কী ভাবে শাড়ি পরলে রোগা দেখাবে? নিজস্ব চিত্র।
এক সময় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে পা দিলেই ‘ঠক্ঠক্...’ শব্দটা ভেসে আসত। রঙিন সুতো আর কাপড় মেলা থাকত প্রায় প্রতিটি বাড়ির উঠোনে। তবে এখন এ সবই অতীত। কারখানায় তৈরি কম দামের ফ্যান্সি শাড়ির দাপটে বাজার হারাচ্ছে তাঁতের শাড়ি। মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলার তাঁতশিল্প। তার উপর দু’বছর কোভিডের ভয়াবহ প্রভাবে বাংলার তাঁতিদের অবস্থা যেন আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। মেশিনে তৈরি শাড়ির দাপটে কোথাও যেন হারিয়ে যেতে বসেছে হাতে বোনা শাড়ির মাহাত্ম্য। হালফিলে কমবয়সিদের মধ্যেও শাড়ি পরার ঝোঁক কমেছে। রোজের ব্যস্ততায় শাড়ি ছেড়ে জিন্স-টপ পড়তেই সকলে বেশি স্বচ্ছন্দ! এই কারণেও হাতে বোনা শাড়ির বাজারে মন্দা দেখা দিচ্ছে।
এই পুজোয় হাতে বোনা শাড়ির চাহিদা ফিরিয়ে আনতে সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সিমা আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে পুজো প্রদর্শনী। শাড়ি কোনও পুরাতন পোশাক নয়, আধুনিক কায়দায় শাড়ি পরেও সকলের নজর কারা যায়— এ বারের পুজো প্রদর্শনীর মূল ভাবনা এ থেকেই।
প্রত্যেক বছরের মতোই এ বারের প্রদর্শনীতেও রয়েছে নানা প্রদেশের শাড়ি, পোশাক তৈরির কাপড়, ঘর সাজানোর সামগ্রী, গয়না এবং আরও টুকিটাকি। একঘেয়ে শাড়ির বাইরে যদি অন্য ধরনের শাড়ি এ বার পুজোয় কিনতে চান, তা হলে অবশ্যই যেতে পারেন এই প্রদর্শনীতে। সপ্তাহের প্রত্যেক দিনই খোলা। চলবে ১ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রত্যেক বছরই সিমার কর্ণধার রাখি সরকার নিজে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের তাঁতিদের কাজ জোগাড় করে এনে এই প্রদর্শনী সাজান। এ বছরেও প্রদর্শনীতে থাকবে তাঁর নিজে হাতে বাছাই করা কিছু শাড়ি। পোশাকশিল্পী দিব্যা শেঠ, সুনীতা শঙ্করের নকশা করা পোশাকও পাবেন এই প্রদর্শনীতে।
শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শাড়ি ড্রেপার ডলি জৈন। শাড়ি পরিয়েও বিখ্যাত হওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন ডলি। ছিলেন কলকাতার গৃহবধূ, এখন তিনি বলি তারকাদের নয়নের মণি। শাড়ি পরার সময় কোন কায়দাগুলি জানলে আপনি সবচেয়ে সাবলীল থাকতে পারবেন, বিশেষ ওয়ার্কশপে ডলি দেখিয়ে দিলেন সিমায়।
আনন্দবাজার অনলাইনকে ডলি বলেন, ‘‘এই প্রদর্শনীতে এক ছাদের তলায় সারা দেশের নানা প্রান্তের শাড়ির সম্ভার পাবেন গ্রাহকরা। বাজারে হাতে বোনা শাড়ির নামে আপনাকে আদৌ আসল হ্যান্ডলুম শাড়ি পাচ্ছেন কি না, সেই দ্বিধা থেকেই যায়। তবে এখানে আমরা যে খাঁটি মানের শাড়িই পাব, সে বিষয় কোনও সন্দেহ নেই!’’
শাড়ি পরানোর বিশেষ ওয়ার্কশপে নব প্রজন্মকে কোন টোটকা দিলেন ডলি?
১) শাড়ি পরার সময় সেফটি পিনের জন্য অনেক ভাল শাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ডলি জানিয়েছেন, সেফটি পিনে একটি মুক্তো ঢুকিয়ে নিলেই হবে সমস্যার সমাধান। মুক্তো না পেলে বোতাম, টিস্যু, টিপ দিয়েও হতে পারে মুশকিল আসান। শাড়িতে দুটোর বেশি পিন ব্যবহার না করাই ভাল।
২) পুজোয় সাবেকি পদ্ধতিতে শাড়ি না পড়ে জিন্সের সঙ্গে শাড়ি পড়ুন। ব্লাউজের বদলে পড়ুন ক্রপ টপ।
৩) যাঁরা মনে করেন, প্লিট করে শাড়ি পড়লে মোটা লাগে, তাঁদের জন্য ডলি বলেন, আঁচল যত লম্বা রাখবেন, ততই আপনাকে দেখতেও লম্বা লাগবে। মোটা লাগবে না। প্লিট করে শাড়ি পরার সময় সব সময় খেয়াল করতে হবে যেন প্লিট কাঁধের বাইরে বেরিয়ে না যায়। প্লিট করে শাড়ি পরার সময় চওড়া পাড়ের শাড়ি এড়িয়ে চলাই ভাল।
৪) শাড়িতে যত কুঁচি পড়বে দেখতে ততই ভাল লাগে। এ ক্ষেত্রে শাড়িটি প্রথম কোথায় গুঁজছেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। ডলির মতে, নাভি থেকে ডান দিকে সরিয়ে শাড়ির কোনা গুঁজতে শুরু করুন। তা হলেই বেশি কুঁচি পড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy