বিজ্ঞানীর কল্পনার সেই গবেষণাগার কিছুটা এমনই হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
বিশাল এক গবেষণাগার। তাতে পাশাপাশি বসানো রয়েছে হাজার হাজার কাচের গোলকের মতো কিছু যন্ত্র। আর তারই ভেতরে তৈরি হচ্ছে মানবশিশু। এমনই এক ভবিষ্যতের কথা শোনালেন ইয়েমেনের মলিকিউলার বায়োটেকনোলজিস্ট হাশেম আল-ঘাইলি। সম্প্রতি হাশেম অ্যানিমেশনে তৈরি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে দাবি করেছেন, অদূর ভবিষ্যতে বাস্তবে এমন গবেষণাগার তৈরি করা খুব একটা কঠিন নয়। বিজ্ঞানীর তৈরি করা এই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ঝড় তুলেছে সমাজমাধ্যমে।
হাসেম তাঁর কল্পনাপ্রসূত এই গবেষণাগারটির নাম রেখেছেন এক্টোলাইফ। এই গবেষণাগারে থাকবে মোট ৭৫টি কক্ষ। প্রতিটি কক্ষে থাকবে ৪০০টি কৃত্রিম গর্ভ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে গবেষণাগারে একইসঙ্গে ৩ হাজার শিশুর জন্ম দেওয়া সম্ভব হবে। যে কাচের গোলকের মতো জিনিস ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সেগুলিই হল কৃত্রিম গর্ভ বা গ্রোথপড। এই কৃত্রিম গর্ভের ভিতর আইভিএফ পদ্ধতিতে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে তৈরি করা হবে ভ্রূণ। সেই ভ্রূণ বড় হয়ে উঠবে এরই ভিতরে। জন্মের আগে পর্যন্ত শিশুর রক্তচাপ থেকে হৃদ্স্পন্দন, সবই মাপা যাবে এই যন্ত্রে।
বিজ্ঞানীর দাবি, প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মহিলার মৃত্যু হয় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে। বিভিন্ন জটিলতায় মৃত্যু হয় বহু নবজাতকেরও। নতুন এই পদ্ধতিতে একেবারে মুছে যাবে সেই সমস্যা। শুধু তা-ই নয়, নিজের সন্তানের মধ্যে বাবা-মা কোন কোন গুণ দেখতে চান তা-ও ঠিক করা যাবে শিশুর জন্মের আগেই। কৃত্রিম ভাবে জিনগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ঠিক করা যাবে হবু সন্তানের গায়ের রং, উচ্চতা শারীরিক গঠন, গলার স্বর কিংবা বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলি। পাশাপাশি অনেক জিনগত রোগও নির্মূল করা যাবে এই পদ্ধতিতে, দাবি বিজ্ঞানীর। পাশাপাশি বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কারণে যে দম্পতিরা সন্তান নিতে পারছেন না ও যে যে দেশ জনসংখ্যা হ্রাসের সমস্যায় ভুগছে, তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে এই ব্যবস্থা, এমনই মত বিজ্ঞানীর।
কিন্তু গোটা বিষয়টি দেখে তো মনে হচ্ছে কোনও কল্পবিজ্ঞানের ছবির অংশ, বাস্তবে কি আদৌ এমনটা সম্ভব? বিজ্ঞানী বলছেন সম্ভব। কারণ, প্রযুক্তি রয়েছে হাতের কাছেই। সমস্যা শুধু অনুমতি নিয়ে। এ ভাবে পুরোপুরি কৃত্রিম ভাবে সন্তান উৎপাদন করা নিয়ে নানা রকম নৈতিক জটিলতা রয়েছে। কোনও মানুষকে জন্মের আগেই একটি গবেষণার বস্তু করে তোলা নিয়ে আপত্তি রয়েছে নানা মহলে। প্রকৃতিকে এড়িয়ে মানবদেহে জিনগত বদল আনা বিবর্তনের পথে ঝুঁকির কাজ হতে পারে বলেও মত অনেকের। তাই বিষয়টি এখনও আইনসিদ্ধ নয়। তবে আইন যদি সম্মতি দেয়, তবে এমন কৃত্রিম প্রজননের দিন খুব বেশি দূরে নয়, মত হাশেমের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy