সঠিক ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি বিষয়। ছবি: সংগৃহীত।
সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে মেলামেশার জন্য, চাকরি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের সঙ্গে কথোপকথন চালাতে কেবল আত্মবিশ্বাস নয়, জরুরি সঠিক বেশভূষাও। জানা থাকা প্রয়োজন বেশ কিছু আদবকায়দা। গ্রামাঞ্চলে বড় হওয়া অনেক মেধাবী ছাত্রও কর্পোরেট জগতে চাকরি করতে এসে প্রথম ধাপে মানিয়ে নিতে পারেন না। কারণ, প্রতিটি জায়গার পরিবেশ-পরিসর, আদবকায়দা আলাদা। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন থাকা, উপযুক্ত পোশাক সম্পর্কে ধারণা না থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষে বিব্রত হতে পারেন। ইন্টারভিউ দিতে গেলে এক রকম পোশাক হবে, ডেটিং-এ গেলে অন্য রকম, বন্ধুদের আড্ডায় আর এক রকম, আবার বেড়াতে গেলে এর সব ক’টার চেয়ে অন্য রকম । সকলেই হয়তো সব কিছু জানেন না। তবে, জেনে নিলে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে।
স্নান: শরীরে লেগে থাকা ধুলো-ময়লা দূর করতে নিয়মিত স্নান করা জরুরি, সকলেই জানেন। কিন্তু স্নানের বিষয়ে মহিলাদের খুঁতখুঁতানি থাকলেও, হয়তো অনেক পুরুষই আছেন যাঁরা এ বিষয়ে সচেতন নন। কোনও রকমে জল ঢেলে স্নান নয়, ঠিকমতো সাবান বা শরীরে মাখার শ্যাম্পু ব্যবহার না করলে, গায়ে দুর্গন্ধ হবে। পাশাপাশি শরীরে এক্সফোলিয়েশন জরুরি। এতে ত্বকের উপরের মৃত কোষ দূর হয়। তাই স্নানের সময় ফেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কারের পাশাপাশি বডি ওয়াশ মাখার সময় জালি ব্যবহার করতে পারেন।
মুখ: কথায় আছে, প্রথমে দেখা ও পরে গুণবিচার। কাউকে যখন কেউ দেখেন, প্রথমেই চোখে পড়ে মুখ। তাই মুখের যত্নও প্রয়োজন। নিয়মিত ফেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পাশাপাশি ময়শ্চারাইজ়ার জরুরি। রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার আবশ্যক। প্রয়োজনে হালকা রূপটানও আপনাকে অন্যের কাছে বেশি উপস্থাপনযোগ্য করে তুলবে।
নখের যত্ন: অফিসেই যান বা ইন্টারভিউ দিতে, কিংবা বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা করতে, হাতে বড় বড় নখ, তাতে ময়লা জমে থাকলে, দেখতে ভাল লাগবে কী! তা ছাড়া নখের কোণে জমা ময়লা রোগের কারণ হতে পারে। লম্বা ধারালো নখে হাত-পা চিরে যেতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর হাত ও পায়ের নখ কাটুন। হাতে ময়শ্চরাইজ়ার মাখতে ভুলবেন না।
পোশাক: সঠিক জায়গায় সঠিক পোশাক পরা খুব জরুরি। পোশাক দেখেও সেই মানুষটির রুচি সম্পর্কে ধারণা করা যায়। কোনও কর্পোরেট সংস্থায় ইন্টারভিউ দিতে গেলে পরিচ্ছন্ন কোনও একরঙা শার্ট প্যান্টের মধ্যে গুঁজে পরতে হবে। তবে সেই প্যান্ট যেন জিন্স না হয়। আবার বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে আর এক রকম পোশাক হবে। বন্ধুরা হুল্লোড় করলে এক রকম। কোথায়, কখন কোন পোশাক পরবেন তা খুব জরুরি।
চুল: চুল নিয়ে রকমারি সজ্জা হয়। তবে পেশার সঙ্গে সেই কেশসজ্জা মানানসই হচ্ছে কি না তা বোঝা দরকার। কর্পোরেট চাকরিতে এক রকম কেশসজ্জা মানানসই হতে পারে, আবার স্কুলশিক্ষকের ক্ষেত্রে এক রকম। যদি কেউ ফ্যাশন জগতের মানুষ হন, তাঁর ক্ষেত্রে আর এক রকম। তবে চুলের ছাঁট সঠিক রাখার পাশাপাশি চুলের যত্নও প্রয়োজন। শ্যাম্পুর পাশাপাশি কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল সুন্দর দেখতে লাগবে, মসৃণ থাকবে।
দাড়ি-গোঁফ: অফিস হোক বা ইন্ডারভিউ, দাড়ি-গোঁফ না রাখলে, পরিষ্কার করে কামিয়ে নিন। তবে দাড়ি-গোঁফ রাখলে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে বা ছাঁটতে হবে। না হলে কিন্তু দেখতে মোটেই ভাল লাগবে না।
দাঁত ও মুখ: ঠিকমতো দাঁত না মাজলে দাঁতের ক্ষতি তো বটেই, মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। এতে আর পাঁচজন লোকের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁরাও বিরক্ত হবেন। এ নিয়ে আড়ালে-আবডালে ঠাট্টা-তামাশাও চলবে। এর কোনওটাই কিন্তু কারও জন্য সুখকর নয়। তাই সকাল ও রাতে সঠিক ভাবে দাঁত মাজুন। অনেকেরই ধূমপানের অভ্যাস থাকে। ঘন ঘন চা পানেরও। ইন্টারভিউ বা মিটিং-এ যাওয়ার আগে ধূমপান করতে হলে পরে বাজারচলতি ‘মাউথ ফ্রেশনার’ ব্যবহার করুন। না হলে মৌরি, এলাচের মতো মুখশুদ্ধি ব্যবহার করতে পারেন। সবচেয়ে ভাল হয় কোনও কিছু খাওয়ার পর কুলকুচি করে মুখ ধুয়ে নিলে।
আদবকায়দা: যে কোনও মানুষের সঙ্গে মেলামেশার জন্য সঠিক আদবকায়দা জানা জরুরি। কর্পোরেট মিটিং বা পার্টিতে গিয়ে সঠিক আদবকায়দা না জানলে, অস্বস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। তাই যে সমাজে চলেফেরা সেই সমাজের নিয়মকানুন, কথা বলার কায়দা দ্রুত আয়ত্ত করে নেওয়া বুদ্ধিমত্তার পরিচয় হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy