Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভাগের অন্ধ্রে জগনকে নিয়ে বামেরা দু’ভাগ

অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের বিভাজন সম্পূর্ণ। অন্ধ্রে বিভাজন এ বার বাম শিবিরে। গোটা দেশে বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির ঐক্য তৈরির চেষ্টা করছেন সিপিএম এবং সিপিআই নেতৃত্ব। কিন্তু অন্ধ্র নিয়ে ফাটল ধরেছে এই দুই বাম দলের মধ্যেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৮:৩৬
Share: Save:

অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের বিভাজন সম্পূর্ণ। অন্ধ্রে বিভাজন এ বার বাম শিবিরে।

গোটা দেশে বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির ঐক্য তৈরির চেষ্টা করছেন সিপিএম এবং সিপিআই নেতৃত্ব। কিন্তু অন্ধ্র নিয়ে ফাটল ধরেছে এই দুই বাম দলের মধ্যেই। এমনিতেই পৃথক তেলঙ্গানা নিয়ে দু’দলের মতভেদ ছিল। সিপিএম নীতিগত ভাবে তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের বিপক্ষে থাকলেও সিপিআই ছিল তার পক্ষে। এ বার বিরোধ বেধেছে রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে। প্রকাশ কারাটের নেতৃত্বে সিপিএম চাইছে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে। কিন্তু সিপিআইয়ের তাতে ঘোর আপত্তি। জগন্মোহনকে দুর্নীতিগ্রস্ত আখ্যা দিয়ে সিপিআই জানিয়ে দিয়েছে, তাঁরা সিপিএমের পথে হাঁটবেন না। প্রয়োজনে অন্ধ্রে একাই লড়বে সিপিআই।

রাজ্যের এই বিবাদ কেন্দ্রীয় স্তরেও মেটানো যাচ্ছে না। দু’সপ্তাহ আগে দিল্লিতে সিপিএম ও সিপিআইয়ের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হয়েছে। প্রকাশ কারাট, এস আর পিল্লাই, কে বরদারাজনরা সিপিআইয়ের এস সুধাকর রেড্ডি, এ বি বর্ধন এবং ডি রাজার সঙ্গে গোটা দেশে দু’দলের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু সেখানেও অন্ধ্র নিয়ে সমস্যা মেটানো যায়নি। সংসদে তেলঙ্গানা রাজ্য গঠন বিল পাশের সময়েও। দুই বাম দল সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নেয়। একই ভাবে জগন্মোহন রেড্ডিকে নিয়েও কারাট ও বর্ধনদের মধ্যে মতবিরোধ কাটেনি।

গত লোকসভা নির্বাচনেও অন্ধ্রে সিপিএম, সিপিআই, টিআরএস ও কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছিল। তার আগের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম, সিপিআই আসন সমঝোতা করেছিল টিআরএস ও তেলুগু দেশমের সঙ্গে। কিন্তু এ বার? অন্ধ্রে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক কে নারায়ণ বলছেন, “কংগ্রেস টিআরএসের সঙ্গে হাত মেলাতে চায় অথবা টিআরএসকে নিজেদের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে চায়। তেলুগু দেশম ঝুঁকছে বিজেপির দিকে। আর সিপিএম ঝুঁকে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের দিকে। তাই আমাদের একা লড়া ছাড়া উপায় নেই।” জগন্মোহনকে নিয়ে সিপিআইয়ের আপত্তিটা কোথায়? সিপিআই নেতার বক্তব্য, “অন্য বুর্জোয়া দলগুলির সঙ্গেও আমাদের সমঝোতা করতে হয়েছে। কিন্তু জগন্মোহন দল তৈরিই করেছেন নিজের দুর্নীতিকে ধামাচাপা দিতে।”

কারাট অবশ্য হায়দরাবাদে গিয়ে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, জগন্মোহনের দলকে তিনি কংগ্রেস-বিরোধী ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি হিসেবেই দেখছেন। সিপিএম রাজনৈতিক দলের নীতি ও কর্মসূচি দেখে আঁতাত করে। সিপিএমের রাজ্য নেতারা অবশ্য বলছেন, এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ওয়াই ভি রাও হায়দরাবাদ থেকে ফোনে বলেন, “আগামী ৭ ও ৮ মার্চ রাজ্য কমিটির বৈঠক বসছে। সেখানেই আসন সমঝোতার বিষয় চূড়ান্ত হবে।” সিপিএম নেতারা মনে করছেন, অন্ধ্রে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের বিভাজনটাই মূল বিষয় হতে যাচ্ছে। সেখানে জগন্মোহনের সঙ্গে যাওয়াটাই বেশি সুবিধার। কারণ তিনিও অন্ধ্রের বিভাজনের বিরুদ্ধে ছিলেন। সিপিআই একেবারে উল্টো মেরুতে দাঁড়িয়ে। তাই তাদের সঙ্গে দূরত্ব রাখাই শ্রেয়।

কিন্তু তাতে কি লাভ হবে বাম-শক্তির? দু’দলের নেতারাই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে যখন বামেদের আসন কমছে, তখন অন্য রাজ্যে একটি-দুটি করে কুড়িয়ে-বাড়িয়ে আসন জোগাড়ের চেষ্টা করা দরকার। অন্ধ্রে পাঁচ বছর আগে পর্যন্তও সিপিআইয়ের একটি আসন ছিল। সিপিএম জগন্মোহনের সঙ্গে গিয়েও লোকসভায় আসন পাবে কি না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই দুই বাম দল একজোট হয়ে নামতে পারলে বামেদেরই লাভ হত।

অন্য বিষয়গুলি:

andhra jagan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE