্কে টাউ প্রোটিনের পরিমাণ কমে ও অ্যালঝাইমার্সের উপকার হয়।
আরও পড়ুন: আমপান উড়িয়ে নিয়ে যাবে করোনাভাইরাসকে? বিজ্ঞানীরা বলছেন...
• বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রমাণিত, হলুদ মোশানো দুধ হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাঁদের রোজ ১২০ মিলিগ্রা দারচিনি পাউডার খাইয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁদের রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমেছে, বেড়েছে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা। ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও কমেছে।
• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি জীবাণু সংক্রমণ ঠেকাতেও এই হলুদ দুধের কিছু ভূমিকার রয়েছে।
• দুধে আছে অঢেল প্রোটিন। স্বাস্থ্য ভাল রাখতে নিয়মিত খেতে পারলে ভাল। তা ছাড়া আছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, হাড়-পেশির সুস্থতা বজায় রাখতে যার বিরাট ভূমিকা অনেক।
কী ভাবে বানাবেন
সাধারণ মাপের এক গ্লাস দুধ নিন। গরুর দুধ সহ্য না হলে আমন্ড বা সোয়াবিনের দুধ নিতে পারেন। তাতে মেশান এক চা-চামচ হলুদ বাটা, অল্প কিছুটা আদা কুচি, আধ চা-চামচ দারচিনির গুঁড়ো, এক চিমটে গোলমরিচ গুঁড়ো। ফুটতে শুরু করার পর আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ফোটান। নামিয়ে ছেঁকে নিন। মিষ্টি স্বাদ চাইলে এতে মধু বা ম্যাপল সিরাপ মেশান। তবে ওজন বাড়ার ভয় থাকলে অল্প মধু মেশান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy