মুখের মাসাজ করবেন কী ভাবে, শিখে নিন ধাপে ধাপে। ছবি: ফ্রিপিক।
বয়সের ভারে মুখে মেদ জমে, কুঁচকে যায় চামড়া। বলিরেখার সমস্যা তো আছেই। দিনভর ছুটে চলায় ক্লান্তি, হতাশা, মানসিক চাপের ছাপও স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে মুখে। দেখবেন, সাজগোজ, রূপটান, কিছুতেই এড়ানো যায় না এই সমস্যা। ঘুম থেকে ওঠার পরেই মুখে ফোলা ভাব, চোখের তলায় কালি— এ তো বলতে গেলে রোজের সমস্যা। চেহারায় বয়সের ছাপ ঠেকিয়ে রাখতে স্পা, ফেসিয়াল নিয়মিত করানো যেমন খরচসাপেক্ষ, তেমনই সময়সাপেক্ষ। বেশি প্রসাধনী ব্যবহার করলে আবার ত্বকের বারোটা বেজে যাবে। তাহলে উপায় কী? ত্বক চিকিৎসকেদের পরামর্শ, মুখের মাসাজই হল সেরা উপায়। তার জন্য সাঁলোতে যাওয়ার দরকার নেই। রোজ সময় করে নিজেই করে নিতে পারেন। শুধু পদ্ধতিগুলো জেনে নিতে হবে।
ধাপে ধাপে শিখে নিন পদ্ধতি:
১) প্রথমে মাসাজের জন্য সঠিক তেল বা সিরাম বাছুন
ত্বকের ধরন অনুযায়ী তেল বা সিরাম বাছতে হবে। দিনে বা রাতে যে কোনও সময়েই মুখের মাসাজ করতে পারেন। চাইলে নিত্যব্যবহারের ক্রিম ব্যবহার করেও মাসাজ করা যাবে। ত্বক যদি শুষ্ক হয়, তাহলে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ আমন্ড তেল ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক তৈলাক্ত হলে ও ব্রুণ-ফুসকুরির সমস্যা থাকলে টি-ট্রি তেল খুব কার্যকরী হতে পারে। ত্বক যদি বেশিমাত্রায় স্পর্শকাতর হয়, তা হলে আপনার জন্য উপযোগী হতে পারে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মোরিঙ্গা তেল। তা ছাড়া নারকেল তেল যে কোনও ত্বকের জন্যই স্বাস্থ্যকর।
২) মুখ পরিষ্কার করুন
প্রথমে উষ্ণ গরম জলে মুখ ভাল করে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এতে মুখের ময়লা উঠে যাবে। রোজ যে ফেসওয়াশ ব্যবহার করেন তা দিয়েই মুখ ধুয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। নাকের উপর ‘হোয়াইট্ হেডস’ বা ‘ব্ল্যাক হেড্স’ থাকলে মুখে গরম জলের ভাপ নিতে পারেন। তবে মিনিট তিন-চারের বেশি নয়। তার পর টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ মুছে নিন। দেখবেন নাকের ময়লা বেরিয়ে গিয়েছে। তার পর তেল বা সিরাম দিয়ে মাসাজ শুরু করুন।
৩) মাসাজের টিপ্স
মাসাজের জন্য অনেক রকম সরঞ্জাম পাওয়া যায়। চাইলে হাত দিয়েও মুখে মাসাজ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তর্জনী ও মধ্যমা দিয়ে মাসাজ শুরু করুন। হাতে তেল বা সিরাম অথবা ক্রিম নিয়ে কপাল, চোখের নীচে, নাকের দু’পাশ থেকে গাল হয়ে থুতনিতে চক্রাকারে মাসাজ করতে হবে। মুখের ত্বকে আলতো করে আঙুলের চাপ দেবেন। বেশি চাপ দিয়ে ঘষবেন না।
নাকের হাড় ও দুই ভ্রূ-র মাঝখান দিয়ে নেমে নাক ও নাকের দু’পাশেও মাসাজ করতে হবে। নাকের উপর ও দু’পাশে একটু চাপ দিয়ে মাসাজ করুন।
ভ্রূ ও চোখের চারপাশেও মাসাজ করতে হবে ধীরে ধীরে। ভ্রূ-র নীচে দিয়ে চোখের দু’পাশ ও চোখের তলায় আঙুলের চাপ দিয়ে মাসাজ করুন। চোখের পাতার উপরের অংশও বাদ দেবেন না যেন। দু’চোখের চারপাশে চক্রাকারে তেল বা সিরাম দিয়ে মাসাজ করতে থাকুন। দেখবেন অনেকটা আরাম লাগছে। চোখের ক্লান্তিও কেটে যাবে।
মুখ হয়ে গলায় মাসাজ করতে হবে একই পক্রিয়ায়। গলা থেকে আবার থুতনি ও তার দু’পাশে হাল্কা চাপে মাসাজ করুন।
থুতনি থেকে এ বার উঠতে হবে দুই গালে। এক্ষেত্রে সবক’টা আঙুলেরই ব্যবহার করুন। থুতনি থেকে টেনে গালের চামড়া ঠেলে উপরের দিকে তুলতে হবে। একে বলে ‘আপওয়ার্ড মোশন’-এ মাসাজ করা। সব সময়ে গালের মাসাজ এ ভাবেই করতে হবে।
এর পর আসুন ঠোঁটে। তর্জনী ও মধ্যমা দিয়ে ঠোঁটের দু’ধারের চামড়া টেনে নিয়ে যান কানের গোড়া অবধি।
কানের লতির নীচে মাসাজ করতে কিন্তু ভুলবেন না। দুই কানে চক্রাকারে নীচ থেকে উপরের দিকে মাসাজ করুন। তার পর কানের পিছনের দিক ও লতির নীচেও মাসাজ করতে হবে।
কান থেকে ঘাড় হয়ে দুই কাঁধে গিয়ে মাসাজ শেষ হবে। কানের দু’পাশ থেকে ঘাড় হয়ে কাঁধ অবধি আঙুল টেনে নিয়ে যান। তার পর ঘাড়ের পিছন দিকের অংশেও মাসাজ করুন। কাঁধ ও ঘাড়ের মাসাজ সঠিক পদ্ধতিতে করলে দেখবেন সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছে।
রোজ নিয়ম করে ১০ থেকে ১৫ মিনিটও যদি মুখ, গলা, ঘাড় ও কাঁধের মাসাজ এইভাবে করতে পারেন তাহলে অল্প দিনেই ত্বকের স্বাস্থ্য ফিরবে। লাবণ্যে ভরে উঠবে মুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy