চেয়ার যোগ – কনশাস ব্রিদিং বা সচেতন হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ। অলঙ্করণ:শৌভিক দেবনাথ
চেয়ার যোগ—কনশাস ব্রিদিং বা সচেতন হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ, পর্ব -১
জীবনের স্বাভাবিক নিয়মে আমরা শ্বাসপ্রশ্বাস নিই। বেঁচে থাকার প্রাথমিক শর্ত নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাস। সমস্ত প্রাণী জগৎ শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। বিশ্বের সব থেকে উন্নত প্রাণী মানুষের চিন্তা ভাবনা ও মানসিক শক্তি বাড়ানোর এক অন্যতম উপায় সচেতন হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ। এই যোগাসন অভ্যাস করলে শরীরের প্রতিটি কোষ উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। বিশেষত মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কী ভাবে করব
মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা ও ঘাড় একই সরলরেখায় রেখে মাটিতে পা দিয়ে চেয়ারে বসুন। হেলান দেবেন না। দু’হাত রাখুন কোলের ওপর আরামদায়ক ভাবে। ইচ্ছে হলে কোমরের পেছন দিকে একটা কুশন রাখতে পারেন। এ বার চোখ বন্ধ করে সমস্ত শরীর রিল্যাক্স করুন। এই ভাবে কয়েক মিনিট স্থির হয়ে বসুন। তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি করতে হবে ধীরেসুস্থে।
• এ বার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে শ্বাস প্রশ্বাসের দিকে লক্ষ করুন। মনে রাখবেন মুখ দিয়ে নয় নাক দিয়েই শ্বাস নেবেন ও ছাড়বেন। এই অবস্থানে শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করার দরকার নেই।
• কোনও রকম স্ট্রেস না নিয়ে ও টেনশন না করে স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসের গতিবিধির উপর খেয়াল রাখতে হবে। মন স্থির রাখার চেষ্টা করুন। অবশ্য এতো সহজে মন স্থির করা সম্ভব নয়। তবে এই নিয়ে চিন্তা না করে চেষ্টা করুন শুধুমাত্র শ্বাসপ্রশ্বাসের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার।
•এ বারে মনে মনে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস গুনতে শুরু করুন।একবার শ্বাস টেনে মনে মনে ১ গুনুন ও ছেড়ে এক গুনুন। এই ভাবে ১৫ টি শ্বাস গুনতে হবে।
• পনের বার শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া গোনার পর চোখ বন্ধ করে চুপ করে বসে মানসিক শান্তি ও স্থিতি অনুভব করুন। কয়েক সেকেন্ড এই অনুভূতি কনশাস ব্রিদিং স্টেজ ওয়ানের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
আরও পড়ুন: ৭৮তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব ?
শ্বাস প্রশ্বাস প্রত্যেক প্রাণীর জন্মগত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ সঠিক ভাবে শ্বাস নেন না। ওপর ওপর খানিকটা শ্বাস নিয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। ফুসফুসের কার্যক্ষমতার অল্প অংশ ব্যবহার করেন। তাই শরীরের প্রত্যেক কোষে কোষের পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। যদিও স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস অবচেতন ভাবেই আমরা নিই, তাই ব্যাপারটা নিয়ে বিশেষ ভাবনার কোনও অবকাশ নেই। কিন্তু সচেতন ভাবে শ্বাস প্রশ্বাসের এই আসন অভ্যাস করলে অবচেতন ও সচেতনতার মধ্যে এক সেতুবন্ধন তৈরি হয়। আর এর ফলে আমাদের একদিকে মানসিক স্থিতি, ধৈর্য্য ও সৃষ্টিশীলতা বাড়ে অন্যদিকে রাগ, দুঃখ, হিংসে, ভয় ও টেনশন মন থেকে চলে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy