সিমা গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে ‘আর্ট মেলা’। প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের পাশাপাশি থাকবে তরুণদের কাজও। ছবি: সংগৃহীত
গ্যালারি, সংগ্রহশালার দেওয়ালে প্রিয় শিল্পীর কাজ দেখতে ভাল লাগে। সে সবের টানে দূরের শহর, আরও দূরের দেশেও পাড়ি দেন অনেকে।
কিন্তু শিল্প মানেই দূরের নয়। কাছে টেনে আনা যায়। ইচ্ছা থাকলে সাধারণের ঘরে, অফিসেও জায়গা পেতে পারে প্রতিষ্ঠিত কোনও শিল্পীর কাজ। রোজের জীবনে আনা যায় শৈল্পিক ছোঁয়া। আর সে ইচ্ছা উস্কে দিতে পাশে আছে সিমা গ্যালারি।
শিল্পকর্ম দূর থেকে দেখতে ভাল লাগলেও, এত দিন তা কেনার স্বপ্ন বিশেষ দেখতেন না সাধারণ মধ্যবিত্ত। তার কারণ অনেক কিছুই হতে পারে। তবে সবের মূলে ছিল মূল্য। কোনও প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর করা পেন্টিং, ড্রয়িং বা ভাস্কর্যের যা দাম হয়, তা অনেক সময়েই সাধারণ চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীর নাগালের বাইরে। তাই মধ্যবিত্ত বাঙালির ঘর সাজানোর জিনিসের তালিকায় এ ধরনের কিছু থাকে না। উপহার বিনিময়েও শিল্পকর্ম বিশেষ জায়গা পায়নি এতদিন।
কিন্তু সময় বদলেছে। শিল্প নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। তরুণরা প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের আঁকা, ভাস্কর্যের মতো জিনিস ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখতে উৎসাহী হচ্ছেন। আর তাঁদের উৎসাহ জোগাতেই এগিয়ে এসেছে সিমা গ্যালারি। আবার আয়োজন করেছে ‘আর্ট মেলা’-র। নভেম্বরের ২৫ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার এই গ্যালারিতে গিয়ে ঘুরে দেখা যাবে মেলা। চলবে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
২০০৮ সালে প্রথম শুরু হয় ‘আর্ট মেলা’। সাধারণের নাগালে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের কাজ নিয়ে আসাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। এবং বছর বছর তা পূরণও হয়েছে। অতিমারির কারণে মাঝে অনেক দিনই এই মেলার আয়োজন করা যায়নি। তিন বছর পর ফের ‘আর্ট মেলা’ করতে পেরে উৎসাহী গ্যালারি কর্তৃপক্ষও। সিমার অধিকর্তা রাখী সরকার আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, এত দিন পর আবার এই মেলা করা হচ্ছে বলে আরও বেশি যত্নে সাজানো হয়েছে গ্যালারি। তিনি বলেন, ‘‘তরুণ সংগ্রহকরা আসুক। নিজেদের সাধ্যমতো পেন্টিং, ড্রয়িং, স্কেচ কিনে নিয়ে যাক। এটিই সব সময়ে আমাদের এই মেলা করার মূল উদ্দেশ্য থেকেছে।’’
‘আর্ট মেলা’-এ এ বারও থাকছে যোগেন চৌধুরী, রমানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, লালুপ্রসাদ সাউ, পরেশ মাইতি, বিমল কুণ্ডু, শাকিলা, পার্থপ্রতিম দেব, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো অতি পরিচিত শিল্পীদের পাশাপাশি তরুণ শিল্পীদের কাজ। অধিকর্তা জানান, প্রতি বারই তরুণ শিল্পীদের কাজ এই মেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। এ বছরের মেলায় যে নবীনদের শিল্পকর্ম রাখা হয়েছে, তাঁরা সকলে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন। সিমা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা যেমন আছেন তালিকায়, তেমনই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের পুরস্কার পাওয়া শিল্পীদের কাজও রয়েছে।
গ্যালারির তরফে জানানো হয়, তরুণ সমাজের হাতের নাগালে শিল্পীদের কাজ নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট দাম কমিয়েই রাখা হয় এই মেলায়। নামী শিল্পীরাও এ সময়ে নিজেদের কাজ অনেক কম দামে দিয়ে দেন। গ্যালারির অধিকর্তা জানান, এ বছর ৫০০ টাকার পেন্টিং, ছবিও পাওয়া যাবে মেলায়। তিনি বলেন, ‘‘যাঁর যেমন সাধ্য, তেমন দামেরই কিছু কিনুন। আমরা চাই, সকলেরই কেনার মতো জিনিস রাখতে। তাই খুব অল্প দামেরও পেন্টিং, স্কেচ, ড্রয়িং রাখা হয়েছে।’’
রাখী খেয়াল করেছেন, আজকাল তরুণ চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীরা নিজেদের সাধ্যের মধ্যে শিল্পকাজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। এই ইচ্ছাকে আর একটু উৎসাহ দিতে চান তিনি। জানেন, অনেকেরই জীবনে বহু বদল এসেছে অতিমারির সময়ে। কারও পরিবারে বড় ক্ষতি হয়েছে, কারও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তবু শিল্পের টানে তাঁদের অনেকেই আসবেন বলে আশা গ্যালারির। এমনই ক্রেতাদের জন্য নানা প্রদেশের শিল্পীদের কাজে সেজে উঠছে সিমা গ্যালারির বিভিন্ন দেওয়াল। রাজস্থানের মিনিয়েচর থেকে বিহারের মধুবনী, কী নেই এ বারের ‘আর্ট মেলা’র সংগ্রহে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy