Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Face Lift

তারুণ্য বন্দি ফেস লিফ্ট-এ

চেহারায় বয়সের ছাপ চমকপ্রদ ভাবে মুছে দেয় ফেস লিফ্্ট। অস্ত্রোপচার ছাড়াও কিন্তু এই কসমেটিক ট্রিটমেন্ট সম্ভবসার্জারি ছাড়া বাড়িতে কিছু সরঞ্জামের সাহায্যে খানিকটা ফেস লিফ্ট করাই যায়। 

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০১:২২
Share: Save:

সেফ আলি খানের বলিরেখা ছিল স্পষ্ট ‘রেস’ ছবিতে। কিন্তু করিনার সঙ্গে বিয়ের পরের ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর মুখের ভাঁজ অনেকটাই গায়েব। তখন প্রায়ই ‘ইয়ুথফুল’ ছবি তুলছিলেন সারা-ইব্রাহিমের ড্যাডি কুল। শোনা যায়, বয়সের ছাপ রুখতে ফেস লিফ্ট, বোটক্স করিয়েছিলেন তিনি। এই ফেস লিফ্ট আর বোটক্সের জাদুতেই ‘থ্রি ইডিয়টস’-এ কলেজ ছাত্রের চরিত্রে মানিয়ে গিয়েছিলেন আমির খান। বয়সের চাকা ধীরে ঘোরাতে তারকারা প্লাস্টিক সার্জারি, লেজ়ার, ফিলারস প্রভৃতি ‘অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট’-এর সাহায্য নেন। এই কসমেটিক সার্জারিগুলিরই অন্যতম ফেস লিফ্ট। এই পদ্ধতিতে চোখ-মুখের ঝুলে যাওয়া চামড়াকে টানটান করে দেওয়া হয়। দেখলে মনে হয়, নিখুঁত মসৃণ মুখ। দেশ-বিদেশের তারকারা তো বটেই, সাধারণ মানুষও এই ট্রিটমেন্টটি পছন্দ করেন। কারণ, অন্য ট্রিটমেন্টগুলির তুলনায় এটি সহজ, সময় কম লাগে। সাফল্যের হারও বেশি। তবে গুরুত্বপূর্ণ হল, সার্জারি ছাড়া বাড়িতে কিছু সরঞ্জামের সাহায্যে খানিকটা ফেস লিফ্ট করাই যায়।

অস্ত্রোপচার করালে

চিকিৎসাশাস্ত্রে ফেস লিফ্ট-কে ‘রাইটিডেকটমি’ বলা হয়। এতে গালের ভাঁজ, থুতনির ঝোলা ভাব, চোখের কুঞ্চন মেরামত করা যায়। সাধারণত, শল্যচিকিৎসক হেয়ারলাইন বরাবর, কানের পিছনে, মুখে, চিবুকে কতগুলি ছিদ্র করেন। তার মধ্য দিয়ে ত্বক টেনে তুলে, বাড়তি মেদ বার করে দেন। নীচের পরতটি মেরামত করে মুখের কাঠামো তরুণদের মতো করে দেন। তার পর টানটান করে স্কিন স্টিচ। ফেস লিফ্টের সঙ্গে নেক লিফ্টও করা হয়। এই চিকিৎসায় চেহারায় বিরাট পরিবর্তন আসে। এক বার চিকিৎসা করালে প্রভাব থাকে দশ বছর। তার পর আবার ধীরে ধীরে চামড়া শিথিল হতে শুরু করে। তা ছাড়া, চিকিৎসার পর কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

ব্রাশ তুলিতে ম্যাজিক

• মেকআপ-এ ‘কনটুর কারেকশন’ করে ফেস লিফ্টিং এফেক্ট আনা যায়। সিল্কি ফাউন্ডেশন বা পাউডার নিয়ে কানের লতি থেকে ঠোঁট পর্যন্ত, গালের হাড় বরাবর লাইন টানুন। ব্রাশ দিয়ে সেটা উপর দিকে মিলিয়ে নিন। তার উপর মেটালিক ব্লাশ অন লাগান। চিকবোন প্রকট দেখাবে। ম্যাট ফিনিশ আইশ্যাডোয় চোখের মেকআপ করলেও গোটা মুখে চট করে লিফ্টিংয়ের ম্যাজিক করা যায়

নন-সার্জিকাল পদ্ধতি

ডার্মাল ফিলার বা ইঞ্জেকশনের সাহায্যে ফেস লিফ্ট সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ত্বকের কোথাও চামড়া আলগা হয়ে গেলে, তার ভিতরটা ইঞ্জেকশন দিয়ে ভরাট করা হয়। ত্বক আবার টানটান দেখায়। আল্ট্রাথেরাপি-র মাধ্যমেও ফেস টোনিং ও লিফ্টিং করা হয়। আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে দেখে নেওয়া হয়, ত্বকের কোন স্তর বা কোষ ক্ষতিগ্রস্ত। সেই অংশে নতুন কোলাজেন তৈরি করে দেওয়া হয়।

মাইক্রো কারেন্ট টোনিংয়ের ক্ষেত্রে মুখের ৩২টি পেশিকে টানটান করা হয়। এতে ত্বকে কোলাজেন ও ইলাস্টিন তৈরির হার বাড়ে। আধুনিকতম লিফ্টিং পদ্ধতি হল ক্রায়ো লিফ্ট। ত্বকের ছিদ্রগুলো রাসায়নিক দিয়ে ঢেকে ত্বকের রক্ত চলাচল বাড়ানো হয়।

নিজে ফেস লিফ্ট

• যন্ত্র: ক্লিনিকগুলিতে মাইক্রো-কারেন্ট ডিভাইস পাওয়া যায়। রোজ পাঁচ মিনিটের ব্যবহারেই ত্বকের ভাঁজগুলি মেলাতে শুরু করে। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সন্দীপন ধর বললেন, ‘‘এগুলি সারফেস রিকনটুরিংয়ে সাহায্য করে। মুখে ব্রণর দাগ, ছোট গর্ত, উঁচুনিচু জায়গা থাকলে সমান করে দেয়। আগের মতো মসৃণতা ফিরে আসে।’’

• জেল টিউব: ইঞ্জেকশনের মতো দেখতে জেলের টিউব পাওয়া যায়। এগুলি চোখে, ঠোঁটে, কপালে লাগালে ওই অংশের ত্বক পুনরুজ্জীবিত হয়। পরে শিয়া বাটার ও হোহোবার ময়শ্চারাইজ়ার মাখলে ত্বক কোমল হয়।

• স্কিন লিফ্্টার টেপ: এখন অনলাইনে ও স্কিন কেয়ার ক্লিনিকে স্কিন লিফ্টিংয়ের জন্য ভি আকৃতির টেপ বা পাতলা পাত অথবা ব্যান্ডেজ মেলে। এগুলি কান থেকে ঝুলিয়ে গাল ও চিবুক বরাবর আধ ঘণ্টা বেঁধে বসে থাকতে হয়। এটি ত্বককে খানিকক্ষণ টেনে তুলে রাখে। পরে সঙ্গে দেওয়া সিরাম মুখে আলতো মাসাজ করতে হয়। এই বিশেষ পাত বা মাস্ক ফেস লিফ্টিং ছাড়াও মুখের আকৃতি পাতলা রাখে। ডাবল চিন কমায়। মাস্কগুলির মধ্যে গ্লিসারল, সোডিয়াম পলিঅ্যাক্রিলেট, টার্টারিক অ্যাসিড থাকে। ত্বক এগুলি শোষণ করে, পেশির দৃঢ়তা, নমনীয়তা বাড়ে।

কিছু অ্যান্টি এজিং কসমেটিকস সম্ভারে সেলুলার লিফ্টিং সিরাম ও সফ্ট ক্রিম মেলে। এগুলি ত্বকের কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে। এতে কিছু ‘অ্যালগি’ থাকে, যা চামড়া ঝুলে যেতে দেয় না। তবে এগুলি করার আগে বিশদে জেনে নিন, যাতে হিতে বিপরীত না হয়।

বাড়িতে তৈরি মাস্ক

২ বড় চামচ ময়শ্চারাইজ়ারের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ, থেঁতো করা হলুদ সামান্য, এক চা চামচ মধু মেশান। ওই লেই মুখে (চোখ বাদে) মেখে ২০ মিনিট শুয়ে থাকুন। পরে ঈষদুষ্ণ জলে মুখ মুছে নিন। ডিমের সাদা অংশ চামড়া শক্ত রাখে। হলুদ আর মধু মুখে ভরাট ঔজ্জ্বল্য আনে।

অস্ত্রোপচারের মতো দ্রুত আর চমকপ্রদ ফল না পেলেও এই সব নিরাপদ উপায়ে কিছুটা কাজ হবে। ত্বকের দৈনন্দিন যত্নের পাশাপাশি এই ধরনের হোম কেয়ার লিফ্টিংয়ের রুটিন মেনে দেখুন। সময়ের সঙ্গে তারুণ্যের ‘রেস’-টা আপনিই জিতবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Face Lift Cosmetic Treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy