Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
coronavirus in india

কবে বেরবে করোনার টিকা, ওষুধ? এখনও অন্ধকারে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা

কোভিড ১৯কে চিনে বুঝে ওঠার পর্যপ্ত সময় পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত। তাই কবে এর সংক্রমণ সামলে ওঠা সম্ভব হবে তা নিয়ে এখনই কোনও পূর্বাভাসে রাজি নন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

করোনার হাত থেকে মুক্তি মিলবে কত দিনে? ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।

করোনার হাত থেকে মুক্তি মিলবে কত দিনে? ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ১১:৫৮
Share: Save:

কবে বেরবে করোনাভাইরাসের টিকা বা ওষুধ? যাতে আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যায় রাশ টানা সম্ভব হবে। কবেই বা ভারত-সহ গোটা বিশ্বে নির্মূল করা যাবে এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসকে? বিজ্ঞানী, ভাইরোলজিস্ট ও চিকিৎসকদের একাংশ এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত একেবারেই রয়েছেন অন্ধকারে। কারণ, তাঁদের হাতে এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাস সম্পর্কে তেমন পর্যাপ্ত তথ্যাদি নেই, যার ভিত্তিতে তাঁরা আমাদের এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার দিনক্ষণ জানাতে পারেন।

বিজ্ঞানী ও ভাইরোলজিস্টদের একাংশ বলছেন, সমস্যা সামলে উঠতে আরও ৯/১০ মাস লাগতে পারে। আবার তা গড়িয়ে যেতে পারে এক থেকে দেড় বছরেও। কারণ, কোনও ভাইরাসকে বুঝে উঠে কোনও সফল ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার করতে ও বাজারে আনতে যতটা সময় লাগে, করোনা এখনও আমাদের সেই সময় বা সুযোগ কোনওটাই দেয়নি। যদি ধরে নেওয়া যায় ডিসেম্বরের শেষাশেষি এসেছে এই নতুন ভয়ঙ্কর ভাইরাস, তা হলে তাকে চেনা-বোঝার জন্য মাত্র তিন মাস সময় মিলেছে। যা কোনও ভাইরাসকেই বুঝে ওঠার পক্ষে পর্যাপ্ত নয়। করোনার ক্ষেত্রে সমস্যাটা আরও বেশি। কারণ, এই ভাইরাস খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুব দ্রুত নিজেদের জিনসজ্জা ও আচার, আচরণ ইতিমধ্যেই বহু বার বদলে ফেলেছে। ফলে, তাদের বুঝে ওঠার কাজটা আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে।

ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী বলছেন, ‘‘এই সঙ্কটের জন্ম হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, যদি ১০০ জন রোগীর ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গগুলি পাওয়া গিয়ে থাকে, তা হলে বাড়তি আরও অন্তত ১২০/১৩০ জন এমন মানুষ আছেন, যাঁদের মধ্যে জীবাণু থাকা সত্ত্বেও রোগের উপসর্গ প্রকাশ পাবে না। এর মধ্যে অল্প কিছু সংখ্যক পরবর্তী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে কোভিড ১৯-এর রোগী হয়ে পড়বেন। এই দ্বিতীয় দফার রোগী এবং যাঁরা এখনও উপসর্গহীন হয়ে আছেন, তাঁরা সবাই মিলে পরবর্তী সময়ে সমাজে আরও বহু মানুষের মধ্যে জীবাণু ছড়াতে সাহায্য় করবেন।’’

আরও পড়ুন: করোনার জেরে মিলছে না শিশুর অন্য রোগের ভ্যাকসিন! কী বিপদ ধাওয়া করছে এর পর?

শুধু তাই নয়, কোনও রোগীর দেহে থাকা করোনাভাইরাসের এই ইনকিউবেশন পর্ব ঠিক কত দিনের হবে, সেটাও নিখুঁত ভাবে বলা যায় না। সেটা এক রোগী থেকে অন্য রোগীকে বদলে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই রোগী কোন দেশে কী সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থায় রয়েছেন, সেই দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব কতটা, গড় তাপমাত্রা কতটা, কেমন সেই দেশের জলবায়ু, তার উপর নির্ভর করেও বদলে যেতে পারে বিভিন্ন রোগীর দেহে থাকা করোনাভাইরাসের ইনকিউবেশনের মেয়াদ। কারও ক্ষেত্রে সেই মেয়াদ ২ থেকে ৪ দিন হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে হতে পারে ৭ বা ১৫ দিন। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে তা এক মাসও হতে পারে। তার মানে, কারও কারও ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গগুলি এক মাস পরেও দেখা যেতে পারে।

কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক সুশ্রুত বন্দ্যোপাধ্যায়ও মনে করেন, ‘‘করোনা সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার দিনক্ষণের পূর্বাভাস দেওয়াটা এখন মুর্খামি হবে। টিকা, নতুন ওষুধ বা চালু আন্টিভাইরাল ড্রাগগুলি দিয়ে ‘এটা না হলে ওটা’ পদ্ধতিতে এখন নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। কিন্তু সেগুলির কোনওটাই করোনা আক্রান্তকে পুরোপরি সারিয়ে তুলতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।’’

আরও পড়ুন: মোবাইলেও ঘাপটি মেরে থাকে করোনাভাইরাস, কী ভাবে ব্যবহার করলে দূরে থাকবে অসুখ?

কেন? চিনে এমন বহু রোগী মিলেছে, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে উঠে যাঁরা দ্বিতীয় বার কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। আর সেই সংখ্যাটা খুব কম নয়।

অমিতাভ জানাচ্ছেন, ওই ওষুধগুলি বানানো হয়েছে এক-একটি ভাইরাসের জৈবিক দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে আঘাত করার জন্য। সেই কৌশল করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও যে পুরোপুরি কাজ করবে কি না, তা জানার জন্য আমাদের যতটা সময়ের প্রয়োজন, কোভিড- ১৯ এখনও আমাদের তা দেয়নি।

তবে অমিতাভ ও সুশ্রুত দু’জনেই মনে করেন, সভ্যতা করোনার আচমকা আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়লেও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে না। মানুষের স্বাভাবিক অভিযোজন ক্ষমতার জন্যই সেটা সম্ভব হবে। তবে সেটা কত দিনে তার পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানী, ভাইরোলজিস্ট ও চিকিৎসকদের একাংশ।

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus in india amitabha nandi vaccine corona drugs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy