ছবি: সংগৃহীত।
আকারে ছোট, দেখতে গোলাকার বিশেষ এক ধরনের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতেন আশির দশকের পুরুষেরা। তর্জনি এবং মধ্যমা নয়তো মধ্যমা এবং অনামিকায় আটকানো থাকত সেই চিরুনির দু’টি গোল আংটা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তেল চপচপে চুলে এক হাতের তালু এবং অন্য হাতের আঙুলে আটকানো ওই ব্রাশ দিয়ে বিশেষ কায়দা চুল (ব্যাক ব্রাশ) আঁচড়াতেন তাঁরা। বাসনা একটিই। পাতলা ফিনফিনে চুল যেন অভিনেতা জিতেন্দ্র কিংবা বিনোদ খন্নার মতো হয়।
এই প্রজন্মের স্ক্যাল্প ব্রাশ দেখতে অনেকটা সেই চিরুনির মতো হলেও মতো হলেও কাজ কিন্তু একেবারেই আলাদা। তাড়াহুড়ো করে কাজে বেরোনোর সময়ে প্রায় দিনই শ্যাম্পু করা হয়। কিন্তু সালোঁয় গেলে সেখানকার দক্ষ কর্মীরা যে ভাবে শ্যাম্পু করিয়ে দেন, তেমনটা একার পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে মাথার ত্বকে জমতে থাকে মৃত কোষ, ধুলোময়লা। কখনও তেল, সিরাম, শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারের অংশ জমেও মাথার ত্বকে আলাদা করে পাতলা চামড়ার একটি পরত তৈরি করে ফেলতে পারে। যা শুধুমাত্র আঙুলের ছোঁয়ায় দূর করা সম্ভব নয়।
দিনের পর দিন এমনটা চলতে থাকলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় চুলের। সম্ভাব্য যে যে কারণে চুল পড়তে পারে, তেমন কিছু নজরে আসে না। অথচ নামীদামি প্রসাধনী ব্যবহার করেও চুল পড়া রোধ করা যায় না। কেশচর্চা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই ধরনের সমস্যার সহজ সমাধান হল স্ক্যাল্প ব্রাশ। নরম সিলিকন বা নমনীয় প্লাস্টিকের তৈরি ব্রিসল্স-যুক্ত এই ব্রাশটি মাথার ত্বক থেকে নোংরা ধুলোময়লা, খুশকি বা মৃতকোষ দূর করতে সাহায্য করে। ব্রাশের উপর শ্যাম্পু দিয়ে ভিজে চুলে হালকা হাতে অনেকটা চিরুনির মতোই ব্রাশটি চালনা করতে হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এই জিনিসটির ভূমিকা রয়েছে। পুজোর আসতে আর মাত্র এক মাস বাকি। তার আগে নিয়মিত এই জিনিসটি ব্যবহার করলে ফাঁকা সিঁথিতে সত্যিই কি নতুন চুল উঁকি দেবে?
স্ক্যাল্প ব্রাশ ব্যবহার করলে কি সত্যিই চুলের মান ভাল হয়?
স্ক্যাল্প ব্রাশে চিরুনির মতোই ছোট ছোট দাঁত থাকে, তাই মাথার তালুতে সঞ্চালন করলে রক্ত চলাচল ভাল হয়। শ্যাম্পু করার সময়ে মাথার ত্বকে জমে থাকা অবাঞ্ছিত নোংরা সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়। আর পরিষ্কার মাথার ত্বক নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। কিন্তু সালোঁয় গিয়ে শ্যাম্পু করার সময়ে এমন ধরনের ব্রাশ সচরাসর ব্যবহার করতে দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে মাথার ত্বক পরিষ্কার করার ‘অস্ত্র’ কিন্তু হাতের আঙুলই। প্রায় ২৫ বছর ধরে সালোঁয় কাজ করছেন সোনালি তরফদার। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই সম্প্রতি নিজের একটি সালোঁও খুলেছেন। সোনালির মতে, “এখন অনেকেই এই ধরনের স্ক্যাল্প ব্রাশ ব্যবহার করছেন। তাতে যে নতুন চুল গজাবেই এমনটা কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। প্রশ্ন যদি পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্নতারই হয়, তা হলে আমি বলব সময় নিয়ে শ্যাম্পু করতে। এক বারের জায়গায় দু’বার শ্যাম্পু করতে। তাতেই মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। এটি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম না জানলে কিন্তু উল্টে চুলের ক্ষতি হতে পারে। ভিজে চুলের গোড়া এমনিতেই নরম থাকে। সঠিক পদ্ধতি না জেনে ব্রাশ ঘষলে চুল পড়ার পরিমাণ উল্টে আরও বেড়ে যেতে পারে। চুলে জট পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে বাড়িতেই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে স্ক্যাল্প স্ক্রাবারও তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। শ্যাম্পু করার আগে সেই স্ক্রাবার বা এক্সফোলিয়েটর দিয়ে মাথার ত্বক হালকা হাতে ঘষে নিলেও অনেকটা কাজ হয়। এ ছাড়া মাথার ত্বকের ধরন অনুযায়ী প্রসাধনী নির্বাচন করলেও এই ধরনের সমস্যা থাকে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy