জলের ব্যবস্থা নেই, বললে ভুল হবে। জল আছে। কিন্তু সেটা পান করার অযোগ্যঘোলা, দুর্গন্ধময়। এই অবস্থায় গরমে তীব্র পানীয় জল সঙ্কটে ভুগছে কান্দি মহকুমা হাসপাতাল। ওই হাসপাতালে অর্ন্তবিভাগে জল সঙ্কট মেটাতে স্বাস্থ্য দফতর একটি পাম্প বসিয়েছিল। তার পর থেকেই জল আরও ঘোলা হয়ে উঠছে। জলকে বিশুদ্ধ করার জন্য প্রত্যেক বিভাগে একটি করে অত্যাধুনিক ফিল্টার লাগিয়েও সমস্যা মেটানো যায়নি।
অথচ, ২৭০ শয্যা বিশিষ্ট ওই হাসপাতালে কান্দি মহকুমার কান্দি, বড়ঞা, খড়গ্রাম, ভরতপুর ১ ও ২ ব্লক ছাড়াও বর্ধমান ও বীরভূম জেলার একাংশ বাসিন্দা চিকিৎসার জন্য আসেন। গরমে জলের ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষুব্ধ হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিশুদ্ধ পানীয় জল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীর বাড়ির লোকেরা। হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা মনোহরপুরের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “স্ত্রীর পেটের রোগ। তিন দিন ধরে নিয়ে হাসপাতালে আছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা খুব খারাপ নয়। কিন্তু এই হাসপাতালে জলের অভাব চরমে উঠেছে। প্রতিদিন দেড়শো টাকা আলাদা করে রাখতে হচ্ছে শুধু জল কেনার জন্য।” গোকর্নের বাসিন্দা মিলন মণ্ডল ছেলের চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে আছেন এখন। মিলনবাবু বলেন, “যে জল হাসপাতালে সরবরাহ করা হচ্ছে, সেই জল যদি রোগীদের খাওয়ানো হয় তাহলে রোগ বাড়বে বই কমবে না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে জল কিনে ছেলেকে খাওয়াতে হচ্ছে। নিজেদেরও ওই কেনা জলই খেতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের জন্য আগে একটি পাম্প ছিল। কিন্তু ওই পাম্প থেকে হাসপাতালে জল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না। স্বাস্থ্য দফতর মাস ছয়েক আগে একটি নতুন পাম্প বসায়। জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের মাধ্যমে পাম্পটি বসানো হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই ওই পাম্প দিয়ে ঘোলা জল আসছিল। হাসপাতালে শিশু ও মহিলা মিলে ছ’টি ওয়ার্ড আছে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে রোগীদের বিশুদ্ধ পানীয় জলের পরিষেবা দেওয়ার জন্য ফিল্টার লাগানো হয়েছে। কিন্তু কলের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সবক’টি ফিল্টার ‘ব্লক’ হয়ে গিয়েছে। জল সঙ্কটের কথা স্বীকার করে ওই হাসপাতালের সুপার তথা কান্দি মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক ভাস্কর বৈষ্ণব বলেন, “আমরা ওই বিষয়ে বহুবার পিএইচই বিভাগে জানিয়েছি। কিন্তু ওই দফততের কর্তাব্যাক্তিরা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কান্দি মহকুমার আধিকারিক প্রশান্ত দত্ত বলেন, “ওই এলাকায় জলে আয়রনের ভাগ বেশি থাকার কারণে এমন ঘটনা ঘটছে। আমরা ওই জল পরীক্ষা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy