রোজ ১০,০০০ পা হেঁটে নিলেই মনের শান্তি। দিনে বা হোক বা রাতে, হাঁটাই সেরা শরীরচর্চা, এমনই মনে করেন অনেকে। কিন্তু সেই ধারণা ভেঙে দিতে নয়া তথ্য দিলেন করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকর। সাফ বলে দিলেন, ‘‘হাঁটা আদৌ কোনও শরীরচর্চা নয়। তাই দিনের কোটা পূরণ করেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে যাওয়া উচিত নয়। এতে খুব বেশি লাভ নেই।’’
শরীরচর্চার সংজ্ঞার সঙ্গে খাপ খায় না হাঁটা, মত রুজুতার। শরীরকে সচল রাখার জন্য হাঁটার উপকারিতা রয়েছে কেবল। কিন্তু শ্রম হয় না তাতে। ওজন ঝরানো বা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে যে যে শরীরচর্চার প্রয়োজন, সেগুলির মধ্যে হাঁটার ফলাফল সবচেয়ে কম বলে দাবি তাঁর। হাঁটাকে তাই শরীরচর্চার অঙ্গ হিসেবে দেখেন না তিনি। এটিকে কেবল কার্যকলাপের অন্তর্ভুক্ত করলেন রুজুতা।

শরীরচর্চার শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা বাধ্যতামূলক। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরচর্চার শ্রেণিতে কী কী পড়ে?
রুজুতার দাবি, শরীরচর্চার শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা বাধ্যতামূলক। শক্তি, সহনশীলতা, স্থিতিশীলতা এবং সংকোচন-প্রসারণ। প্রত্যেকটি ব্যায়াম বা শরীরচর্চার মধ্যে এই চারটি গুণ থাকতে হবে। হাঁটার মধ্যে এগুলির একটিও নেই।
রুজুতার কথায়, ‘‘ব্যায়াম আসলে এমন হওয়া উচিত, যা আপনাকে নিজের নিরাপদ গণ্ডি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করবে। শরীরচর্চাকে সব সময়েই চ্যালেঞ্জিং হতে হবে। তবে হ্যাঁ, অতিরিক্ত চর্চা আবার কখনওই ভাল নয়। শরীরে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা বা অত্যধিক পরিশ্রম করা উচিত নয়। শরীরের নমনীয়তা, শক্তি এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই ধারণাটি কেবল ব্যায়ামের ক্ষেত্রেই নয়, দৈনন্দিন জীবন, কর্মক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আরামের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু করতে গেলে কিছুটা অস্বস্তি বোধ হতে পারে। তবে এই অস্বস্তিই তাঁদের আত্মবিশ্বাস, দক্ষতা এবং শিক্ষাগ্রহণের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আর শরীরচর্চার ক্ষেত্রেও এই সূত্রটিই মাথায় রাখতে হবে।’’
রুজুতার পরামর্শ, শুধু হাঁটার পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে উঠলে অথবা হাঁটার মাঝে খানিক দৌড়ে নিলে বা দিনে তিন বার সূর্য নমস্কার করলেও উপকার পাওয়া যায়। এই প্রত্যেকটিতে ওই ৪টি গুণের অন্তত একটি রয়েছে। নিজের শরীর বুঝে, দরকারে পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নিজের শরীরচর্চার ধরন নিজে স্থির করে নিন।