Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Fitness

রোগ থাকবে দূরে, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোন ব্যায়াম করতে হবে, কোনটা নয়

শরীর বুঝে ব্যায়াম করুন। যতটুকু করলে শরীর ঝরঝরে লাগে, মন ভাল হয়, কাজে মন বসে, অভ্যাস ঠিক ততটুকুই।

নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে শ্বেতকণিকার সংখ্যা বাড়ে অর্থাৎ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে। ছবি: শাটারস্টক

নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে শ্বেতকণিকার সংখ্যা বাড়ে অর্থাৎ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে। ছবি: শাটারস্টক

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০৯:৩১
Share: Save:

শরীরচর্চা প্রচুর পরিমাণে করার দরকার নেই। অভ্যাস না থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আবার একেবারে না করলেও সমস্যা। কাজেই শরীর বুঝে ব্যায়াম করুন। যতটুকু করলে শরীর ঝরঝরে লাগে, মন ভাল হয়, কাজে মন বসে, করুন ঠিক ততটুকু। তাতেই শরীর সুস্থ থাকবে। বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

এই প্রসঙ্গে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মৌলিমাধব ঘটক জানিয়েছেন, "মাঝারি ব্যায়ামে শরীরে যে সমস্ত পরিবর্তন হয়, তার হাত ধরে সবল হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে।"

ব্যায়ামে বাড়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা

• সংক্রমণ হলে যেমন 'ইমিউন সিস্টেম' শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে জীবাণুর বংশবিস্তার থামানোর চেষ্টা করে, ঠিক সেইভাবেই ব্যায়াম করলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় বলে জীবাণুর বাড়বাড়ন্ত হতে পারে না খুব একটা।

• নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে শ্বেতকণিকার সংখ্যা বাড়ে অর্থাৎ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে। ফলে চট করে সংক্রমণ হয় না।

• ব্যায়ামে বাড়ে বিপাক ক্রিয়ার হার। তার হাত ধরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি যেমন বাড়ে, ওজন বশে থাকে বলেও সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়।

• ব্যায়াম করলে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুততর হয়। তাজা বাতাস জীবাণুদের বার করে দিতে সাহায্য করে। কাজেই যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাঁদের চট করে সর্দি কাশি ও শ্বাসনালীর সংক্রমণ হয় না।

আরও পড়ুন: বাইরে বেরলেও কমেনি ঝুঁকি, ‘নিউ নর্ম্যাল’-জীবনে কী করবেন, কী করবেন না​

ব্যায়ামে কমে কোভিডের ঝুঁকি

কোভিডের কো-মর্বিডিটি কমাতেও কাজে আসে ব্যায়াম। যেমন-

• ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

• কমায় উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবিটিস-কোলেস্টেরলের আশঙ্কা ও প্রকোপ।

• হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়।

• কমায় হৃদরোগের আশঙ্কা ও প্রকোপ।

• রক্তবাহী শিরা-ধমনী সুস্থ থাকার সুবাদে স্ট্রোকের আশঙ্কাও কম থাকে।

• নিয়মিত ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা সামলানো সহজ হয়।

করোনা আবহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শরীরচর্চায় জোর দিন। ছবি: শাটারস্টক

কোন ব্যায়াম, কীভাবে

রিউম্যাটোলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থ দাস জানিয়েছেন, “বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও আমেরিকান কলেজ অব স্পোর্টস মেডিসিনের মতে ১৮-৬৪ বছর বয়স্ক সুস্থ মানুষের উচিত সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি বা ৭৫ মিনিট জোর গতিতে অ্যারোবিক ব্যায়াম করা। এর সঙ্গে নমনীয়তা বাড়ানোর ব্যায়াম ও সপ্তাহে ২-৩ দিন পেশির শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করলে সব দিক বজায় থাকে।”

কখন কোন ব্যায়াম কীভাবে করতে হবে সে ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন পার্থ দাস। আসুন দেখে নেওয়া যাক।

• অ্যারোবিক এক্সারসাইজ বলতে হাঁটা, জগিং, সাঁতার, সাইকেল চালানো, নাচ ইত্যাদিকে বোঝায়। অর্থাৎ যে ব্যায়ামে হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ে, বাড়ে হার্ট রেট। টানা ২০-৩০ মিনিট করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। না পারলে সকালে ২০ মিনিট ও বিকেলে ২০ মিনিট। এমন গতিতে করবেন যাতে হাঁপিয়ে হলেও দু-চারটে কথা বলা যায়, কিন্তু গান গাওয়া যায় না। তবে তার আগে হাঁটু-কোমর-গোড়ালির অবস্থা ও হৃদযন্ত্র-ফুসফুসের কার্যক্ষমতা দেখে নেবেন। হাঁটা বা জগিংয়ের সময় পরে নেবেন সঠিক জুতো। না হলে চোট লেগে যেতে পারে।

• শরীরের নমনীয়তা বাড়াতে যোগা-র বিকল্প নেই। হালকা স্ট্রেচিংয়েও কাজ হয়।

• হাড় ও পেশি সবল করার ব্যায়াম দু-ভাবে করা যায়, ওজন নিয়ে বা শরীরের ওজনকে ব্যবহার করে, যাকে বলে বডি ওয়েট ট্রেনিং। এর মধ্যে বিভিন্ন রকম স্কোয়াট আছে, আছে লেগ রাইজিং, প্ল্যাঙ্ক, পুশ-আপ ইত্যাদি। তবে বয়স্ক বা ক্রনিক অসুখ আছে বা ফিটনেস কম বা হাঁটু-কোমর ব্যাথা আছে, এমন মানুষের আচমকা না করাই ভাল।

আরও পড়ুন: হৃদস্পন্দন হয় স্বাভাবিক, মিউজিক থেরাপির দাওয়াই করোনা নিভৃতবাসেও​

• এছাড়া আছে নিউরোমোটর স্কিল ট্রেনিং বা ব্যালান্স ট্রেনিং। এগুলি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধান ছাড়া করা ঠিক নয়।

ব্যায়াম অভ্যাসের আগে পরামর্শ নিন ফিটনেস বিশারদের। ফাইল ছবি।

• ইদানিং কয়েকটি নতুন ধরনের ব্যায়ামের ধারা চালু হয়েছে, যাতে সুরের তালে তালে অ্যারোবিক্সের সঙ্গে স্ট্রেচিং, ব্যালান্সিং, স্ট্রেন্থ ট্রেনিং, সব হয়ে যায়। সে রকমই একটি হল টাবাটা। বয়স কম হলে, ফিটনেস ভাল থাকলে শিখে নিয়ে করতে পারেন।

• জুম্বাও করা যায়। তবে বয়স কম ও ফিটনেস বেশি থাকলে তবেই।

• নাচ খুব ভাল ব্যায়াম। এতে শরীর যেমন ভাল থাকে, ভাল থাকে মনও।

• এর পাশাপাশি দিনের বেশির ভাগ সময় সচল থাকার চেষ্টা করুন। এক জায়গায় টানা বসে থাকার অভ্যাস হলে ব্যায়ামের ফল সেভাবে পাবেন না।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy