দুই জাতীয় দলকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে কাল ফের দিল্লির মসনদে আনুষ্ঠানিক ভাবে বসতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। তার আগে তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে! কিন্তু স্বনামধন্য দুই ‘হেরো দল’ এখনও ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে দায় চাপানোর তরজায়! শাসক দলের অন্তর্কলহ তবু কিছুটা আড়ালে। কিন্তু কংগ্রেসের সে সবের বালাই নেই! তাদের কোন্দল চলছে প্রকাশ্যেই!
বিজেপির সভাপতি অমিত শাহের কাছে রিপোর্ট পেশের আগে আজ রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতা রামলাল ও আরএসএস নেতা কৃষ্ণগোপাল। সেই বৈঠকে রাজ্য নেতারা নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের বিরুদ্ধে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন। বিক্ষুব্ধ নেতারা জানান, কী করে মোদী-অমিতের কৌশল ও পদক্ষেপের খেসারত দিতে হয়েছে। সিংহভাগ নেতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অমিতের উপেক্ষাই রাজ্য নেতাদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে।
কংগ্রেসের অবস্থা আবার অন্য রকম। কাল দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পর আজ তাঁর ছেলে সন্দীপ দীক্ষিতও তোপ দেগেছেন কংগ্রেসকেই। খাতা-কলমে হাইকম্যান্ড অনুমোদিত মুখপাত্র সন্দীপ দলকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, “দলে অভিজাত সংস্কৃতি চলছে! যাঁরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে দুনিয়া দেখেন, তাঁরাই দল চালাচ্ছেন।!” সন্দীপের তির রাহুল গাঁধীর দিকে বলেই ভাবছেন কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ। কিন্তু দলের হাল এমনই যে, সন্দীপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছে না হাইকম্যান্ড!
বিজেপি নেতারা অবশ্য প্রকাশ্যে কথা বলে সমস্যা বাড়াচ্ছেন না। রামলাল ও কৃষ্ণগোপালের সঙ্গে বৈঠকে নেতারা যেমন মোদীর দশলাখি সুটের কথা তুলেছেন, তেমনই বলেছেন কিরণ বেদীকে মুখ্যমন্ত্রী করা নিয়ে আপত্তির কথা। অনেকেই সরব ছিলেন অমিত শাহের ব্যাপারে। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল, কালো টাকা উদ্ধার করে সকলের অ্যাকাউন্টে বণ্টন করা হবে। দিল্লি ভোটের আগে এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রতিশ্রুতিকে ‘নির্বাচনী গিমিক’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন অমিত শাহ। এ দিন তা নিয়েও সরব হন অনেকে। এক বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, “ফলপ্রকাশের পর প্রচার করা হচ্ছে, বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক অটুট। তা সত্যি নয়। ২০১৩-র বিধানসভায় ৩৩% ভোট লোকসভায় বেড়ে হয়েছিল ৪৬%। সেটা অনেকটাই কমেছে।”
কংগ্রেসে অবশ্য এত আলোচনা নেই! দিল্লিতে দল শূন্যে নেমে যাওয়ার পরে কাল শীলা দীক্ষিত বলেছিলেন, “অজয় মাকেন যে ভাবে প্রচার করেছেন, তাতে হার অবধারিত ছিল। ওঁকে দেখে মায়া হয়!” আজ সাংবাদিক বৈঠক করে মাকেন বলেন, “শীলা দীক্ষিত বর্ষীয়ান নেত্রী। কোথায় ভুল হয়েছে তা ওঁর সঙ্গে দেখা করে জানব!” কিন্তু সন্দীপ দীক্ষিতের ‘অভিজাত ক্লাবের’ কথায় দৃশ্যতই হোঁচট খেলেন মাকেন! দলের এক বর্ষীয়ান সদস্য বলেন, “সব মাজা ভাঙা লোকের ভিড় জমিয়েছেন রাহুল! মাকেনের বলা উচিত ছিল, একশো দিনের কাজ, বিধবা পেনশন, আদিবাসীদের ক্ষমতায়ন ইত্যাদি প্রকল্প দেখে কি অভিজাতদের ক্লাব মনে হয়? নাকি কংগ্রেসের কেউ দশ লাখি স্যুট পরে বড়াই করেন?” একই সঙ্গে ওই নেতার মন্তব্য, “সন্দীপের বলা উচিত ছিল, কংগ্রেসটা রাহুলের তোষামোদকারীদের মঞ্চে পরিণত হয়েছে! রাহুল যত দ্রুত সেটা বুঝবেন, তত দ্রুত দলের মঙ্গল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy