খুদের সাজ হোক মনের মতো। ছবি: সংগৃহীত।
উৎসব ঘিরে ছোটদের যে আনন্দ আর বিস্ময় জুড়ে থাকে, বড়রা সেখানে সহজেই কয়েক গোল খেয়ে বসে থাকেন। তবে উৎসবের নাম যদি হয় দুর্গাপুজো, তা হলে সাজগোজে দু’তরফই সমানতালে পাল্লা দেয়। অপেক্ষার আর মাত্র কিছু দিন। তার পরেই কানে আসবে ঢাকের বাদ্যি। আর রঙিন জামাকাপড় পরে এক ঝাঁক প্রজাপতির মতো চোখের সামনে দৌড়ে বেড়াবে কচিকাঁচার দল। সত্যিই কি রঙিন, জমকালো পোশাক পরতে আর পছন্দ করে ছোটরা? বাবা-মায়ের পছন্দই কি শিরোধার্য না কি অন্তত নিজের সাজপোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ছোট মুখে বড় কথা বলে তারা? টেলি-অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্তের ৭ বছরের মেয়ে আদ্রিয়া হালকা রঙের পোশাক ছাড়া পরতেই চায় না। কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানেও তার অন্যথা হয় না। মেয়ের ব্যাপারে মানসী বলেন, ‘‘আমাদের ছোটবেলায় বাবা-মা যা কিনে দিতেন, সেটাই পরতাম। এখন সে যুগ আর নেই। এখন শিশুদের পছন্দকেই গুরুত্ব দিতে হয়। আমার মেয়ে সে পোশাকগুলিই পরতে চায়, যেটা পরে ও স্বস্তি পায়। সুতির হালকা রঙের পোশাক পরতেই ও সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। আমিই বরং মাঝেমাঝে ওকে জমকালো কিছু পরাতে চাই। কিন্তু মেয়ে একেবারেই সেটা চায় না।’’
অন্য দিকে, পেশায় পোশাকশিল্পী পরমা ঘোষ একরত্তি ছেলে নিবিড়ের জন্য বানিয়ে ফেলেছেন ছড়া লেখা জামা। ছোটবেলার অনেকটা অংশ জুড়ে থাকে বাঘমামা, খোকাবাবু, হাট্টিমাটিম টিমেরা। বইয়ের পাতার চরিত্ররা খুদের পোশাকে উঠে এলে মন্দ হয় না। পরমা বলেন, ‘‘খাওয়ার সময়ে ছেলের হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিই না। বরং নানা ছড়া শোনাই। আমার ছেলে মন দিয়ে শোনেও। ও পছন্দ করছে দেখেই এ বার পুজোয় ওর জন্য এমন ছড়ার প্রিন্টের জামা বানিয়েছি। এতে ওর সাজে শৈশবটাও বজায় থাকল, আবার নতুনত্বও এল বিষয়টিতে।’’
ট্রেন্ড দূরে থাক
শিশুদের সাজে পশ্চিমি ধাঁচ অনুকরণ না করে ভরসা রাখা যায় ঘরোয়া সাজে। বাঙালির সব থেকে বড় আনন্দ উদ্যাপনের সময়ে বাচ্চাদের সাজেও থাকুক বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। ফ্রক, শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি, শাড়ি, ধুতি— এই সব পুরনো হয়ে এসেছে, এমন ভাবনা মাথায় না আনাই শ্রেয়। ছোট থেকেই বাঙালির ঐতিহ্য আর রীতিনীতির সঙ্গে পরিচিত করানো জরুরি।
প্রধান হোক স্বাচ্ছন্দ্য
শিশুদের সাজে অভিনবত্ব ও সাবেকিয়ানার পাশাপাশি মাথায় রাখা দরকার স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিও। এ ক্ষেত্রে খুদের স্বস্তি সবচেয়ে প্রাধান্য পাবে। অনেক সময়ে শিশুরা বড়দের মতো সাজতে চায়। সে ক্ষেত্রে কচিকাঁচাদের বাড়ির বড়দের মতো সাজার সাধও পূরণ করতে গিয়ে এমন কিছু না পরানোই শ্রেয়, যাতে তাদের পোশাক সামলাতে ঝক্কি পোহাতে হয়। শিশুর জন্য তেমন পোশাক বাছাই করা জরুরি, যা সামলে আনন্দ করতেও কোনও সমস্যা হবে না।
সাজপোশাকে ধরা থাক শৈশব
সময় বদলেছে। এখনকার শৈশব আগের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। প্রযুক্তির হাতছানি এখনকার ছেলেবেলার বেশির ভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে। বিশ্বায়নের বাজারে শৈশবের মূলস্রোতটুকু ধরে রাখাই এই মুহূর্তে বাচ্চাদের সাজগোজের ক্ষেত্রে বড় একটি সমস্যা। বাচ্চার সাজে সারল্য আর শৈশবটুকু বজায় রাখা জরুরি। পোশাক কেনার আগে সেটা মাথায় রাখা প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy