Advertisement
E-Paper

প্রচণ্ড গরম পড়ার আগে চট করে ঘুরে নিতে পারেন দক্ষিণ ভারতের স্বল্পচেনা ৩ ঠিকানায়

কাশ্মীর থেকে হিমাচল, সিকিমে বরফ দেখতে দলে দলে ছুটছেন পর্যটকেরা। তবে দক্ষিণ ভারতেও পাহাড়  আছে। বরফ না থাকলেও রয়েছে প্রকৃতির অনুপম সৌন্দর্য। তিন জায়গা রাখতে পারেন ভ্রমণের তালিকায়।

কর্নাটকের পাহাড়ি শহর চিকমাগালুর।

কর্নাটকের পাহাড়ি শহর চিকমাগালুর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ১১:৫৭
Share
Save

গরম পড়তে না পড়তেই সমস্ত ভিড় এখন উত্তরমুখী। কেউ ছুটছেন কাশ্মীরে মরসুমের শেষ বরফ দেখতে। কেউ আবার হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড। পূর্ব এবং উত্তর সিকিমের রেশমপথে বরফের খোঁজ করছেন অনেকে। তবে শুধু উত্তর নয়, দক্ষিণ ভারতের রূপসৌন্দর্যও মোটেও কম নয়। বরং গরম জাঁকিয়ে পড়ার আগে মার্চ বা এপ্রিলের শুরুতেই ঘুরে নিতে পারেন সেই সব জায়গা।

চিকমাগালুর

মার্চ, এপ্রিলে ছবির মতো সুন্দর চিকমাগালুরের  জনপদের আবহাওয়া থাকে মনোরম।

মার্চ, এপ্রিলে ছবির মতো সুন্দর চিকমাগালুরের জনপদের আবহাওয়া থাকে মনোরম।

পশ্চিমঘাটের রূপ সৌন্দর্য উপভোগে বেছে নিতে পারেন কর্নাটকের পাহাড়ি শহর চিকমাগালুর। জেলার নামও চিকমাগালুর। মার্চ, এপ্রিলে ছবির মতো সুন্দর এই জনপদের আবহাওয়া থাকে মনোরম। এখানেই রয়েছে মুল্লায়নগিরি শৃঙ্গ। হেঁটেই সেখানে চড়া যায়। পাহাড়ের মাথা থেকে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দৃশ্যগোচর হয়। সবুজ ঢেউখেলানো পাহাড় ঘিরে রেখেছে জনপদ। ঘুরে নিতে পারেন ঝারি ঝর্না। জঙ্গলের মধ্যে ঝর্না থেকে নেমে আসা জল জমে ছোট জলাশয় তৈরি হয়েছে। তবে সেখানে যেতে হলে হাঁটাপথই ভরসা। গাড়ি যেখানে নামাবে সেখান থেকে ২ কিলোমিটার হাঁটতে হবে। বাবা বুদানগিরি চিকমাগালুরের আর একটি দ্রষ্টব্য স্থান। পাহাড়ের মাথাটি চ্যাটালো। জায়গাটি সবুজ ঘাসের গালিচায় ঢাকা। এই স্থানও বেশ মনোরম। তবে পাহাড়ে চড়ার জন্য অনেক সিঁড়ি চড়তে হবে। পাহাড় শুধু নয়, রয়েছে জলাশয়। ঘুরে নিতে পারেন শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে হীরেকোলালে হ্রদ। এ ছাড়া দেখে নেওয়া যায় কৃষ্ণা রাজেন্দ্র বটানিক্যাল গার্ডেন। পশ্চিমঘাট পাহাড়ের কোলে সুন্দর করে সাজানো বাগান। মেঘ, কুয়াশার খেলায় এই জায়গা হয়ে ওঠে আরও মনোরম। ঘুরে নিতে পারেন শান্তি ঝর্না।

এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হেব্বা ঝর্না। অরণ্যের গহিনে তার অবস্থান। পাহাড় থেকে ধাপে ধাপে নামছে জলরাশি। সেখানে পৌঁছোতে গেলে গাছগাছালি ঘেরা পথ ধরে যেতে হবে বন দফতরের জিপসিতে। তার পরে হাঁটাপথে ঝর্না। তবে একবার পৌঁছোলে হেব্বার রূপ সমস্ত ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে।

হেব্বা ঝর্না চিকমাগালুর অন্যতম আকর্ষণ।

হেব্বা ঝর্না চিকমাগালুর অন্যতম আকর্ষণ। ছবি:সংগৃহীত।

কী ভাবে যাবেন?

বেঙ্গালুরু থেকে চিকমাগালুরের দূরত্ব ২৪২ কিলোমিটার। সড়কপথে যেতে ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে। ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দর হয়ে উড়ানপথে দেশের যে কোনও বড় শহর থেকে আসতে পারেন। চিকমাগালুরে রেলস্টেশনও রয়েছে। ট্রেনে হাওড়া থেকে বেঙ্গালুরু গিয়ে সেখানে যেতে পারেন। ম্যাঙ্গালুরু পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে সেখান থেকেও সড়কপথে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়। দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার।

গোকর্ণ

সৈকত, মন্দির— সব নিয়েই গোকর্ণ।

সৈকত, মন্দির— সব নিয়েই গোকর্ণ।

কর্নাটকের গোকর্ণ দিনে দিনে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠছে। অনুচ্চ টিলা এবং সমুদ্রের অপূর্ব রূপের টানে পর্যটকরাও আকৃষ্ট হচ্ছেন। এই জনপদ হিন্দু তীর্থক্ষেত্র হিসাবেও পরিচিত। তবে প্রকৃতিপ্রেমীরা এখান আসেন আরব সাগরের রূপ-দর্শনে। পরিচ্ছন্ন সৈকত। পাহাড় রয়েছে সাগরের গা ঘেঁষে। একাধিক ছোট ছোট সৈকত রয়েছে এখানে। ওম, কুদলে, প্যারাডাইস, হাফ মুন সৈকত পর্যটকমহলে জনপ্রিয়। ওম সৈকতের একটি বৈশিষ্ট্য হল এর আকৃতি কিছুটা ও-এর মতো। কায়াকিং-সহ একাধিক জলক্রীড়া রোমাঞ্চ উপভোগের সুযোগ রয়েছে এখানে।

তবে শুধু সমুদ্র নয়, এখানকার বহু পুরনো গুহা-মন্দিরের আকর্ষণও যথেষ্ট। পাহাড়ের মধ্যে ছোট্ট গুহামুখ। সেখান দিয়ে প্রবেশ করলে পৌঁছোনো যায় শিবমন্দিরে। একে অনেকে গো-গর্ভ শিবমন্দিরও বলেন। শোনা যায়, বিশেষ তিথিতে চাঁদের আলো সরাসরি এখানে পড়ে।

আর যদি এক অন্য রকম সূর্যাস্তের সাক্ষী হতে চান, তা হলে যেতে হবে জটায়ু তীর্থে। ওম সৈকত থেকে দূরত্ব সাত কিলোমিটারের মতো। এই পথে হয় বাইকে, নয়তো হেঁটে আসতে হবে। পাহাড়ের উপর থেকে সাগরের রূপ, পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্য মন বিভোর করে দেবে। তবে গোকর্ণের পরতে পরতে বিস্ময়। বয়ে চলা নদীর বুকে ছড়িয়ে থাকা পাথরে শিবলিঙ্গ, ষাঁড়-সহ খোদাই করা নানা রকম আকৃতি এক অদ্ভূত রূপের সৃষ্টি করেছে। খুব ভোরে সেখানে পৌঁছোলে মন শান্ত হয়ে যায়। সিরসি শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের এই স্থানের নাম সহস্রলিঙ্গ। গোকর্ণ থেকে এই স্থানের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এ ছাড়াও ঘুরে নিতে পারেন ইয়ানা কেভস, মহাবালেশ্বর মন্দির, মীরজান দুর্গ।

কী ভাবে যাবেন?

বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণের দূরত্ব প্রায় ৪৮৬ কিলোমিটার। বরং গোকর্ণ গোয়ার কাছে। গোয়ার বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। ট্রেনে হাওড়া থেকে হুবলি জংশন গিয়ে সড়কপথে গোকর্ণ পৌঁছোনো যায়। দূরত্ব ১৬৫ কিলোমিটার।

অগস্ত্যকুড়ম

অগস্ত্যকুড়ম ট্রেকার্সদের স্বর্গরাজ্য।

অগস্ত্যকুড়ম ট্রেকার্সদের স্বর্গরাজ্য।

অরণ্যপথে ট্রেকিং-এর আগ্রহ থাকলে আর শরীর ফিট হলে বেশি না ভেবে চলে আসতে পারেন অগস্ত্যকুড়ম। কেরলের এই স্থান ট্রেকার্সদের স্বর্গরাজ্য। তিরুঅনন্তপুরম থেকে সড়কপথে যেতে হয় বোনাকড়। সেখান থেকে ট্রেকিং শুরু হয়। তবে এই জন্য কেরল বন দফতরের অনুমতির প্রয়োজন হয়। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ট্রেকিং-এর মরসুম। ২-৩দিন লাগে যাত্রাপথ সম্পূর্ণ করতে। শেষ পর্যায়ে অগস্ত্যকুড়মের শৃঙ্গে উঠতে হয়। ১০ কিলোমিটার এই পাহাড় চড়ার এই ধাপ কিঞ্চিৎ কঠিন। তিরুঅনন্তপুরম থেকে অগস্ত্যকুড়মের দূরত্ব সড়কপথে ৩৫ কিলোমিটার।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে উড়ানে তিরুঅনন্তপুরম গিয়ে সড়কপথে পৌঁছতে পারেন, ট্রেনে এর্নাকুলাম জংশনে নেমে, সেখান থেকে সড়কপথে অগস্ত্যকুড়ম যেতে পারেন।

South India chikkamagaluru gokarna Agasthyakoodam peak Tour and Travels Vacation Destination

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}