কর্মী সঙ্কটে ভুগছে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ব্লাড-ব্যাঙ্ক।
চিকিৎসক থেকে টেকনিশিয়ানকর্মীর সংখ্যা এত কম যে রক্ত সংগ্রহ এবং রোগীদের রক্ত বিলি করতে নাভিশ্বাস উঠছে কর্তৃপক্ষের। গোটা বিভাগে একজনও নার্স নেই। কর্মীদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকায় আশঙ্কা থেকে যায় বড়সড় ভুলের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, রক্ত-সঙ্কটের জন্যও দায়ী কর্মীসঙ্কট।
জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে চিকিৎসক আছেন তিন জন। তার মধ্যে একজন ‘ডেপুটেশন’-এ রয়েছেন। তিনি মাত্র তিন দিন হাসপাতালে আসেন। বাকি চার দিন আসেন দু’জন চিকিৎসক। তাঁদের পক্ষে গোটা বিষয়টি সামলানো প্রায় অসম্ভব। কোনও দিন রক্তদান শিবির থাকলে সেখানে যেতে হয় একজনকে। তখন হাসপাতালের সব দায়িত্ব অন্য এক জনের। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী অন্তত চার জন চিকিৎসক থাকার কথা। নেই পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ানও। আট জনের জায়গায় আছেন মাত্র চার জন। তিনটি শিফটে তাঁরা কাজ করেন। চিকিৎসকের অভাবে সংগৃহীত রক্ত পরীক্ষা করে রোগীর রক্তের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার (ক্রস ম্যাচিং) কাজ করতে হয় টেকনিশিয়ানকে। অনেক সময়ই দেখা যায় একজন টেকনিশিয়ান সারারাত কাজ করে আবার দিনের বেলাতেও কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি হালদারও স্বীকার করে নেন রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে রোগীর পরিবারের হাতে সঠিক রক্ত তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তব্যরত কর্মীদের উপরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হচ্ছে। তার উপর ব্লাডব্যাঙ্কে নেই একজনও নার্স। ফলে রক্তদান শিবিরে মহিলা রক্তদাতাদের কিছুটা সমস্যার মুখে পড়তে হয় (সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অন্তত দু’জন নার্স থাকার কথা)। একই ভাবে পাঁচ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর জায়গায় ব্লাডব্যাঙ্কে রয়েছেন মাত্র তিন জন।
হাসপাতালে কর্মী সঙ্কটের জেরে রক্ত সংগ্রহের কাজও ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আয়োজন করা হয় রক্তদান শিবির। কিন্তু কর্মী ও চিকিৎসকের অভাবে রক্ত সংগ্রহ করতে পারেন না ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ডিওয়াইএফ-এর জেলা সম্পাদক সুমিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা চাইলে দিনে একাধিক শিবির করে রক্তের অভাব দূর করতে পারি। কিন্তু কর্মীর অভাবে হাসপাতাল দিনে একটার বেশি শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করতে পারে না। কখনও কখনও আবার শিবিরের দিন সকালে জানিয়ে দেওয়া হয় চিকিৎসক নেই। আমরা নিজেরাই তখন চিকিৎসকের ব্যবস্থা করে নিই। এখন আবার ৩০ জনের বেশি রক্ত নিতে চাইছে না হাসপাতাল।’’
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের এই ব্লাডব্যাঙ্কটি খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ। তেহট্ট, কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা-সহ রানাঘাট মহকুমারও বিভিন্ন ব্লকের বিরাট অংশের মানুষের একমাত্র ভরসা। চারশো রক্তের বোতল সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে এখানে। প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ বোতল রক্তের চাহিদা থাকে। অথচ হাসপাতালের অব্যবস্থায় প্রয়োজনে রক্ত সরবরাহ করা যায় না। এ নিয়ে একাধিকবার হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অধীপ ঘোষ বলেন, ‘‘শক্তিনগরের ব্লাডব্যঙ্কের কর্মী ও চিকিসক সংকটের কথা আমি স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy