হরেক এসেনশিয়াল অয়েলের মধ্যে কোনটি আপনার ত্বকের উপযুক্ত, বুঝবেন কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।
সারা দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যেতে পারে ঈষদুষ্ণ জলে এক বার স্নান করে নিলে। এই জলে যদি কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে দেওয়া যায়, কাজ হবে আরও ভাল। সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়বে সারা শরীরে। তরতাজা হবে শরীর-মন।
বিভিন্ন ফুল ও গাছের নির্যাস সংগ্রহ করে তৈরি করা হয় বিশেষ কিছু সুগন্ধি-তেল। একেই বলা হয় এসেনশিয়াল অয়েল। চুলের থেকে ত্বকের পরিচর্যায় কাজে লাগে ‘এসেনশিয়াল অয়েল’। রুক্ষ ত্বক, বলিরেখা, ব্রণ— ত্বকের হরেক সমস্যার সমাধান হতে পারে সুগন্ধি এই তেলের গুণে। এসেনশিয়াল অয়েলে থাকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। এতে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান ত্বকের জ্বালা, ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। আমেরিকার ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এ এসেনশিয়াল অয়েল এবং ত্বকের অসুখ সারাতে এর ভূমিকা নিয়ে গবেষণা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এতে থাকা উপাদান ত্বকের সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে পারে।
ত্বকের যত্নে এসেনশিয়াল অয়েলের কার্যকারিতা
বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল রয়েছে। তাদের এক একটির কাজ এক এক রকম। যেমন ব্রণ কমাতে ব্যবহার করা হয় টি ট্রি অয়েল। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ডার্মাটোলজি’-তে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, টি-ট্রিতে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান ব্রণ ছাড়াও ছত্রাক, ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রমণের মোকাবিলা করতে পারে। আবার ল্যাভেন্ডার অয়েল মন শান্ত করতে সাহায্য করে।
কোন ত্বকের জন্য কোনটি উপযুক্ত?
বাজারে বিভিন্ন ধরনের এসেনিশয়াল অয়েল পাওয়া যায়। সেই তালিকায় রয়েছে ল্যাভেন্ডার অয়েল, টি-ট্রি অয়েল, ক্যামোমাইল, স্যান্ডেল উড, জেরেনিয়াম অয়েল-সহ আরও অনেক কিছু। কিন্তু সব রকম ত্বকেই সব কিছু ব্যবহার করা যায় না। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক এসেনশিয়াল অয়েল বেছে নেওয়া দরকার।
তৈলাক্ত ত্বক
যদি কারও ত্বক তৈলাক্ত হয় তা হলে এমন এসেনশিয়াল অয়েল বেছে নিতে হবে যা তেলের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ত্বকের চিকিৎসক বলছেন, এ ক্ষেত্রে টি-ট্রি অয়েল কার্যকর হবে। তৈলাক্ত ত্বকে ধুলো-ময়লা জমে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রেও কাজ করবে এই তেলটি। টি-ট্রি অয়েলে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান ছোটখাটো সংক্রমণ থেকে বাঁচাবে ত্বককে।
শুষ্ক ত্বক
শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা এবং ময়েশ্চারাইজ়ারের অভাব থাকে। এ ক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে এমন এসেনশিয়াল অয়েল, যাতে ভিটামিন এ এবং সি থাকবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে পারেন রোজ়হিপ অয়েল। ত্বক শুষ্ক হওয়ার জন্য অনেক সময় চুলকানি, প্রদাহের সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে কাজ করবে স্যান্ডলউড, জেরেনিয়াম, ক্যামোমাইল তেল, বলছেন ত্বকের চিকিৎসক।
মিশ্র ত্বক
কারও ত্বক মিশ্র প্রকৃতির হয়। অর্থাৎ কিছুটা অংশ তৈলাক্ত, কিছুটা শুষ্ক। সাধারণত কপাল এবং নাকের অংশটি অনেকের তৈলাক্ত হয়। এই ধরনের ত্বকের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে জেরেনিয়াম অয়েল।
ত্বক সংবদেনশীল হলে রোজ়, স্যান্ডলউড অয়েল বেছে নিতে পারেন। বলিরেখা দূর করতে স্যান্ডলউড অয়েল বা চন্দনের তেল কাজে আসবে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
যে কোনও এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট জরুরি। এতে বোঝা যায়, সেই তেলটি ব্যবহারে এলার্জির সম্ভবনা রয়েছে কি না।
এসেনশিয়াল অয়েল মুখে বা ত্বকে সরাসরি মাখা উচিত নয়। কোনও ক্যারিয়ার অয়েলে এক বা দুই ফোঁটা মিশিয়ে নিতে হয়। ক্যারিয়ার অয়েল হিসাবে কাঠবাদামের তেল, জবার তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
সব সময় পরিষ্কার মুখে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে হবে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট জরুরি। তার পরেও সেটি মেখে কোনও সমস্যা হলে তা বন্ধ করে, ত্বকের চিকিৎসক বা অ্যারোমাথেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy