ও পনিরসেলভাম
জেলখানার ভিতর থেকে তাঁরই অঙ্গুলিহেলনে তামিলনাড়ুতে ক্ষমতার হস্তান্তর হয়ে গেল।
নিজের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সঙ্গী, বর্তমানে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ও পনিরসেলভামকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসালেন জয়ললিতা। কিছুটা প্রত্যাশিত পথেই এই সিদ্ধান্ত। কেননা, এ নিয়ে পর পর দু’বার এমন বিপদে তাঁকেই বেছে নিলেন আম্মা। তেরো বছর আগে তানসি জমি মামলার জেরে সুপ্রিম কোর্টের ধাক্কায় যখন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে পারেননি জয়া, তখনও এই মানুষটিকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন। কিছু দিন পরে জয়া কোর্টে রেহাই পেলে নেত্রীর নিতান্ত বাধ্য রাজনীতিক পনিরসেলভাম মুখ্যমন্ত্রীর গদি থেকে সরে দাঁড়িয়ে আম্মাকে ওই পদে স্বাগত জানান।
এ বার তাই আদালতে যাওয়ার সময়েই তেষট্টি বছর বয়সি এই বিশ্বস্ত নেতাকে বেঙ্গালুরুতে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন জয়া। তার পর আদালতের রায়ের ধাক্কার ভিতরেই নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়ে তাঁকে চেন্নাইয়ে ফিরতে বলেন নেত্রী। সেই মতো এডিএমকে বিধায়ক দলের বৈঠকে নেতা নির্বাচন। রাজ্যপাল কে রোসাইয়া পনিরসেলভামকে সরকার গড়তে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সোমবার সকাল এগারোটায় তিনি শপথ নিতে চলেছেন। তবে শপথ নেওয়ার আগে আজ জেলে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ভাবী মুখ্যমন্ত্রী। রবিবারে ছুটির দিনে তা যদিও সম্ভব হয়নি। এক দিকে যখন নেত্রীর অনুগত সৈনিকের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি, অন্যদিকে নেত্রীকে কিছুটা রেহাই দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা। সোমবারই কর্নাটক হাইকোর্টে জয়ললিতার জামিনের জন্য আবেদন জানানোর হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী বি কুমার। এ জন্য দফায় দফায় পরামর্শ করছেন আম্মার আইনজীবীরা।
‘আম্মা’বিহীন রাজ্যে আজ সারা দিনই কেমন একটা থমথমে পরিবেশ। দোকানপাট, সিনেমা হল বন্ধ। গত কাল থেকে রাজ্য জুড়ে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা শুরু হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এডিএমকে ও ডিএমকে সমর্থকরা। তাঁরই জেরে আজ ডিএমকে নেতা এম করুণানিধি ও তাঁর পুত্র স্ট্যালিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মজুত, সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়া-সহ বিভিন্ন অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। গোপালপুরমে করুণানিধির বাসভবনের বাইরে দু’দলের সমর্থকদের ভিতরে সংঘর্ষ হয়েছিল। পরে এডিএমকের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। তার পরেই এফআইআর। আজ দ্বিতীয় দিনেও রাজ্য জুড়েই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করার বেশ কিছু ঘটনার খবর এসেছে। সাত জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় করুণানিধি ও সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কুশপুতুল জ্বালিয়েছেন আম্মার সমর্থকরা।
দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যাওয়ার পরেই রায়ের বিরোধিতা করে আম্মার সমর্থকদের অনেকেই অনশন শুরু করেছেন। নেত্রীর সমর্থনে আবেগের সেই চিত্রনাট্য এখনও জারি রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy