Advertisement
E-Paper

নিজেকে প্রকাশ করার দক্ষতা

যেটা বলতে চাও, সেটা যেমন তোমার কাছে পরিষ্কার থাকতে হবে, তেমনই যার সঙ্গে কথা বলছ, তার মানসিকতাটাও বুঝতে হবে।

দেবী কর

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩৫
Share
Save

গত বারের লেখায় একুশ শতকের দক্ষতা নিয়ে আলোচনার সময় তোমাদের বলেছিলাম, যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা (flexibility)-সহ হার না মানা মনোভাবের (resilience) কথা। আজ জানব এমন এক দক্ষতার বিষয়ে, যেটা জীবনে সুখ এবং সাফল্য অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ— জনসংযোগ (communication)। বিশাল শব্দভাণ্ডার থাকা, অনর্গল কথা বলতে পারা, ভাল বক্তা হওয়া বা তর্ক করতে পারা, এমনকি ভাল লিখতে পারা মানে এই নয় যে কারও জনসংযোগের দক্ষতা রয়েছে। কার্যকর জনসংযোগ হল সেটাই, যেখানে তুমি যাদের উদ্দেশে বলছ, তারা সেটা বুঝতে পারছে এবং তাদের থেকে প্রতিক্রিয়াও পাচ্ছ।

নিজেদের ঠিকমতো প্রকাশ করার ক্ষমতা না থাকার ফলে, অনেক মেধাবী মানুষ জীবনে বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেন না। কিছু ক্ষেত্রে ভাষা বা শব্দের কারণে নয়, নিজের ভাবনা অন্যদের সামনে ব্যক্ত করার সাহস না থাকার ফলেও এটা হয়। ছাত্র হোক বা কোনও চাকুরিরত ব্যক্তি, নিশ্চিত ভাবেই এটা মানবে যে কারও পক্ষেই একা একা জীবন কাটানো কিংবা একাই সব কাজ করা সম্ভব নয়। দলে তোমাকে সহপাঠী বা সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। হয়তো তুমিই সেখানে টিমলিডার। অন্য দিকে, তোমাকে যোগযোগ রাখতে হবে তোমার শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক বা অফিসের বস-এর সঙ্গেও। দু’তরফে তোমার জনসংযোগ যদি ঠিকঠাক থাকে, তবেই কোনও কাজ সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ভাবে হওয়া সম্ভব।

মনে রেখো, যতই চটকদার বা নিপুণ ভাবে কথা বলো না কেন, কপটতা মানুষ কিন্তু ধরতে পারবে। যা বলবে, আন্তরিক ভাবে বলবে। এবং যেটা বলতে চাও, সেটা যেমন তোমার কাছে পরিষ্কার থাকতে হবে, তেমনই যার সঙ্গে কথা বলছ, তার মানসিকতাটাও বুঝতে হবে। তোমার থেকে বয়সে ছোট এক জনের সঙ্গে যে ভাবে কথা বলবে, তেমন ভাবে নিশ্চয়ই বয়সে বড় কারও সঙ্গে বলবে না। কিন্তু যার সঙ্গে কথা বলো না কেন, বিনীত ভাবে, সম্মান দিয়ে কথা বলবে। অনেক সময় কথা বলার ধরনের কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এটা আরও হয় ফোনে কথা বলার সময়। যখন সামনাসামনি কথা বলছ বা হয়তো ভার্চুয়াল মিটিং-এ রয়েছ, তখন লোকে তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু ফোনে শুধু তোমার গলার স্বরটাই শোনা যায়। এই সব ক্ষেত্রে তাই একটু সতর্ক থাকা ভাল।

সফল জনসংযোগ মানে কিন্তু নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করা নয়। বরং নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে শ্রোতাকে ঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া, কোনও বিষয়ে তাকে রাজি করানো বা বুঝিয়েসুঝিয়ে নিরস্ত করা, তার বিশ্বাস অর্জন করা এবং প্রয়োজনে তাকে উদ্বুদ্ধ করাও। এর কোনও কিছুই সম্ভব হবে না, যদি না তুমি অন্যদের সহমর্মী হয়ে তাদের কথা শোনো। আর এটা তখনই সম্ভব, যদি তোমাকে দেওয়া কাজটা গুরুত্ব দিয়ে করো, এবং যাদের কথা শুনছ তাদেরও সমান গুরুত্ব দাও।

ফলে বুঝতেই পারছ, জীবনে সাফল্য পেতে হলে জনসংযোগের দক্ষতা থাকা খুবই জরুরি। এই বক্তব্য এখন সর্বজনস্বীকৃত।

ডিরেক্টর, মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লস

Communication Resilience

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}