গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সকালে সাড়ে সাতটার মধ্যে নাকি জলখাবার খেয়ে ফেলতে হবে। না হলে শরীর খারাপ করবে। ছোট থেকে এ কথা শুনে এসেছে তিন্নি। কিন্তু সাতসকালে না খেলে যে কী হবে, তা কেউ বুঝিয়ে বলতে পারেনি। তিন্নিও তার মা-বাবাকে বুঝিয়ে উঠতে পারেনি যে, খিদে না পেলে খাওয়া উচিত নয়। তাতে শরীরের আদৌ ভাল হয় না। যদিও এ নিয়ে তর্কের শেষ নেই। কেউ বলেন, খিদে পেলেই খেতে হবে। আবার, কারও মত, সুস্থ থাকতে হলে খাবার খেতে হবে ঘড়ির কাঁটা ধরে।
এ প্রসঙ্গে নেটপ্রভাবী এবং হার্টের চিকিৎসক বেল মোনাপ্পা হেগড়ের মত, মানুষের তৈরি ঘড়ির উপর নির্ভর না করে এ ক্ষেত্রে দেহঘড়ির কথা শোনাই ভাল। অর্থাৎ, খিদে পেলে আমাদের শরীর জানান দেয়। সেই ইঙ্গিত মেনে খাবার খেলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ঘড়ি ধরে খাওয়ার পন্থা চিরায়ত। তা ভুল নয়। তবে, বর্তমান কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শরীর ভাল রাখতে গেলে তা যথেষ্ট নয়। তবে পুষ্টিবিদদের মত, ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দু’টিই প্রযোজ্য। কার ক্ষেত্রে কোনটি প্রযোজ্য, তা আগে থেকে নির্ধারণ করা যায় না। আবার, শারীরিক পরিস্থিতি কেমন, তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।
ঘড়ির কাঁটা ধরে খাবার খেলে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে?
যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসের সঙ্গে ঘর করছেন, তাঁদের জন্য ঘড়ি ধরে খাওয়ার নিয়ম ভাল। হজম, বিপাকহার ভাল রাখতেও সময় ধরে খাবার খাওয়া উচিত। কিন্তু এই অভ্যাসের খারাপ দিকও আছে। শরীরে খিদে পাওয়ার ইঙ্গিত না বুঝে যদি ঘড়ির সময়ের জন্য অপেক্ষা করেন, সে ক্ষেত্রে একবারে অনেকটা পরিমাণ খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে। হজমের সমস্যা হবে। বিপাকহার জনিত সমস্যা বেড়ে যাবে।
খিদে পেলেই খাওয়ার প্রবণতা শরীরে কেমন প্রভাব ফেলে?
শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সাড়া দেওয়া আপাত ভাবে ভাল। অর্থাৎ পেটের মধ্যে চুঁইচুঁই করলে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। খিদে বুঝে হালকা কিছু খাবার খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই মনে করেন, এতে খাবারের পুষ্টিগুণ শোষণ করার প্রক্রিয়াটি ভাল হয়। বিপাকহারও উন্নত হয়। ফলে শারীরবৃত্তীয় কাজগুলি সঠিক ভাবে পরিচালিত হয়। কিন্তু, এই ভাবে খাবার খাওয়ার বিপদও আছে। কখন যে বেশি খেয়ে ফেলবেন, তা বুঝতে পারবেন না। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রায় হেরফের হতে পারে।
তা হলে কী করবেন?
চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই এখন জোর দেন ‘মাইন্ডফুল ইটিং’-এর উপর। এই অভ্যাস কোনটি পেটের খিদে এবং কোনটি চোখের খিদে, সেই ফারাক বুঝতে সাহায্য করে। শরীরের খিদের ইঙ্গিতগুলি স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। পাশাপাশি, খাবারের পরিমাণের উপরেও লাগাম টানতে সাহায্য করে।
কী ভাবে ‘মাইন্ডফুল ইটিং’ অভ্যাস করবেন?
১) সময় নিয়ে খাবার খেতে হবে। হাত দিয়ে খাবার মুখে তুলে নিলেই হবে না। সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে খাবারের স্বাদ, গন্ধ, বর্ণ আস্বাদন করতে হবে।
২) মোটামুটি পেট ভরে গেলেই খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। খাবার নষ্ট হবে ভেবে গলা পর্যন্ত খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
৩) খাওয়ার সময়ে টেলিভিশন বা মোবাইলে চোখ রাখা যাবে না। তাতে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা বেড়ে যাবে। পাশাপাশি, মনখারাপ হলেই কিছু খেতে হবে, এমন ধারণাকেও প্রশয় দেওয়া যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy